ভিন্ন এলাকায় হয়ত ভিন্ন ভাবে বলা হয় কথাটা, কিন্তু আমাদের এলাকায় আমরা এভাবেই বলতে অভ্যস্ত, ‘কুত্তার পেটে ঘি সয়না‘। কুত্তার পেটে আসলেই কি ঘি সয়না এর কোন ডাক্তারী প্রমান নেই, কিন্তু আমরা যারা ডাল-ভাতের বাংলাদেশি তারা বিশ্বাস করি যোগ্যতা ও প্রাপ্যের অতিরিক্ত কিছু গেলানো হলে তা বদহজম হতে বাধ্য। আজকের পত্রিকা যারা ইতিমধ্যে পড়ে নিয়েছেন তাদের হয়ত জানা হয়ে গেছে খবরগুলো। এমন কোন জনগুরুত্বপূর্ণ খবর নয় যা নিয়ে আলোচনা সমালোচনা করে সময় নষ্ট করা যেতে পারে। কিন্তু আমার জন্যে খবরগুলোর অন্যরকম, চাইলেও এড়িয়ে যেতে পারিনা। ভাগ্যবান মনে করি নিজেদের যারা সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনের সন্ধান করতে গিয়ে নোঙ্গর ফেলতে সক্ষম হয়েছি পৃথিবীর বিভিন্ন বন্দরে। এসব বন্দরের তালিকায় মার্কিন মুলুকের নিউ ইয়র্ক শহর নিশ্চয় উপরের দিকে জায়গা নিয়ে আছে। এ শহরে বাংলাদেশিদের সংখ্যা কত তার নির্দিষ্ট কোন সংখ্যা নেই। মেগা শহরে যাদের বাস তাদের কাছে সংখ্যাটা আদৌ একটা ফ্যাক্টর বোধহয় তেমন কিছু নয়। এ শহরে বিশেষ কতগুলো গলি আছে যেখানে খুঁজলে ক্ষুদ্র একটা বাংলাদেশের ছবি পাওয়া যাবে। এসব গলিতেই ওদের বাস। সংখ্যায় ওরাও হাজার হাজার। ১৫ কোটি মানুষের দেশ যেখানে দিনের ১৫ ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকে না, শতকরা ১০০ জন বিশুদ্ধ পানির মুখ দেখে না, যে দেশে হত্যা, ঘুম, রাহাজানি, ধর্ষণ সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় হতে লালন করা হয়, যে দেশে ১৫ মিনিটের পথ ৪ ঘন্টায় পাড়ি দিতে হয়, সে দেশের কয়েক হাজার বাসিন্দা মার্কিন দেশের মত গণতান্ত্রিক ও আইনী শাসনের দেশে বাস করতে পেরে নিজেদের আসলেই ভাগ্যবান মনে করতে পারে। কিন্তু ’কুত্তার পেটে ঘি সয়না’ বাক্যটার সুরে গলা মিলিয়ে বলতে হয় মার্কিন মুলুকের আইনের শাসন আর শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভিত্তি হজম করার মত উদর নেই এসব কুত্তাদের।
জন এফ কেনেডি এয়ারপোর্টের ৬৭ বছরের ইতিহাসে এ ধরণের ঘটনা এর আগেও ক’বার ঘটেছিল এবং তার সবগুলোতেই জড়িত ছিল বাংলাদেশ হতে উড়ে আসা প্রধানমন্ত্রী এবং পেটে ঘি সয়না এমন কতগুলো কুকুর। একদল স্বাগত জানাতে এবং অন্য দল কালো পতাকা দেখাতে হাজির হয় এয়ারপোর্টে। কুত্তা এবং বিলাই যেমন সহ অবস্থান করতে অক্ষম তেমনি দেশীয় রাজনীতির উচ্ছিষ্ট ভক্ষণকারীরাও পাশাপাশি চলতে অক্ষম, হোক তা দুরের দেশ আমেরিকায়। এ যাত্রায় নিজেদের মধ্য মারামারি করে আহত হয়েছে ১০ জন। আগের বারের মত এবারও আওয়ামী লীগ নেত্রীকে গোপন এক্সিট দিয়ে বেরে করে নেয় মার্কিন নিরাপত্তা বাহিনী। দেশীয় রাজনীতির বাই-প্রডাক্টরা হয়ত ভুলে গিয়েছিল জেএফকে এয়ারপোর্ট পিতা অথবা স্বামীর নামে নামজারী করা এয়ারপোর্ট নয় যেখানে দলীয় পরিচয়ে সোনা-দানা, হিরোইন আর অস্ত্র পাচার সহ হীরক রাজত্ব কায়েম করা সম্ভব। হাজার হাজার সার্ভেলেন্স ক্যামেরায় ধারণ করা হয়েছে কুত্তাদের কুত্তামি। নেত্রীর লেফটেন্যান্টরা আশাকরি অবাক হবেনা যদি সুন্দর এক সকালে তাদের দরজায় কড়া নাড়তে শুরু করে এফবিআই। নিজ দলের সেনাদের জন্য ঐ সময়ের ঘি হজম করার ট্যাবলেট আশাকরি নেত্রী সাথে এনে থাকবেন। http://www.amadershomoy.com/content/2010/09/21/news0378.htm
দ্বিতীয় একটা খবর। খবর না বলে এটাকে এক ধরনের হুমকি বললে ভুল হবেনা। জাতি হিসাবে আমাদের অস্তিত্বের প্রতি হুমকি। মোদাচ্ছের আলীর কথা পাঠকদের নিশ্চয় মনে আছে। হ্যা এই সেই ডাক্তার যিনি ১/১১ সরকার আমলে চোখ, কান, হার্ট সব কিছু অকেজো ঘোষনা দিয়ে নেত্রীকে বিদেশে পাঠানোর লাইসেন্স যোগাড় করেছিলেন। বোগাস ডাক্তারির প্রতিদান হিসাবে এই ডাক্তারকে দেয়া হয়েছে স্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেষ্টার পদ। হাটে হাড়ি ভাঙ্গলেন এই উপদেষ্টা। উপদেষ্টার ভাষ্যানুযায়ী কম্যুনিটি ক্লিনিকগুলোতে ১৩,৫০০ স্বাস্থ্য কর্মী নিয়োগ দেয়া হবে খুব শীঘ্রই। শিক্ষক নিয়োগের মত এই নিয়োগও সীমিত থাকবে দলীয় কর্মীদের ভেতর। জনাব মোদাচ্ছের ঘোষনা দিয়েছেন কোন কর্মকর্তা এ সিদ্ধান্ত বাইপাস করলে নাকি কঠিন শাস্তি দেয়া হবে। অন্য একটা ব্লগে পড়লাম এই সিদ্ধান্ত এসেছে খোদ প্রধানমন্ত্রীর দফতর হতে। পত্রিকা এবং টিভি বন্ধ সংক্রান্ত মন্তব্য করতে গিয়ে একই কথা বলেছিলেন পানি সম্পদ মন্ত্রী বাবু রমেশ চন্দ্র। ব্যাপারটা কি দাঁড়াল শেষ পর্যন্ত, বাংলাদেশের ছাত্রছাত্রী যারা ছাত্রলীগ না করে ডিগ্রী নেবে তাদের জন্যে সরকারী চাকরীর দুয়ার চিরতরে বন্ধ! সহজ বাংলায় অনুবাদ করলে ব্যাপারটা কি তাই দাড়ায় না? এটা কি গোটা শিক্ষা ব্যবস্থার অস্তিত্বের প্রতি হুমকি নয়?
http://www.amadershomoy.com/content/2010/09/21/news0395.htm
আগের টার্মে এসবের দায়িত্বে ছিলেন জনাব মহিউদ্দিন খান আলমগীর। পৃথিবীর বিভিন্ন দুয়ারে নক করতেন এবং নেত্রীর জন্যে সন্ধান করতেন নতুন নতুন পুরস্কার। গোটা সাতেক পিএইডি যোগাড় করতে পেরেছিলেন শেষ পর্যন্ত। উনি মন্ত্রীত্ব পাননি এ যাত্রায় তাই পদক পুরস্কারেও ভাটার ছোয়া। তবে এ গ্রিডলক যে খুলতে শুরু করেছে তার প্রমান নেত্রীর নতুন পদক। আশাকরি এ কেবল শুরু এবং আগের বারের মত পদকে পদকে ভরে যাবে নেত্রীর গলা। যত পদকই দেয়া হোক না কেন বিডিআর ম্যাসাকারের পর দেয়া ’শান্তিকন্যা’ পদকটা আমার দৃষ্টিতে সর্বকালের সেরা পদক। সেনাবাহিনীর শতাধিক অফিসারকে খুন করে নর্দমায় ভাসানো হল, কাউকে আবার গণকবর দেয়া হল। সমাধান হিসাবে বিদ্রোহী নেতা ডিডি তৌহিদকে নিজ ভবনে ডেকে তাৎক্ষণিকভাবে বিডিআর প্রধান বানিয়ে সমস্যার ’শান্তিপূর্ণ’ সমাধা দিলেন প্রধানমন্ত্রী। বিনিময়ে নানকের হাত হতে নিলেন ’শান্তিকন্যা’ উপাধি। ধন্য দেশের ধন্য পদক!
http://www.amadershomoy.com/content/2010/09/21/news0376.htm
হয়ত কাজ হবেনা, উত্তর পাব এমনটাও আশাকরি না। তবু লিখতে হল। ভেতরের অক্ষমতা গুলো বাইরে না পর্যন্ত শান্তি লাগছিল না। মার্কিন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি (ইমিগ্রেশন এবং স্বরাস্ট্র) সেক্রেটারী (মন্ত্রী) বরাবর একটা ই-মেইল পাঠালাম এ লেখাটা শুরুর আগে। লেখার সারমর্ম খুব সোজা, বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান হতে সরকার প্রধান পর্যন্ত কাউকে যেন সরকারী সফরের বাইরে বেসরকারী সফরের অনুমতি না দেয়া হয়। রাষ্ট্র সম্পদ লুটপাট পূর্বক দেশ ও জাতিকে শ্রাদ্ধ করার জায়গা হিসাবে বেছে নেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে। চুরির রুটি হালুয়া দিয়ে দুই দল চোরের বৈরিতা এখন জন এফ কেনেডি এয়ারপোর্টে পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। সময় মত এসব থামান না গেলে এ ধরণের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড মহামারির মত ছড়িয়ে পরতে পারে অন্যান্য শহরে।
আওয়ামী লীগের শুভাকাঙ্ক্ষিদের কাছে বিশেষ একটা অনুরোধ; নেত্রীর চাইতে দলকে ভালবাসলে মুখ খুলতে শুরু করুন। শুনতে হয়ত খারাপ শোনাবে, কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা হারাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী এই দল। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা দিয়ে পাপের পাহাড় ঢাকা যাচ্ছে না কোন মতেই। বোধোদয় হতে দেরী হলে ক্ষমতার মসনদে আবারও ঝেঁকে বসবে আলীবাবা ৪০ চোরের তথাকথিত জাতীয়তাবাদী দল।