২০২০ সালের প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয় লাভ করেছিলেন। দেশটার গোয়েন্দা সংস্থা সহ অনেক প্রতিষ্ঠান ষড়যন্ত্র করে তাকে প্রেসিডেন্ট হওয়া হতে বঞ্চিত করেছিল...
এমন তত্ত্বে কেবল ট্রাম্পের কয়েক কোটি মুরিদই বিশ্বাস করতেন না, বরং আমাদের দেশের কোটি কোটি মানুষও বিশ্বাস করেছিল ট্রাম্প পর্বের এই ভৌতিক কাহিনী। নির্বাচনের অনেক আগেই আমেরিকার ৪৫তম প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড জন ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি পরাজিত হতে পারেন না, কেবল ষড়যন্ত্রের মাধ্যমেই তাকে হারানো সম্ভব। পরাজিত হলে ফলাফল মেনে নেবেন না এমন ঘোষণা প্রকাশ্য দিবালোকে দিয়েছিলেন। এবং তার আন্ধা, বোবা, মূর্খ মুরিদানের কাফেলা লুফে নিয়েছিল এসব মিথ্যা।
মিথ্যা প্রচারণার মেগা ফোন হিসাবে কাজ করেছিল দেশটার কট্টর ডানপন্থী মিডিয়া নেটওয়ার্ক ফক্স নিউজ। দিনের পর দিন, মাসের পর মাস, বছরের পর বছর ধরে এই মিথ্যার পক্ষে সাফাই গেয়ে ফক্স নিউজের টাকার কার্লসন, জেনিন পেরো, শন হেনেটি, লওরা ইনগ্রাম, সহ গোটা নেটওয়ার্ক উঠেপড়ে লেগেছিল বাইডেন বিজয়ের বিরুদ্ধে। ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবে সামনে এনেছিল ডোমিনিয়ন নামের এক কোম্পানিকে। এই কোম্পানি ছিল প্রেসিডেন্সিয়াল নির্বাচনে ভোটার মেশিন সাল্পাইয়ার। ডোমিনিয়ন নাকি ভেনিজুয়েলার মৃত প্রেসিডেন্ট হুগো সাভেজের সাথে মিলে এমন এক সফটওয়্যার আবিষ্কার করেছিল যা ব্যবহার করে ট্রাম্পকে ভোট দিলে সে ভোট অটোমেটিক চলে যেত বাইডেনের বাক্সে।
ফক্স নিউজের একো চেম্বারে যোগ দিয়েছিল বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ। ষড়যন্ত্রের ত্যানা পেঁচানোর পাশাপাশি বর্ণবাদী ট্রাম্পকে তারা ভিক্টিম সাজিয়ে দেশটার ডেমোক্রেটিক ইন্সটিটিউটকে আন্ডার-মাইন করেছিল। উদ্দেশ্য, বাংলাদেশের মধ্যরাতের নির্বাচনকে হালাল করা। এসব বাংলাদেশিদের জন্যে গরম খবর আছে।
ডোমিনিয়ন ১.৬ বিলিয়ন ডলার (১৬,০০০ কোটি টাকা) ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করেছিল ফক্স নিউজের বিরুদ্ধে। প্রাথমিক শুনানির পর মামলা আদালতে উঠার পর্যায়ে ছিল। আজ এই কিছুক্ষণ আগে ফক্স নিউজ ৭৮৭.৫ মিলিয়ন ক্ষতিপূরণ দিয়ে ডোমিনিয়নের সাথে ফয়সালা করেছে। এবং ফয়সালার শর্ত হিসাবে ফক্স স্বীকার করেছে ট্রাম্পের বিজয় নিয়ে তারা মিথ্যাচার করেছিল। উদ্দেশ্য? তাদের আয়-রোজগারের বরপুত্র ট্রাম্পকে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে আকাশে উঠিয়ে নিজেদের আয় অব্যাহত রাখা।
মোরাল অব দ্যা স্টোরি, আমেরিকান নির্বাচনে জালিয়াতির কোন সুযোগ নেই। ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০২০ সালের নির্বাচনে পরাজিত হয়েছিলেন। একই ট্রাম্প নিজের ব্যবসা বাণিজ্যে লম্বা সময় ধরে জালিয়াতির অভিযোগে কোর্টে হাজিরা দিয়েছিলেন। আগামী বছরের শুরুতে তার বিচার শুরু হবে। দোষী প্রমাণিত হলে ২০ বছর জেল খাটবেন। শুরু হয়েছে তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা। মাথার উপর ঝুলছে ৬ই জানুয়ারির সন্ত্রাসী হামলার তদন্ত।
In America no one is above the law!