মিলটন আনোয়ার:
স্বাধীনতা সংগ্রামের নায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট হত্যা করা হয়। এ ঘটনার দীর্ঘ ২১ বছর পর দায়ের করা হয় মামলা। ১৯৯৮ সালে বিচারিক আদালত ১৫ আসামির ফাঁসির রায় দেন। হাইকোর্টের বিচার শেষে আজ আপিল বিভাগে এই মামলার চূড়ান্ত রায় দেয়া হবে।
উল্লেখযোগ্য ঘটনাক্রম: ১৫ আগস্ট, ১৯৭৫: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। দেশের বাইরে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দু’কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।
২৬ সেপ্টেম্বর, ১৯৭৫: এ হত্যাকাণ্ডের বিচারের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে খন্দকার মোশতাক সরকার ইমডেমনিটি (দায়মুক্তি) অধ্যাদেশ জারি করে।
১২ আগস্ট, ১৯৯৬: বিশেষ ক্ষমতা আইনে কর্নেল ফারুকসহ তিনজনকে গ্রেফতার।
২ অক্টোবর, ১৯৯৬: হত্যাকাণ্ডের ২১ বছর পর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রিসেপসনিস্ট কাম রেসিডেন্ট পিএ আ ফ ম মুহিতুল ইসলাম ধানমন্ডি থানায় ২৪ আসামির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
১২ নভেম্বর, ১৯৯৬: আওয়ামী লীগ সরকার সংসদে দায়মুক্তি অধ্যাদেশটি বাতিল করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের পথ উন্মুক্ত করে।
১৫ জানুয়ারি, ১৯৯৭: তদন্ত শেষে পুলিশ ২৪ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে।
৩ ফেব্র“য়ারি. ১৯৯৭: পলাতক আসামিদের নামে গেজেট নোটিস জারি হয়।
১ মার্চ, ১৯৯৭: ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে বিশেষ এজলাস গঠন করে এই মামলার বিচারক করা হয় কাজী গোলাম রসুলকে। রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ পিপি হন সিরাজুল হক।
১২ মার্চ, ১৯৯৭: চার আসামি মারা যাওয়ায় ২০ জনের বিরুদ্ধে ঢাকায় দায়রা জজ আদালতে বিচার শুরু।
৭ এপ্রিল, ১৯৯৭: একই আদালত ২০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
৮ নভেম্বর, ১৯৯৮: দেড়শ কার্যদিবস শুনানির পর ঢাকার দায়রা জজ গোলাম রসুল ২০ আসামির মধ্যে ১৫ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। এ দিনই ব্যাংকক থেকে আসামি বজলুল হুদাকে দেশে ফেরত আনা হয়।
ওই রায়ের পর এর বিরুদ্ধে কারাবন্দি চার আসামি অবসরপ্রাপ্ত মেজর বজলুল হুদা, বরখাস্ত লে. কর্নেল সৈয়দ ফারুক রহমান, অবসরপ্রাপ্ত লে. কর্নেল সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান ও অবসরপ্রাপ্ত লে. কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ হাইকোর্টে আপিল করেন।
৩০ মার্চ, ২০০০: ডেথ রেফারেন্স ও আপিল হাইকোর্টের শুনানির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত।
১০ এপ্রিল, ২০০০: এই মামলা শুনতে এক বেঞ্চের বিব্রতবোধ।
২৪ এপ্রিল, ২০০০: অপর এক বেঞ্চের বিব্রতবোধ।
২৮ জুন, ২০০০: হাইকোর্টের বিচারপতিরা কয়েক দফা বিব্রত হওয়ার পর ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শুরু।
১৪ ডিসেম্বর, ২০০০: ৬৩ কার্যদিবস শুনানি শেষে হাইকোর্ট এ মামলায় বিভক্ত রায় দেন। বিচারপতি মো. রুহুল আমিন ১০ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। অপর বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক ১৫ আসামির ফাঁসির আদেশ বহাল রাখেন।
১২ ফেব্র“য়ারি, ২০০১: হাইকোর্টের তৃতীয় বেঞ্চের বিচারপতি মোহাম্মদ ফজলুল করিমের আদালতে মামলার শুনানি শুরু।
৩০ এপ্রিল, ২০০১: তৃতীয় বেঞ্চ ১২ আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখে তিনজনকে খালাস দেন। চূড়ান্ত রায়ে মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা ১২ আসামির মধ্যে পরে ওই বছরই কারাবন্দি চার আসামি আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল করেন।
১৩ র্মাচ, ২০০৭: মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামি ল্যান্সার একেএম মহিউদ্দিন আহমেদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেফতার হন।
১৮ জুন, ২০০৭: ল্যান্সার এ কে এম মহিউদ্দিন আহমেদকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।
২৪ জুন, ২০০৮: ল্যান্সার মহিউদ্দিন জেল আপিল করেন।
২ আগস্ট, ২০০৭: হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের দায়ের করা লিভ টু আপিলের ওপর শুনানির জন্য বেঞ্চ গঠন করা হয়।
৭ আগস্ট ২০০৭: বিচারপতি তাফাজ্জাল ইসলাম, বিচারপতি জয়নাল আবেদীন ও বিচারপতি মো. হাসান আমিনের আপিল বিভাগের বেঞ্চ বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার লিভ টু আপিলের ওপর শুনানি গ্রহণ শুরু করেন।
২৩ সেপ্টেম্বর, ২০০৭: আপিল বিভাগ ২৫ কার্যদিবস শুনানি গ্রহণ করে মৃতুদণ্ডপ্রাপ্ত পাঁচ আসামির আপিল শুনানির জন্য গ্রহণ (লিভ মঞ্জুর) করেন।
৩০ অক্টোবর, ২০০৭: পেপারবুক তৈরি করে জমা দিতে আসামি পক্ষের শেষ সময়। তারা পেপারবুক ও যুক্তির সংক্ষিপ্তসার আদালতে জমা দেন।
২৩ আগস্ট, ২০০৯: রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তির সংক্ষিপ্তসার আপিল বিভাগে জমা দেয়া হয়।
২৪ আগস্ট, ২০০৯: আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মোহাম্মদ মোজাম্মেল হোসেন বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার আপিল শুনানির জন্য ৫ অক্টোবর তারিখ ধার্য করে দেন।
৪ অক্টোবর, ২০০৯: মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তিতে শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতিকে নিয়ে একটি বেঞ্চ গঠন করা হয়।
৫ অক্টোবর, ২০০৯: আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চে চূড়ান্ত আপিল শুনানি শুরু হয়।
১২ নভেম্বর, ২০০৯: আপিলের ওপর টানা ২৯ দিন শুনানি শেষে ১৯ নভেম্বর রায় ঘোষণার দিন ধার্য করা হয়।
সূত্রঃ http://www.amadershomoy.com/content/2009/11/19/news0317.htm