১৯ জেলার ওয়েব সাইটে 'জয় হিন্দ'-এর হানা
সরকারের জেলাভিত্তিক ওয়েব পোর্টাল 'জেলা তথ্য বাতায়ন' গতকাল হ্যাকারদের কবলে পড়ে। হ্যাকাররা তাদের এ কর্মকে 'সাইবার যুদ্ধ' হিসেবে ঘোষণা করে জানায়, বাংলাদেশকে ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করে ভারতের বিরুদ্ধে কোনো হামলার বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান। হ্যাকাররা নিজেদের ভারতীয় পরিচয় দিয়ে বলে, 'হ্যাক্ড্ বাই এমিল (emil) ইন্ডিয়ান হ্যাকার'। আক্রান্ত ওয়েব পোর্টালের মাঝে বিশাল ছবি জুড়ে দিয়ে তাতে লেখা হয়, টোয়েন্টি ডিফারেন্ট স্টেট টোয়েন্টি ডিফারেন্ট ল্যাঙ্গুয়েজেস, বাট ওয়ান ওয়ার্ল্ড'। এর পরেই বড় করে লোগো আকারে লেখা হয় 'জয় হিন্দ' স্লোগানটি।
তবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, হ্যাকাররা যে পরিচয় দিয়েছে, তা সরকার সঠিক বলে মনে করছে না।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম জানায়, শুক্রবার দিবাগত রাত আড়াইটায় তাদের নজরে আসে, ৬৪ জেলার মধ্যে ১৯টির পোর্টালই একইভাবে হ্যাক করা হয়েছে। গতকাল শনিবার গভীর রাতে এ প্রতিবেদন লেখার সময়ও ১৯ পোর্টালের মধ্যে রংপুর জেলার সাইটটি (http://www.dcrangpur.gov.bd/) উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এর আগে ৫টা ৩৬ মিনিটে সমস্যামুক্ত হয় ফেনী জেলার তথ্য বাতায়নের প্রচ্ছদ পাতা। বাকি ১৭টি পোর্টাল এর আগেই উদ্ধার করা হয়।
হ্যাকাররা সংশ্লিষ্ট জেলাগুলোর পোর্টালে তাদের একটি বার্তাও জুড়ে দেয়। এতে বলা হয়, 'ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্ত নিরাপদ কর। যদি পাকিস্তান থেকে কোনো সন্ত্রাসী বাংলাদেশ হয়ে ভারতে ঢোকে, তাহলে আমি তোমাদের জন্য বিপজ্জনক হিসেবে দেখা দেব। শুরু হবে সাইবার যুদ্ধ। আপাতত শুধু নমুনা দেখানো হলো। আমরা ভারতে আরেকটি ২৬/১১ চাই না। বাংলাদেশের সরকার এদিকে দৃষ্টি না দিলে সাইবার যুদ্ধ শুরু হবে। তোমাদের ইন্টারনেট ব্যবস্থা আমরা একেবারে ধ্বংস করে দেব।'
গত ৬ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৬৪ জেলার এ ওয়েব পোর্টালটি (http://www.bangladesh.gov.bd) উদ্বোধন করেন। পোর্টালে ৬৪ জেলার জন্য একটি করে পৃথক ওয়েবসাইট রয়েছে। পোর্টালে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীবিষয়ক তথ্য ছাড়াও সব জেলার বিভিন্ন তথ্য তথ্য সনি্নবেশ করা হয়েছে। ইউএনডিপির সহযোগিতায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটুআই প্রকল্পের জাতীয় প্রকল্পের মাধ্যমে এ ওয়েবপোর্টালটি চালু রয়েছে। ৬৪টি জেলার মধ্যে রংপুর ও ফেনীসহ ১৯টি জেলার সাইট হ্যাক করা হয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিজ্ঞান ও তথ্য যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান গতকাল বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটে কালের কণ্ঠকে বলেন, 'বিষয়টি আমাদের জানানো হয়েছিল। সমস্যা হওয়ার পর পরই সংশ্লিষ্ট প্রজেক্টের লোকজন তা সমাধানের জন্য কাজ শুরু করে দেয় এবং সফলভাবে সে কাজ সম্পন্ন হওয়ার পথে।' তিনি বলেন, 'এর আগেও এ ওয়েবসাইট হ্যাক করার অপচেষ্টা হয়েছে, কিন্তু হ্যাকাররা সফল হতে পারেনি। এবারে হ্যাকাররা তাদের যে পরিচয় দিয়েছে, তা আমরা সঠিক মনে করছি না।'
সূত্র: কালের কন্ঠ