দালাল চরিত্র!

Submitted by WatchDog on Thursday, December 5, 2024

জুলাই-আগষ্টের আন্দোলনকারীদের সন্ত্রাষী হিসাবে আখ্যা দিয়ে বর্তমান সরকারের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন লালমনিরহাটের জনৈকা মেজিষ্ট্রেট জনাবা তাপসী তাবাসসুম ঊর্মি।

একটা স্বাধীন সার্বভৌম দেশে যে কারও সমালোচনা করা নাগরিকদের জন্মগত অধিকার। এ অধিকার হতে গেল ১৬ বছর শেখ হাসিনা গং আমাদের বঞ্চিত করেছিলেন। অধুনা বিশ্বের নিকৃষ্টতম স্বৈরাচার এখন পলাতক। আশ্রয় খুঁজছেন দেশে দেশে। আর দেশে আমরা ফেলছি স্বস্তির নিঃশ্বাস। বুক ফুলিয়ে দাবি করছি আমরা এখন স্বাধীন। বলছি কথা বলার অধিকার ফিরে পেয়েছি।

আমরা যদি নিজেদের স্বৈরাচার মুক্ত স্বাধীন জাতি হিসাবে দাবি করি তাহলে তাপসী তাবাসসুম ঊর্মির বক্তব্য সহজভাবে নেয়ায় অসুবিধা কোথায়? তিনি কি মিথ্যা কিছু বলেছেন?

নিশ্চয় মিথ্যা বলেছেন। শেখ হাসিনার গণহত্যা স্মৃতির বয়স ২ মাসও পেরোয়নি। এরই মধ্যে এ মহিলা দাবি করছেন হাজার খানেক মানুষ হত্যা প্রমান সাপেক্ষ ঘটনা। প্রমানিত না হওয়া পর্যন্ত ধরে নিতে হবে এ ধরণের গণহত্যা দেশে ঘটেনি।

ভদ্রমহিলার কথায় যুক্তি আছে। আছে আইনগত বৈধতা। কারণ গণহত্যার অপরাধে কাউকে এ পর্যন্ত বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়নি। শাস্তি আরও পরের ব্যপার। তবে মুক্ত পরিবেশে নাগরিকদের সবাই ফেরেস্তা বনে সদা সত্য কথা বলতে শুরু করে এমনটা বিশ্বাস করার কোন কারণ নেই। মিথ্যা বলা আমাদের জীবনেরই অংশ। তাপসী তাবাসসুম ঊর্মিও মিথ্যা বলছেন।

সরকারী চাকরি পাওয়া আমাদের দেশে অনেক বিবেচনায় আকাশের চাঁদ পাওয়ার মত ঘটনা। কোটার বেড়াজাল হতে চাকরির এ বাজারকে মুক্ত করার জন্যেই ছাত্ররা আন্দোলন করেছিল। জনাবা তাপসী তাবাসসুম ঊর্মি সে চাকরি ইতিমধে পেয়ে গেছেন। এবং নিশ্চয় উপভোগ করছেন চাঁদের ফুটফুটে জোৎস্না।
তাহলে তিনি এমনটা করতে গেলেন কেন?

একজনের লেখায় দেখলাম এই মহিলা মেজিষ্ট্রেট বিদেশে যাওয়ার রাস্তায় আছেন। এবং প্রেক্ষাপট তৈরি করছেন পলিটিক্যাল এসাইলেমের। যদি এমন উদ্দেশ্যের সামন্যতম বাস্তবতা থাকে ধরে নিতে হবে হিজাবের আড়ালে এই মহিলা একজন অসৎ মানুষকেই বড় করছেন।

ভদ্রমহিলার যে কোন বক্তব্যকে স্বাভাবিকভাবে নেয়ার মত মন-মানষিকতা আমার আছে। তবে আমার সমস্যাটা অন্য জায়গায়।

জনাবা তাপসী তাবাসসুম ঊর্মি সরকারী চাকরি করেন। ওনার মাসিক বেতন আসে সরকারী তহবিল হতে। এবং সে সরকারের প্রধান এখন ডক্টর মোহম্মদ ইউনুস। আমি সরকারী চাকরি করে একই সরকারের প্রধানের গ্রহনযোগ্যতা ও বৈধতা নিয়ে যদি প্রশ্ন তুলি তাহলে প্রশ্ন উঠবে কেন আমি এমন 'অবৈধ' সরকারের চাকরি করছি? আমার প্রথম কাজ হবে সরকারী চাকরি হতে ইস্তেফা দেয়া এবং কেবল তারপর একজন সাধারণ নাগরিক হিসাবে সরকার বিরোধী বক্তব্য দেয়া।

এসব বক্তব্য অনেকের কাছে গ্রহনযোগ্য নাও হতে পারে। একটা মুক্ত গণতান্ত্রিক দেশে সবার বক্তব্য আমার চিন্তাধারার সাথে মিলে যাবে এমনটা ভাবার কোন কারণ নেই। কেবল স্বৈরাচারী সরকারের অধীনে সবাই কথা বলে এক স্বরলিপিতে। যেমনটা আমরা বলতাম গেল ১৬ বছর।

সরকারের অংশ হয়ে জনাবা তাপসী তাবাসসুম ঊর্মি সরকার প্রধান সহ অনেকের বিরুদ্ধে এমন সব কথা বলেছেন যা যে কোন বিচারে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। কেবল এই গ্রাউন্ডেই ভদ্রমহিলাকে বিচারের আওতায় আনা যায় বলে বিশ্বাস করি। সরকারের অবস্থান পোক্ত করতে চাইলে এসব কর্মাচারী হতে সরকারকে মুক্ত করা খুবই জরুরি।

ভালো লাগলে শেয়ার করুন