ওরা তিন জন, ত্রিভুজ প্রেমের তিন চরিত্র। নায়ক আহমদ হোসেন এবং নায়িকা সুমি আক্তার ও বেবি আক্তার। চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের পটিয়াপাড়া গ্রামের ঘটনা। দুই প্রেম নিয়ে আহমদ হোসেনকে কোথাও কোন সমস্যা মোকাবেলা করতে হয়নি, কারণ নায়িকদ্বয়ের কারোরই জানা ছিলনা নায়কের দ্বৈত জীবনের কথা। ঘাত প্রতিঘাত যাই ছিল তার সবটুকু ধামাচাপা দিয়ে আহমদ হোসেন শেষ পর্যন্ত সুমী আক্তারকেই বেছে নেন পাত্রী হিসাবে। বিয়ের মঞ্চ প্রস্তত। পাত্র পক্ষ সদলবলে উপস্থিত কন্যা পক্ষের বাড়িতে। সবাই খোশ মেজাজে অপেক্ষা করছে কবুল পর্বের জন্যে। এমন একটা আবেগঘন মুহূর্তে বিয়ের আসরে উপস্থিত ত্রিভূজ প্রেমের তৃতীয় পক্ষ, বেবি আক্তার। অনেকটা বাংলা ছায়াছবির কায়দায় চীৎকার করে উঠেন, ’আমি এ বিয়ে মানিনা। আমাকে ও ঠকিয়েছে। আমি আমার ভালবাসার স্বীকৃতি চাই।’ চীৎকার অন্দরমহল হয়ে কনের কান পর্যন্ত পৌঁছায়। লজ্জায় সবার মাথা হেট। এরপর যা ঘটল তার স্ক্রীপ্ট হিন্দি সিনেমায় দূরে থাক গাঁজাখুরি ছবি উৎপাদনে অদ্বিতীয় স্থানীয় পরিচালক ফখরুল হাসান বৈরাগীর মাথায়ও ঢুকবে কিনা সন্দেহ হয়। বিয়ের আসরে উপস্থিত গণ্যমাণ্য মুরুব্বিদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক আহমদ হোসেন একই আসরে দুই প্রেমিকাকে স্ত্রী হিসাবে গ্রহন করতে বাধ্য হন।
এবার আসুন ঘটনার উপর তিন পক্ষের মন্তব্য শুনি।
- আহমদ হোসেনঃ ’বেবি আক্তারের সংগে সম্পর্ক থাকলেও সুমি আক্তরাকে বিয়ে করার সিদ্বান্ত নেই। বিয়ের আসরে বেবির উপস্থিতিতে বিব্রত হলেও তাকেও স্ত্রীর মর্যাদা দিয়েছি।’
- বেবি আক্তারঃ ’ভালবাসার মর্যাদা পেয়েছি’
- সূমী আক্তারঃ ’ভগ্যে যা ছিল তা-ই হয়েছে।’
এ প্রসংগে সূমীর বাবা আশরাফ আলী (আওয়ামী লীগ নেতা নন) বলেন, ’যা হওয়ার হয়ে দেছে। এ নিয়ে কথা বাড়িয়ে লাভ কি’। বেবীর মা বলেন, মেয়ে স্বেচ্ছায় বিয়ে করেছে। এ নিয়ে আমি শংকিত (মার মন!)।’ তবে রাঙ্গুনিয়া কাজী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহম্মদ ইসহাক হোসেন বলেন, ’দুই মেয়ের পরিবার রাজী থাকলে এ বিয়েতে ধর্মীয়ভাবে কোন ঝামেলা নেই (মিয়া-বিবি রাজী তো কেয়া করেগা কাজী!)।’
বিদ্যুৎ নাই, পানি নাই, গ্যাস নাই, আইন নাই, শৃংখলা নাই, এত কিছু নাই'এর দেশ বাংলাদেশে নাই নাই মাতম অনেকটা অতিরঞ্জিত মাতম নিশ্চ্য়, রাঙ্গুনিয়ার ত্রিভূজ প্রেমের সফল সমাপ্তি কিন্তু তাই প্রমান করে। একদিনে একই আসরে দুই প্রেমিকাকে এক সাথে বিয়ে, দুনিয়ার কোথায় পাওয়া যাবে এমন সুখ (আদৌ কি?)!
http://www.prothom-alo.com/detail/date/2010-04-11/news/55799