কোন ব্লগেই খুব একটা উচ্চবাচ্য হয়নি এ নিয়ে। মিডিয়াও খুব একটা গুরুত্ব দেয়নি ব্যাপারটাকে। খুব স্বাভাবিক ভাবে নিয়েছে আমাদের শিক্ষিত সমাজও। বর্ষবরণ উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত কনসার্টে ঘটে যাওয়া নিকৃষ্টতম ঘটনার কিছু কিছু বিবরণ বের হচ্ছে স্থানীয় পত্র-পত্রিকায়। মুক্তবান নামে একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন রাজু স্মৃতি ভাস্কর্যের সামনে বৈশাখী কনসার্টের আয়োজন করেছিল। বহুজাতিক কোম্পানীর স্পনসরে আয়োজিত এ কনসার্টের মালিক ছিলেন কবি জসিমুদ্দিন হলের ছাত্রলীগের সভাপতি আবদুর রহমান জীবন। খবরে প্রকাশ কনসার্ট শুরুর আগেই লোকে লোকারণ্য হয়ে যায় ঐ এলাকা। ওপেন এয়ার কনসার্টের পাশাপাশি একই সাথে শুরু হয় ওপেন এয়ার পশুত্ব। ঘটনার সূত্রপাত বিকাল ৪টার দিকে। মিলণ চত্বরের সামনে কয়েকজন তরুণ দলবদ্ধভাবে গায়ে হাত দেয় এক তরুণীর। অবস্থা বেগতিক দেখে ওখানে অবস্থানরত তরুণীর দল দ্রুত সড়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। বখাটেরাও পিছু নেয় তাদের। ইতিমধ্যে এ দলে যোগ দেয় আরও শতাধিক বখাটে। শুরু হয় গণ নিপীড়ন। পৈশাচিক উন্মত্ততায় ঝাপিয়ে পড়ে ছাত্রীদের উপর। কেবল এলোপাতাড়ি গায়ে হাত অথবা স্পর্শকাতর জায়গার খামছে ধরার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি মধ্যযুগীয় বর্বরতা, খুব তাড়াতাড়ি তা রূপান্তরিত হয় শাড়ি নিয়ে টানাটানিতে। অনেকে গা হতে শাড়ি খুলে তার উপর নাচতে শুরু করে দেয়, ব্লাউজের সেফিটিপিন খুলে অনেকে জড়িয়ে পরে গন টানাটানিতে। কনসার্টে জমায়েত বাকি দর্শকদের অনেকেই উপভোগ করতে থাকে এই পশুত্ব। সূর্য ডোবার পর উৎসবে রূপান্তরিত হয় কথিত সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠের এহেন কলঙ্কিত অধ্যায়।
খবরে প্রকাশ, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অংগ সংগঠন ছাত্রলীগের মধ্য সারির কর্মীরা আয়োজন করেছিল এই ওপেন এয়ার যৌননিপীড়ন অনুষ্ঠান। লাঞ্চিত তরুণীদের প্রায় সবাই ছিল বহিরাগত এবং রাজনীতির ঋতুস্রাবে বেড়ে উঠা এসব পঙ্গপালের দল বেছে বেছে শিকারে পরিণত করেছিল কনসার্ট দেখতে আসা অতিথি তরুণীদের।
জাতি হিসাবে আজ আমরা ঐক্যবদ্ধ ইতিহাসের ফাক ফাঁকফোকরগুলো আটকানোর জন্যে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে এমনটাই না-কি আমাদের দায়বদ্ধতা। পাঠক, ভাল করে চিনে নিন আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে।