এ মুহূর্তে কোন বিষয়টা আপনাকে বেশি ভাবাচ্ছে? আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যা, বেনজীরের নজিরবিহীন লুটাপাট, ক্রিকেট খেলায় বাংলাদেশের ভরাডুবি, না-কি এসব কিছুই না?
কোন কিছু আপনাকে চিন্তিত না করলে আপনি একদিকে পৃথিবীর সবচাইতে ভাগ্যবান ব্যক্তি, অন্যদিকে গোবর মস্তিস্কের একজন হদ্দ ছাগল।
উপরে বর্নিত কোন সমস্যাই ব্যাক্তি আমাকে খুব একটা ভাবনায় ফেলছেনা। কারণ আমি জানি এসব সমস্যা আমাদের মূল সমস্যা না। আসল সমস্যার গোঁড়া অন্য জায়গায়।
আনোয়ারুল আজিম ছিলেন ইন্টারপোলের তালিকাভুক্ত একজন ক্রিমিনাল। এবং বাংলাদেশে ৩ বারের 'নির্বাচিত' সংসদ সদস্য।
একজন ওয়ান্টেড ক্রিমিনাল কি করে পর পর ৩ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয় মূল সমস্যা সেখানেই।
বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই। সাধারণ জনগণ ভোট দিতে ভোট কেন্দ্রে যায়না। গেলেও ভোট দিতে পারেনা। কারণ সে অধিকার তাদের কেড়ে নেয়া হয়েছে।
আনার সাহেব তেমনি নির্বাচনে 'নির্বাচিত' হয়ে একাধিকবার সংসদে বসেছেন। গুন-কীর্তন করেছেন যারা উনাকে এমন সুযোগ দিয়েছেন।
কারণ এমন সুযোগই তাকে ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকতে সাহায্য করেছে।
এখানে প্রশ্ন আসবে, যারা উনাকা সুযোগ দিয়েছিলেন তার কি জানতেন না উনার ইতিহাস?
বাংলাদেশে কে সংসদে বসবে আর কে জেলে যাবে তা নির্ধারনের মালিক ওনারা দুই বোন। এবং নির্ধারণে যথাযত মূল্য নিতে তেনারা গরুর হাটের মত নমিনেশনের হাট বসান। গুরুত্বহীন মহিলা আসনের সদস্য পদও বিক্রি করেন কয়েক কোটি টাকায়।
এসব সত্য সবার জানা। তবুও কেউ মুখ খুলবেনা। কারণ মুখ খোলার পরিণতি বাস্তবায়নের জন্যে আছেন ও ছিলেন বেনজীর আহমদের দল। মুখে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মৃতসঞ্জীবনি সুধা, হাতে অস্ত্র, আইনের ধরাছোয়ার বাইরে এসব আদম নিজেরা নিজেদের তৈরী করেননি, করেছেন ওনারা দুই বোন। দেশকে লুটপাটের ভাগার বানিয়ে ছিটে-ফোঁটা এদিক সেদিক ছড়িয়ে সুসংহত করছেন নিজেদের অবস্থান। উচ্ছিষ্ট খেয়ে বড় হওয়া আনার আর বেনজীর ফ্যাসাদে পরে সাময়িক অসুবিধায় আছেন। সময় হলে বদলে যাবে দুজনের কাহিনী। আমাদের বুঝানো হবে ওরা বঙ্গবন্ধুর সৈনিক। কথিত স্বাধীনতা বিরোধী চক্র ষড়যন্ত্র করে তাদের ফাঁসিয়েছে। আনারের নামে মাজার হবে। কাতারে কাতারে মানুষ গিয়ে চোখের পানি ফেলবে। মিডিয়া সরব হবে। সবকিছুর শেষ হবে দুই বোনের মহত্ত্ব দিয়ে।
বেনজরীর ৬৭০ বিঘা জমি বৈধ হওয়া সময়ের ব্যপার। তার রাজকীয় রিসোর্টে আবারও সাকি নাচবে সুরার নহর বয়ে যাবে। নাইমুল ইসলামের দল তেলোয়াত করবে দুই বোনের সাফল্যের ফিরিস্তি।
ক্রিকেট! হুম! ডন কার্লিয়োনি ওরফে সাকি বাল হাসান আনোয়ারুল আজিমের জরোয়া ভাই। ওরা একই ঔরশে জন্ম নেয়া দুই বোনের সৈনিক। আর্ন্তজাতিক জুয়ারি, বাপের নাম বদলে ব্যাংক লুটের নায়ক যখন ক্রিকেট টীমনের অব্বিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে যায় বুঝতে ওখানেও দুই বোনের উপস্থিতি।
দেশে যতদিন গণতন্ত্র ফিরে না আসবে, যতদিন মানুষ পছন্দের কাউকে নির্বাচিত ও অপছন্দের কাউকে ভোট দিয়ে বিদায় করার অধিকার ফিরে না পাবে ততদিন ঘরে ঘরে আনার আর বেনজিরদের জন্ম হতে থাকবে।আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি দেশের শতভাগ সংসদ সদস্য একেক জন আনোয়ারুল আজিম। লুটেরা। খুনি। ধর্ষক। চোরাইকারবারী।
আইন ও বিচার বিভাগের হর্তাকর্তাদের এ টু জি সবাই একজন বেনজীর। ওদের সম্পদের ভাণ্ডার ঘাঁটলে বেরিয়ে আসবে সহস্রাব্দির ন্যাক্কারজনক অধ্যায়।
দেশকে ভালবাসলে এসব নিয়ে কথা বলার সাহস করুন। দুই বোন তাদের আখের গুছিয়ে নিয়েছেন। সময় আসলে বেনজিরের মত তেনারাও পালাবেন। সে মঞ্চ তৈরি আছে। ছাগলের ৩ং বাচ্চা হয়ে আনার আর বেনজিরের পথে হাটলে একদিন রূঢ় বাস্তবতা আঘাত হানতে বাধ্য।