পাঠক, যত ব্যস্তই থাকুন আজ একটা উপকার করতে হবে আপনাকে। খবরটা হয়ত পড়ে থাকবেন। না পড়ে থাকলে অবগতির জন্যে মনে করিয়ে দিচ্ছি (নো ফি)। আফরোজা আব্বাসের নাম শুনেছেন কখনো? না শুনে থাকলে আমি বলব ষোল আনাই মিছে আপনার জীবন। বাংলাদেশী হয়ে এমন একটা বিখ্যাত নামের সাথে পরিচিত নন, ধিক্কার আপনাকে! আফরোজা আব্বাস, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী পার্টির (বিএনপি) মহাশক্তিধর ব্যক্তি মির্জা আব্বাসের ধর্মপত্মী। এবার না চেনার আর কোন কারণ দেখছি না। এক সপ্তাহও হয়নি এই মহিয়সীকে দুর্নীতি কমিশনের এক মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। দুর্নীতি, তাও আবার দমন, এমন একটা মুর্গী মার্কা নাম নিয়ে এ কমিশন এখনো টিকে আছে গ্রেফতারের খবরটা কাগজে না আসলে বিশ্বাস করতে কষ্ট হত। ধন্যবাদ পারিবারিক গণতন্ত্রের আপোসহীন সরকারকে। ভাজিবুজি ছড়ে আসল কথায় আসা যাক এবার। দুটা দিনও পার হয়নি গ্রেফতারের দিন হতে, এরই মধ্যে ২৪ ঘন্টা আগের তরতাজা মহিলা 'মৃত্যুর' সাথে লড়াই করে কোন রকমে টিকে আছেন। অনুরোধটা আসলে মৃত্যু পথযাত্রী এই বিবি হাওয়ার জন্যে।
দাঁড়ান, আমি কিন্তু ভুল করে বিবি হাওয়ার নাম উচ্চারণ করিনি, এর পেছনে বেশ জোরালো কিছু যুক্তি আছে আমার। আদম (আঃ) বেশ আরামেই বেহেশতে কাটিয়ে দিতে পারতেন বাকি জীবনটা, কিন্তু পারেননি এই বিবি হাওয়ার জন্যে। গন্দমের লোভে নিজে যেমন ডুবলেন সাথে ডুবালেন উনাকেও। বিবি আফরোজার ব্যপারটাও অনেকটা একই রকম। মির্জা আব্বাস বান্দর জগতের বাদশাহ হয়েই কাটিয়ে দিতে পারতেন বাকি জীবন যদিনা আফ্রোজা বিবির মনে আলী বাবা ৪০ চোরের গুপ্ত ধনের সব্টা দখলের খায়েশ জাগতো। মন্দজনেরা বলে, ঢাকা পৌর করপোরেশনের খাজাঞ্চীখানা ও আফ্রোজা বেগমের বেডরুমের সাথে আন্ডারগ্রাউন্ড একটা খালের আওয়াজ কান পাতলে নাকি এখনো শুনা যায়, যা তৈরী হয়েছিল রীতিমত টেন্ডারের মাধ্যমে (নো দুর্নীতি!)। এই খাল বেয়ে কলকল শব্দে রূপকথার অনেক সোনালী নাও নাকি আসা যাওয়া করতো হীরা জহর লোড করে। আবারও বলছি, এসব আমার নয়, হিংসুকদের কথা, বিশ্বাস না করলেও অসুবিধা নাই। উনি অসুস্থ, এবং নানা জটিল রোগে ভুগছেন। শিগগিরই উপযুক্ত চিকিৎসা না দেয়া হলে যেকোনো মুহূর্তে মারাত্মক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তার জীবন সঙ্কটাপন্ন হয়ে পড়তে পারে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। আফরোজা আব্বাস কারাবন্দী থাকায় তার শিশুপুত্র আরাফাত আব্বাস আযানও নাকি শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্খ হয়ে পড়ছে। পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, মারাত্মক অসুস্খ থাকায় আফরোজা আব্বাসকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও তার শারীরিক অবস্খা ক্রমশই অবনতির দিকে যাচ্ছে। তিনি বুকের বামপাশে প্রচণ্ড ব্যথা, বুক ধড়ফড়, তীব্র মাথা ঘোরানো, কানের সমস্যাসহ নানা জটিল রোগে ভুগছেন। হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে ডা. প্রফেসর শাহীন চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে বুকের সমস্যার চিকিৎসা নিচ্ছিলেন আফরোজা আব্বাস। কানের সমস্যার দ্রুত চিকিৎসা না হলে স্খায়ীভাবে কানের শ্রবণ সমস্যায় পড়তে পারেন বলে চিকিৎসকরা আশঙ্কা করছেন।
হা হা হা ...। পাঠক, রোগের উপসর্গগুলো কি চেনা চেনা লাগছে? আপনাকে নিশ্চয় অলসাইমার রোগে পেয়েছে, তা না হলে এত তাড়াতাড়ি ভুলে যাওয়ার কথা নয়। বর্তমান আওয়ামী সরকার প্রধানের ১/১১ আমলের ডিজিটাল দিনগুলোর কথা কি স্মরণ আছে আপনার? এই যে চোখে রোগ, কানে রোগ, বুকের বা পাশে ধুক ধুকানি, আজ্রাইল আইল, আজ্রাইল গেল, ইত্যাদি ইত্যাদি। বেগম আমানুল্লাহর কাহিনি যদি ভুলে গিয়ে থাকেন আমি বলবো আপনার বাংলাদেশে মন নেই, বিদেশে চলে গেছে আচানক। ঐ বেগম এতটাই অসুস্থ ছিলেন কোর্টে হাজিরা দিতেন লাশ বহনকারী খাটিয়ায় চড়ে। বেগম হুদা? হা হা হা ... উনি আসতেন হুইল চেয়ারে সওয়ার হয়ে। যশোরের তরিকুলের জান কখন কবচ হয় এই আশঙ্কায় উনার চিকিৎসকরা কাফনের কাপড় কেনার চাঁদা পর্যন্ত উঠানো শুরু করে দিয়েছিলেন। ১/১১ গেল সাথে গেল আজ্রাইল। বেগম আমানুল্লাহ শুনছি ম্যরাথনে দৌড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন ইদানিং। আর নাগমা হুদা? হুইল চেয়ারের দামও নাকি পরিশোধ করেননি।
এসব রাষ্ট্রীয় লুটেরার দল জেলে গিয়ে গাওয়া শুরু করে মিথ্যার নতুন বেসাতি, রোগ বালাই! জেল হতে হাসপাতালে ঠাঁই পাওয়ার জন্যে নিজ দলের ডাক্তারদের দিয়ে রচনা করেন ডাক্তারী প্রফেশনের নিকৃষ্টতম কলংক, মিথ্যা প্রেসক্রিপশন। পাঠক, আফ্রোজা আব্বাসের মুক্তির জন্যে রাস্তায় নেমেছে অনেকে। আপনিও যোগ দিন তাদের সাথে। অসুস্থতার উছিলায় তিনি হাসপাতালে আসবেন, ভিভিআইপি মর্যাদায় আয়েস করবেন আর নষ্ট করবেন আমার আপনার পয়সা। রাষ্ট্রের কিছু অর্থ সাশ্রয়ের জন্যে রাস্তায় নামুন, মুক্তি দাবি করুন আফ্রোজা আব্বাসের। আমি আপনি ভাল করেই জানি দুনিয়ার কোন দুর্নীতিই এসব মহিয়সীদের জেলে ধরে রাখার শক্তি রাখেনা। তাহলে কেন এই অপচয়? এটাও কি দুর্নীতি নয়?