পাঠক, ভাল করে চেয়ে দেখুন পাশের ছবিটা। না, এ ছবি কারবালার ছবি নয়, ছবির মুখগুলোও হাসান-হোসেন অথবা এজিদ চরিত্রের কারও মুখ নয়। এরা তৃতীয় বিশ্বের গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার সূর্য সন্তান, এবং এ ছবি তাদের নাগরিক অধিকার আদায়ের সোনালী অধ্যায়ের রূপালী ছবি। বাংলাদেশে বগুড়া বলে একটা শহর আছে এবং সে শহরে আযীযুল হক কলেজ নামে একটা কলেজও আছে। কলেজ লেখাপড়ার স্থান হলেও ঐ কলেজের একদল ছাত্রকে এখন আর পড়তে হয়না। জাতি এদের কাছে দায়বদ্ধ, কারণ এরা স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে ক্লান্ত, জোট সরকার নামের কোন এক অপসরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে সর্বস্বান্ত। তাই কলমের বদলে হাতে তরবারি তুলে নিতে এদের কোন বাধা নেই। ওদের জন্যে কলমের কালি স্থান করে নিয়েছে হিউম্যান ব্লাড, যার রং লাল, রক্তাক্ত লাল!আপনার কি পরিচয় হওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে এদের সাথে? না হয়ে থাকলে এই অধম কুকুরকে সূযোগ দিন পরিচয় করিয়ে দেয়ার।
ওরা আর কেউ নয়, বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের সোল প্রোপাইটার, দেশের মালিকানা নিয়ে লড়াইরত দুই বৈরী পরিবারের এক পরিবারের প্রধান, ওয়ান এন্ড ওনলি শেখ হাসিনা ওয়াজাদের লগি-বৈঠা বহনকারী সেনাদলের অগ্রপথিক ছাত্রলীগের গর্বিত সদস্য। এদের দেখতে চাইলে আপনাকে কষ্ট করে বগুড়া পর্যন্ত যেতে হবেনা। বাতায়ন খুলে তাকিয়ে থাকুন পথের দিকে। যেন তেন পথ নয়, যে পথ মিশে গেছে সুরক্ষিত টেন্ডার বাক্সের দিকে, যে পথ চক্কর খাচ্ছে ভর্তি বাণিজ্যের আন্ধা গলিতে, সে সব পথের দিকে তাকাতে হবে আপনাকে। এদের বিচরন সর্বত্র, মুখে স্বাধীনতার মূল্যবোধ আর অন্তরে জাতির পিতার যোগ্য সন্তানের দাবি থাকলেও হাতে তাদের থাকবে বন্দুক, পিস্তল, কাটা রাইফেল, চাপাতি, তরবারি, দা, খন্তা আর কিরিচের মত শক্তিশালী বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদের অস্ত্র। ওদের দেখামাত্র মাথায় টুপি থাকলে তা খুলে ফেলুন দুটি কারণে; এক, সন্মান দেখান ইতিহাস রক্ষাকারীদের, দ্বিতীয়ত, ওদের অন্তর্দলীয় কারবালা সহসাই আপনার দিকে ধাবিত হতে পারে, কারণ আপনি টুপি পরিহিত, রাজাকার। আশাকরি চিনতে এবার আর অসুবিধা হবেনা।
সামান্য একটু মান অভিমানের নাটক চলছে এদের ঘরে, যা নিয়ে আপনার নাক না গলালেও চলবে। এদের জন্মদাত্রী ও লালনকারীনি অভিমান করে ত্যাজ্য করেছিলেন কিছুদিন আগে। ইয়াতিম হয়ে গেছে এই ইখতিয়ার উদ্দিন বিন মোহম্মদ বখতিয়ার খিলজির দল। মনিবান ছাড়া খুব একটা খারাপ সময় যাচ্ছে তা কিন্তু বলা যাবে না। বরং চারদিকে এখন সেনাদের ভরা বসন্ত। মা বিহীন সন্তানেরা একটু উশৃঙ্খল আচরণ করবেই, এ নিয়ে আপনার মত নাদানদের হা হুতাশ করার কোন কারণ নেই। আফটার অল, আপনি তো আর মুক্তিযুদ্ধে যান্নি, এদের মনিবরা গেছেন। মালিক ভৃত্যের মান অভিমানে আপনার মত লেংড়া ম্যংগোদের নাক গলানো এক অর্থে ফজলি ম্যংগোর সাথে অসম প্রতিযোগীতায় নামা। আপনার হার হতে বাধ্য। কোন অভিযোগ থাকলে পিঠে ছালা আর হাতে হারিকেন নিয়ে ঝিমুতে থাকুন টেন্ডার বাণিজ্যের চৌরাস্তায়। হয়ত এ পথে বাংলাদেশের আশেক-এ মালিকান কোন একদিন পা মাড়াবেন, চাইলে বিচার দিতে পারবেন।
ত্যাজ্য করে সন্ত্রাসী দলের দায়-দায়িত্ব এড়াতে সক্ষম হলেও দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে কিন্তু এই দায়-দায়িত্ব এড়ানোর কোন সূযোগ নেই শেখ কন্যার। নাগরিকদের স্বাভাবিক জন্ম-মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্যেই ভোট দিয়ে সরকার নির্বাচিত করা হয়। সন্ত্রাসীদের জন্ম দিয়ে তা লালন পালন শেষে জাতির ঘাড়ে চাপিয়ে দায়-দায়িত্ব এড়াতে ত্যাজ্য ঘোষনা স্রেফ ভাঁওতাবাজি ছাড়া আর কিছু নয়। জনাবা শেখ হাসিনা, শুধু ছাত্রলীগ হতে কেন, প্রধানমন্ত্রিত্ব হতে পদত্যাগ করে প্রমান করুন আপনি ব্যর্থতার দায়-দায়িত্ব নিয়ে অপরাগ।