পিলে চমকে দেওয়ার মত খবর! প্রধানমন্ত্রীর ভাই শেখ হেলাল স্বপরিবারে জেলে! নিম্ন আর উচ্চ আদালতের বিচারকদের কলমের খোঁচায় সিরাজগঞ্জের নদী ভাঙনের মত একে একে খসে পরছে আওয়ামী ফেরেশতাদের মামলা। এসব ফেরেশতাদের তালিকায় শেখ হেলাল এবং উনার সহধর্মীনি রুপা চৌধুরীর নাম থাকবে এমনটাই ছিল জাতির প্রত্যাশা। উল্লেখ করার দাবি রাখে সসম্মানে মুক্তি পাওয়া রাজনীতিবিদদের তালিকায় শুধু প্রধানমন্ত্রী নন, ঠাঁই পাচ্ছেন সব লেভেলের আওয়ামী নেতা রিগার্ডলেস অব দেয়ার ক্রাইম। মুক্তির এমন আলোকিত ক্ষণে শেখ পরিবারের আপনজনকে জেলে যেতে হচ্ছে আউলা ঝাউলা বাউলা সরকারের কারণে, ব্যাপারটা কেমন যেন অবাংলাদেশী মনে হচ্ছে! বিগত এক বছরে দেয়া নিম্ন ও উচ্চ আদালতের রায়গুলো বিবেচনায় আনলে একটা সত্য উপলব্ধি হতে বাধ্য, আমাদের বিচার ব্যবস্থা শেষ পর্যন্ত হয়ত আবিষ্কার করতে সমর্থ হয়েছে তত্ত্বাবধায়কদের ঠুকে দেয়া মামলাগুলো আসলে শতকরা ৫০ ভাগ সত্যের উপর দাঁড়ানো, বাকি ৫০ভাগ শ্রেফ ব্যাক্তিগত ও সন্মানীয় রাজনীতিবিদ্দের হয়রানির উদ্দেশ্যে করা। মাছ ভাগাভাগির মত মামলা গুলোও ভাগ করা হল দলীয় দাঁড়িপাল্লায়; বিএনপির বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলো আলোকিত সূর্যের মত সত্য, আর আওয়ামীদের বিরুদ্ধে মামলাগুলো কৃষ্ণপক্ষের অমানিশায় মত মিথ্যা। এমন একটা সমীকরণের ব্যতিক্রম হয়ে রইলেন শেখ হেলাল এবং উনার স্ত্রী। অনেকে বলবেন শেখ হেলাল বাদে বাকি সবাই তো আদলতে ধরা দিয়ে বেশ কিছুটা সময় জেল টার্ম কাটিয়ে তারপর মুক্তি পেয়েছেন। হুম, আশিংক সত্য। বনখেকো ওসমান গনির দোসর সাজেদা চৌধুরীর ছেলের কেসটা গোনায় আনলে এমন যুক্তি ধোপে টেকেনা। প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমানের বিশেষ বিবেচনায় এই মহান ব্যক্তিকে আদালতের চৌকাঠ পর্যন্ত পৌঁছাতে হয়নি, তার আগেই পরিয়ে দেয়া হয়েছে সম্মানের বরণমালা। সাজেদা চৌধুরীর ছেলের জন্যে যা সম্ভব তা শেখ পরিবারের জন্যে কেন নয় তা রহস্য হিসাবেই বিবেচিত হবে।
আমার উর্বর মস্তিষ্ক অবশ্য ঘন ঘন ইলেকট্রো ম্যাগনেটিক সিগন্যাল পাঠিয়ে যা বলার চেষ্টা করছে তার সারমর্ম করলে যা দাঁড়ায় তা হল;
১) কিছুটা হলেও চক্ষু লজ্জায় ভুগছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী। উনার মামলাগুলো ফুটন্ত ফুল হতে পাপড়ির মত ঝরে পরছে, পাশাপাশি প্রতিপক্ষের মামলাগুলো তরতাজা গোলাপের মত নতুন করে উজ্জীবিত করা হচ্ছে।
২) ইয়াতিমদের অর্থ আত্মসাতের মামলায় বিরোধী দলীয় নেত্রীর সাথে দুদক অনেকদিন ধরেই প্রেমপত্র চালাচালি করছে বিনা সাফল্যে। মনে হচ্ছে দুদককে গ্রীন সিগন্যাল দেয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দফতর হতে। এ ব্যাপারে হয়ত বড় ধরনের একশ্যানে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার। হয়ত শেখ হেলালকে বানানো হয়েছে বলির পাঠা। সন্দেহ নেই এখন হতে প্রধানমন্ত্রী বড় গলায় বলতে পারবেন, ‘হে আমার মুমিনগণ, তোমরা দেখ আমার আমলের আইনী দুনিয়া কতটা স্বাধীন, আমার ভাইকে পর্যন্ত রেহাই দিচ্ছেনা‘। তবে সবটাই ‘হয়ত‘ বলয়ের প্রডাকশন, বাস্তবে এমনটা হতে যাচ্ছে এর কোন বাধ্য বাধকতা নেই।
তবে এত ভারাক্রান্ত খবরের মাঝেও কিন্তু কিছু ভাল খবর আছে। শেখ হেলালকে স্বপরিবারে শিকদার মেডিকেলে ভর্তি করা হয়েছে। আমরা যারা রাজনীতিবিদ্দের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা পদ্ধতির সাথে পরিচিত তাদের অনুমান করতে অসুবিধা হয়না আগামীকাল কি ঘটতে যাচ্ছে জনাব হেলালের ভাগ্যে। বেইল না পাওয়া পর্যন্ত উনার ব্লাড প্রেশার থাকবে ২০০ এবং ৩০০’র ভেতর, বহুমূত্র রোগে হয়ে যাবেন মৃত্যু পথযাত্রী, চলে যাবেন আন্ধা হওয়ার শেষ পর্বে। মিথ্যাচারের বিশাল এক ম্যারাথন পারি দিয়ে অতি অল্প সময়েই সসম্মানে ফিরে আসবেন মেইনষ্ট্রীম পলিটিক্সে। এ ফাঁকে ওনার বায়োডাটায় যোগ হবে নতুন একটা অধ্যায়, - তত্ত্বাবধায়ক সরকার কর্তৃক নির্যাতিত।
শিকদার মেডিক্যালের হানিমুন পর্বটা জনাব শেখ হেলালের ভাল কাটুক এমনটাই কামনা করছি।