ভারতে পাকিস্তানী গোয়েন্দা গ্রেফতার। ব্রেকিং নিউজ!

Submitted by WatchDog on Saturday, June 5, 2010

Pakistan/India

খবরটা কি আপনাদের জ্ঞানের চেম্বারে ধরা দিয়াছে? না থাকিলে হাল্কার উপর নড়িয়া চড়িয়া বসিবার অনুরোধ করিতেছি। চমকপ্রদ কিছু তথ্য আছে আমার হাতে। এই তথ্যের সহিত রাজনৈতিক বিবাহ শাদীর কোন চ্যাপ্টার নাই, তাই লুঙ্গির গিট্টু হালকা করিলেও মান ইজ্জতে হাত পরিবার সম্ভাবনা থাকিবে না। এত খারাপ খবর চারিদিকে, আশাকরি এই খবর কিছুটা হইলেও আপনাদের মাঝে রসনার সঞ্চার করিবে। রসনা বিহীন জীবন কি জীবন হইতে পারে? কস্মিনকালেও না! খালি আমি না, মুরব্বিরাও একই কথা কয়।

আপনাদের অনেকেরই হয়ত ছহি-ছেলামতে হিন্দী সিনেমার রসনাঘন বায়স্কোপ দেখিবার অভিজ্ঞতা আছে। আমার ঘটনায় শ্রী দেবি অথবা মাধুরী দিক্সিতদের নিতম্ব দোলাইবার মত রসনা নাহি বটে, তবে এমন কিছু আছে যাহাতে নায়িকাদের অন্দর মহলের গোপন খবর বাহিরে পাচার করিবার কেচ্ছা জড়িত। পরাক্রমশালী ওমরেশ পুরী আপন কইন্যা শ্রী দেবীকে আটকাইয়্যা নায়ক ধর্মেন্দ্রের সহিত ফাইনাল মোলাকাতে বাধা সৃষ্টি করিতেছে, আপনারাই বলুন, এমন নাটকীয় ক্লাইমেক্স ছহি-ছেলামতে মিলনের জন্যে নায়িকাকে কি করিতে হইবে? আর কোন উপায় না থাকিলে শ্রীমতি পার্বতী পেয়ারের পোষা পায়রাকে বুকে জড়াইয়্যা একখান গানা করিবেন নিশ্চয়? গানের অন্তিমে চোখের পানি আর নাকের পানিতে পত্র লিখিয়া পায়রার পাংখায় আটকাইয়্যা অলিন্দ খুলিয়া আকাশে উড়াইয়া দিবেন, এই তো? প্রায় একই ঘটনা ঘটিয়াছে ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যে। ঐ রাজ্যের জনৈক সর্দারজি নিত্যদিনের মত সেদিনও সর্দারি কাজে ব্যস্ত ছিলেন। চারিদিকে কি ঘটিতেছে এত কিছু দেখিবার সময় কোথায়? মনের সুখে ’দুনিয়া কো মজা লেলো, দুনিয়্যা তুমহারী হ্যায়’ গানটা গাহিতেছিলেন। হঠাৎ করিয়া কোথা হইতে ধবধবে সাদা একখান পায়রা ল্যাংন্ড করিল সর্দারজির আঙ্গিনায় । নেপথ্যে চমকিয়া উঠিবার বাদ্য না বাজিলেও সর্দারজি চমকিয়া উঠিলেন। ভাবিলেন, কন্যার প্রেমিক কি শেষ পর্যন্ত পায়রা দিয়া তাহাকে ধোঁকা দিতে চাহিতেছে? ’শালে ধোকেবাজ, ম্যায় তেরে খুন পি লোংগা‘ মাথায় রক্ত চড়াইয়্যা ধাবিত হইলেন পত্র বাহকের দিকে।

বেতমীজ পায়রাকে সর্দারজি কি করিয়া বশ করিলেন উহার বিবরণে যাইবার আগে আরও একটা গল্প মনে হইয়্যা গেল। বেশী লুজ ফিল করিলে গিট্টুটাকে ফের চেক করিয়া নেন। মনে শান্তি পাইবেন। যাহাই হৌক, গল্পটা এই রকমঃ সর্দারজি সাইকেল চোরকে বামাল গ্রেফতার করিলেন। এর আগেও একটা সাইকেল চুরি গিয়াছে, তাই এই যাত্রায় চোরকে পুলিশের হাতে তুলিয়া দিবার বাসনা করিলেন। যেই কথা সেই কাজ, সাইকেল সহ চোরকে ভাল করিয়া বান্ধিয়া সর্দারজি রওয়ানা হইয়্যা গেলেন গঞ্জের দিকে। তো থানায় আসিয়া সর্দারজি কথা বলিলেন পুলিশের সহিত। ঘটনার বিস্তারিত জানাইলেন এবং যথাযোগ্য বিচার চাহিলেন। পুলিশ মনোযোগের সহিত অভিযোগ শুনিল এবং লিপিবদ্ধ করিল। সবশেষে নন-সর্দারজি পুলিশ জানিতে চাহিল, ’সবকুচ তো মালুম হোয়্যা, লেকিন শালে চোর কিধার হ্যায়?’ ‘হাজুর, ও আব ঘাবরাইয়ে মত, শালে কো আচ্ছা সে সাইকেল কো সাথ আটকা দিয়া‘। ’তো, আব উসকো হাত ভি আটকা দিয়্যা?’। ’ কেউ? উসকা কোই জরুরাত নেহি থা’। তরজমা করিলে এই দাঁড়াইবে, সর্দারজি চোরকে ভাল করিয়া দুই পা বাধিয়া সাইকেলের সহিত আটকাইয়্যা লম্বা পথ পাড়ি দিয়া থানায় আসিয়াছে অভিযোগ করিতে। ’আপকা দেমাক মে এ ভি নেহি আয়্যা কেউ কি শালে চোর হাত সে গিট্টু খোল কর সাইকেল লে কর নিকাল যায়ে গা?‘ সর্দারজি বিচলিত না হইয়্যা দৃঢ়তার সহিত উত্তর করিল, ’ইসি গম হামরি দেমাক পে নেহি আয়া, ও শালা ভি সর্দারজি, কেউ উসকা দেমাক পে আয়েগা? অভিযোগ লিপিবদ্ধ শেষ হইলে দারোগ সহ সর্দারজি রওয়ান হইয়্যা গেল চোরের দিকে। বেশ কিছুটা দূর হইতেই দেখা দিল দৃশ্যটা; চোর সর্দারজির দুই পা বান্ধা এবং তিনি মনের আনন্দে এক হাত মাথায় ও অন্য হাতে বিড়ি ফুকাইতেছেন।

ফিরিয়া যাই সমকালীন ঘটনায়। আমাদের সর্দারজি রাজধানী অমৃতসর হইতে ৪০ কিলোমিটার দূরের একটা থানায় আসিলেন ধৃত পায়রা সহ। পুলিশ দেখিল পায়ারার পায়ে তামার তৈরী রিং, সাথে একখান পত্র এবং বুকে লাল সীল। পুলিশ অফিসার রামাদাস জগজিৎ সিং চাহাল আবিষ্কার করিলেন, এই পায়রা প্রেমিকের পত্র বহনকারী যেন তেন পায়রা না, রীতিমত গোয়েন্দা পায়রা। শত্রু দেশ পাকিস্তান হইতে পাঠানো হইয়াছে ’স্পেশাল মিশনে’। হইতে পারে স্পেশাল এজেন্ট মাসুদ রানার চর। ঘটনার বিস্তারিত এখনো আবিষ্কার হয়নি। তবে পায়রাটাকে ডাক্তারী পরীক্ষা শেষে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে সশন্ত্র পাহারায় রাখা হইয়াছে। পাঞ্জাব সরকার তাহার রাজ্যে প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান সীমান্তে নজরদারি জোরদার করিতে বাধ্য হইয়াছে। গোয়েন্দা পায়রা লইয়্যা দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ বাধিয়া গেলে আমাদের দেশেও চাইল, ডাইল, ফেন্সি ডাইল, তেল, লবন, আদা, কন্ডম সহ নিত্য ব্যবহার্য জিনিসপত্রের মূল্য বাড়িয়া যাইতে পারে। ব্লগারদের অনুরোধ করিব যথা সময়ে প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী গোয়াইন স্টক করিতে। যেই হারে ঢাকার দালান কোঠা হেলিয়া পরিতেছে কোন সময় পুরা দেশ ভারতের দিকে হেলিয়া পরে, উহা কেবল স্বয়ং মাবুদই বলিতে পারিবেন। ঐ দেশে যাওয়াই মানে যুদ্ধে জড়াইয়্যা যাওয়া।

ছহি-ছেলামতে বাঁচিয়া থাকিবেন, দোয়া করিতেছি।
(পরিবর্ধিত)।
http://priyo.com/offbeat/2010/may/29/41288.html

ভালো লাগলে শেয়ার করুন