আপনাদের কারও কি ’পিপ’ শো দেখার সুযোগ হয়েছে কোনদিন? জীবন ১৬ আনাই মিছে যদি সুযোগ থাকা সত্ত্বেও দেখে না থাকেন। ৭০ দশকের শেষ দিকের কথা। গ্রীষ্মের কোন এক সোনাঝরা দিনে পশ্চিম বার্লিনের জুয়লজিসিয়া খার্ডেন (জুয়লজিক্যাল গার্ডেন) স্টেশনে বসে আছি লন্ডনগামী ট্রেনের অপেক্ষায়। ট্রেনের তখনো অনেক দেরী। এই প্রথম অদ্ভুত এই শহরটায়। দেশের মধ্যে আরেকটা একটা দেশ! আমি একা নই, সাথে বন্ধু রহমান। পশ্চিম বার্লিন তার চেনা, আগেও বেশ ক’বার এসেছে এখানটায়। সে ই প্রস্তাবটা দিল, ’চল পিপ শো দেখে আসি’। প্রাথমিক একটা ধারণা নিতে হল শো’এর উপর। গোলমত একটা রুম, লাল নীল মায়াবি বাতি আর উত্তেজক ছবি দিয়ে সাজানো ভেতরটা, সাথে ডোনা সামারের ’আই লাভ টু লাভ ইয়া বেবী’ জাতীয় গান। সিনেমা হলের কাউন্টারের মত ছোট ছোট ছিদ্র রুমটার চতুর্দিকে। নির্দিষ্ট জায়গায় ২ মার্ক সমমূল্যের কয়েন ঢাললে অটোমেটিক খুলে যায় কাউন্টারের ঢাকনা। স্বল্প বসনা রমণী অত্যন্ত ’আপত্তিজনক’ অবস্থায় স্বাগত জানায় খদ্দেরদের চোখ। যে যত বেশি নারায়ণ খসাবে তার চোখ তত বেশি উপভোগ করবে রমণীকুলের বস্ত্র সংকট।
আমার এ লেখা শো গার্লদের পিম্পগিরী করার জন্যে নয়। ভাবছিলাম মাহমুদুর রহমান নামের একজনের কথা। এ মুহুর্তে তিনি নাজিমুদ্দিন রোডের বাসিন্দা। অন্য একটা ব্লগে দেখলাম সময়ের সাহসী সৈনিক আখ্যা দিয়ে এই ’অতিমানব' কে নিয়ে এলাহি মাতম চলছে। অনেকটা মোহারম মাসের শিয়া মাতমের মত। সুযোগ থাকলে অবশ্যই দেখতে যেতাম ’গণতন্ত্রের’ এই লেফট্যানেন্ট জেনারেলকে। পিপ শোর মত কিছু মূল্য দিতেও আপত্তি থাকত না। এই ইচ্ছা আমার অনেক পুরাণো ইচ্ছা, নামী দামী কারও হাজতবাস খুব কাছ হতে দেখা। নিশ্চয় কারাবাসী মাহমুদুরকে পিপ গার্লদের মত পরনের পোশাক হালকা করতে হয় প্রয়োজনে। ঐ সময়টাই হতো আমার জন্যে মোক্ষম সময়। আমার দেখার মূল লক্ষ্যবস্তু জেনারেলের উদর। অমিমাংসিত সমীকরণ সমাধা করায় জানা একান্ত জরুরী, একটা উদর কতটা বিশাল হলে আস্ত দেশকে গিলে ফেলা যায়। আমার দেখার ইচ্ছে তার চোখ দুটো। জানার ইচ্ছে, কতটা বেহায়া হলে জীবন্ত চোখ দিয়ে মিথ্যার সমুদ্র লুকানো যায়।
মাহমুদুর রহমান নিশ্চয় সাহসী সৈনিক, তবে তা সময়ের নয়, ধান্ধাবাজির। জিয়া পরিবারের অবৈধ আয়ের যোগানদাতা এই আমলা নিজের রাজনৈতিক ভিত্তি গাড়ছেন গণতন্ত্রের লেবাস গায়ে দিয়ে । বিদ্যুৎ খাতের নিতম্ব দিয়ে লম্বা খাম্বা ঢুকানোর মূল আর্কিটেক্ট এই আফ্রিকান ময়ূর। আদালতে হাজিরা দিতে এসে লম্বা একটা লেকচার দিলেন দেশবাসীর উদ্দেশ্যে। পানি নয়, ভারতের কাছে ফারাক্কার জরিমানা চাওয়ার কারণেই নাকি তার এই জেল-হাজত। নিজে কাঁদলেন দেশের জন্যে, জনগণকে কাঁদালেন গণতন্ত্রের জন্যে! আমলা নামের এ সব প্রফেশনাল বেশ্যা জ্ঞানের ভান্ডার আর শঠতার মায়াজালে দেশকে কোন গলিতে নিয়ে ধর্ষন করেন তার হিসাব নেয়ার মত যোগ্য রাজনীতিদের জন্ম হয়নি এ দেশে। এরা চাকরীবস্থায় খায়, খায় রিটায়ার্ড করার পর। অলিগলি আর হাটে মাঠে গালি খায় রাজনীতিবিদ নামের স্বশিক্ষিত আর কু শিক্ষিতের দল, আর মগডালে বসে মধু খায় আমলা নামের এসব শাইনিংপাথ গেরিলারা। মাহমুদুর রহমান ময়ূর আমাদের নসিহত করছেন গণতন্ত্রের উপর। দৈনিক ’আমার দেশ’ পত্রিকা বন্ধ হওয়া মানেই নাকি বাকশালীয় যুগে ফিরে যাওয়া! তারেক রহমানের ডায়রিয়াতে যে পত্রিকার জন্ম তা যদি হয় গণতন্ত্রের ধারক বাহক তা হলে পেচ্ছাব করা উচিৎ এমন গণতন্ত্রে।
ইংরেজিতে একটা কথা আছে, সার্ভাইভাল অব দ্যা ফিটেস্ট। জনগণের নামে, রাজনীতির নামে, গণতন্ত্রের নামে দুই দল লুটেরা নিজেদের ভেতর কামড়া কামড়ি করছে অস্বিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্যে। এ লড়াইয়ে মাহমুদুরের দল এখন কোণঠাসা। সময় তাদেরও ছিল এবং তারাও ভোগ করেছে ক্ষমতার মৃতসঞ্জীবনী সূরা। গ্যাঁড়াকলে আটকা পড়ে গণতন্ত্রের জন্যে মায়াকান্না সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহর ’লাল সালু’ উপন্যাসের মজিদ মিয়ার কান্নার মতই শোনাবে, তা যত মিহি সুরেই হোক। এ দেশের একটা দুধের বাচ্চারও বুঝা হয়ে গেছে দুনিয়ার কোন শক্তিই মাহমুদ বয়াতিকে বেশিদিন জেলে রাখতে পারবে না। ঠিকই একদিন বেরিয়ে আসবে, এবং লালসার লালগালিচা পেরিয়ে পৌঁছে যাবে ক্ষমতার খুব কাছে। আমাদের সমাজে গণতন্ত্রের লালসালু নিয়ে মজিদ মিয়াদের কান্না চলে পালাক্রমে। কখনো তা মুক্তিযুদ্ধের নামে, কখনো ইসলামের নামে কখনো আবার পিতা অথবা ঘোষকের নামে। বাংলায় যাকে বলে, সব রসুনের এক ... ?