দেশের রাষ্ট্রপ্রধান অথবা সরকার প্রধান যখন কথা বলেন আমাদের ধরে নিতে হয় তথ্যপ্রমাণাদি হাতে নিয়েই কথা বলছেন। পাগলা কুত্তার স্টাইলে আবোল তাবোল বকা ক্ষমতাহীনদের মুখে মানালেও যারা ডজন খানেক গোয়েন্দা আর আইন শৃঙ্খলা বাহিনী নিয়ে চলাফেরা করেন তাদের মুখে এ ধরণের প্রলাপ খুবই হতাশাজনক। দু’দিন আগে প্রধানমন্ত্রী প্রকাশ্যে ঘোষনা দিলেন আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলা নাকি বিএনপির কাজ। হতে পারে তা সত্য। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এত বড় একটা হত্যাকান্ডে বিএনপি জড়িত থাকার প্রমাণ প্রধানমন্ত্রীর হাতে থাকলে উনি কেন গ্রেফতার করছেন না খালেদা জিয়াকে। আওয়ামী লীগের মত বিএনপিও ওয়ান ওম্যান শো, পারিবারিক সম্পত্তি। এই পরিবারের অনুমতি ছাড়া দলটির মাঠ পর্যায়ের চুনোপুঁটিরা এত বড় একটা হত্যাকাণ্ড ঘটাবে বিশ্বাস করার কোন কারণ নেই। দেশের প্রধানমন্ত্রী যখন কারও বিরুদ্বে খুনের অভিযোগ আনেন এটা আর প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব অভিযোগ থাকে না, তা হয়ে যায় সরকারী অভিযোগ, গোয়েন্দা বাহিনীর অভিযোগ। এবং এ অভিযোগ হওয়া চাই ব্যাপক তদন্তের ফসল। এ ব্যাপারে হাসিনা সরকার কতটা তদন্ত করেছে তা জানার অধিকার রাখে দেশের জনগণ। একজন খুনি মহিলা রাজনীতির মাঠে বিরোধী দলের নেত্রীত্ব দেবেন তা কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায় না। আর যদি এ অভিযোগ শেখ হাসিনার সিগনেচার মিথ্যাচারের অংশ হয়ে থাকে তাহলে আইন ও ব্যবস্থার উচিৎ হবে নেত্রীকে গ্রেফতার করে তাৎক্ষণিকভাবে বিচারের মুখোমুখি করা। থুক্কু, ভুলেই গিয়েছিলাম বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে গ্রেফতার করতে স্বয়ং খোদারও অনুমতি নেই। দুঃখিত।
সরকারের মন্ত্রিসভায় মন্ত্রী নামের বেশ কজন আবুলকে ফুল টাইম চাকরী দেয়া হয়েছে জনগণকে এন্টারটেইন করার জন্যে। আমাদের বাণিজ্যমন্ত্রী এদিক হতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের দাবি করতে পারেন। উনি একাধারে বাদি, বিবাদি, উকিল, মুক্তার, বিচারক সহ সর্বক্ষেত্রে সরকারের মুখপাত্র। বিডিআর হত্যাকাণ্ড হতে শুরু করে বাংলাদেশের সব অপরাধের তিনি আগামজান্তা। কে, কেন এবং কিভাবে অপরাধ করছে বা করতে যাচ্ছে এবং তার জন্যে কি শাস্তি অপেক্ষা করছে তার রায় দেয়া মন্ত্রীর জন্যে ডালভাত। অন্য মন্ত্রীরা এ ব্যাপারে খুব যে একটা পিছিয়ে তা বলা যাবে না। টেলি কম্যুনিকেশন মন্ত্রী রাজি উদ্দিন রাজু বললেন আরও চমকপ্রদ কথা, জেনারেল জিয়া নাকি পাকিস্তানের এজেন্ট হয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। একজন সেক্টর কমান্ডার যদি শত্রু পক্ষের এজেন্ট হয়ে যুদ্ধ করে থাকেন ধরে নিতে হবে গোটা মুক্তিযুদ্ধই ছিল ষড়যন্ত্রের ফসল। জেনারেল জিয়াকে হাজারো অভিযোগে অভিযুক্ত করা যায় কিন্তু দেশের সাথে বেঈমানী করতে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন জেনারেলের একজন ঘোরতর সমালোচক হয়েও এ কথা বিশ্বাস করিতে কষ্ট হয়। ’কাউকে ছাড়বো না, সবাইকে দেখে নেব হোক সে আওয়ামী লীগের’ এ জাতীয় দুই পয়সার আলতা মার্কা কথা বলে ইতিমধ্যে বিখ্যাত হয়ে গেছেন সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীকে তুষ্ট করে মন্ত্রিত্ব ধরে রাখার জন্যেই নাকি এ ধরনের গোয়েবলসি কথাবার্তা। তিনি খুশি তো দুনিয়া খুশি। ধন্য দেশের ধন্য রাজার ততধিক ধন্য প্রজা আমরা।