রাজনীতিবিদদের সন্তানরা যারা বিদেশে পড়াশোনা করতে যান তাদের কেউ কেউ দেশে ফিরে আসেন পেশাগত দায়িত্ব পালনে। কেউবা যোগ দেন পিতামাতার ব্যবসায়। চলতি সংখ্যা প্রোব ম্যাগাজিনের এক রিপোর্টে এ কথা বলা হয়েছে। ‘সানস অ্যান্ড ডটারস অব পলিটিক্যাল প্যারেন্টস’ শীর্ষক রিপোর্টে আরও বলা হয়, ম্যাগাজিনটির সামপ্রতিক এক তদন্তে এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে। ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছিল ১০৭টি দল। তার মধ্যে মাত্র ৩৯টি নির্বাচন কমিশনের শর্ত পূরণ করে নিবন্ধিত হয়েছিল। সুতরাং দেশে নিবন্ধিত ও নিবন্ধনহীন শত রাজনৈতিক দল আছে। এর মধ্যে আছে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি এবং জামায়াতে ইসলামী। এছাড়া আছে কম পরিচিত বিভিন্ন দল। এর মধ্যে কিছু দল আছে কাগজসর্বস্ব। রাজনৈতিক নেতা ক্রমবর্ধমান হারে বাড়লেও সেই পরিমাণ মন্ত্রিসভায় বা পার্লামেন্টের আসন পাচ্ছেন না। তারা রয়ে যাচ্ছেন ক্ষমতার বাইরে। কিন্তু তাদের রক্তে মিশে থাকছে রাজনীতি। কিছু নেতা আছেন ভীষণ জনপ্রিয়। আবার অনেকের তেমনটি নেই। কিন্তু তাদেরকে মানুষ চেনে। তাদের পরিবার সম্পর্কে সাধারণ মানুষ ততটা জানে না। এসব রাজনীতিবিদের সন্তানদের সম্পর্কে রয়েছে ভীষণ কৌতুহল। তারা কোথায় পড়েন, তারা কে কি করেন ইত্যাদি। এজন্য দেশের ২৪টি রাজনৈতিক দলের নেতাদের ছেলে ও মেয়ের ওপর অনুসন্ধান করেছে প্রোব। এসব দল হলো আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি (এরশাদ), জাতীয় পার্টি (মঞ্জু), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, কমিউনিস্ট পার্টি অব বাংলাদেশ, জেএসডি (ইনু), জেএসডি (রব), ওয়ার্কার্স পার্টি, গণফোরাম, সাম্যবাদী দল, ন্যাপ (মুজাফফর), কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, জাগপা, বিকল্পধারা, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), ডেমোক্রেটিক লীগ, প্রগ্রেসিভ ডেমোক্রেটিক পার্টি (পিডিপি), ইসলামী ঐক্যজোট, জমিয়তে উলেমা ইসলামী বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিশ, প্রগ্রেসিভ ন্যাশনালিস্ট পার্টি অব কল্যাণ পার্টি। নেতাদের সন্তানদের খোঁজখবর নিতে প্রোব রাজনৈতিক নেতাদের বা তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। এর মধ্যে আছেন আওয়ামী লীগের ৩৪ নেতা, বিএনপির ৩২ নেতা, জাতীয় পার্টি (এরশাদ)-এর ৫ নেতা, জামায়াতে ইসলামীর ৬ নেতা, জেপির ২ নেতা, জেএসডি (ইনু)র ৩ নেতা, ওয়ার্কার্স পার্টির ২ নেতা, সিপিবির ৩ নেতা, গণফোরামের ২ নেতা, এলডিপির ২ নেতা ও অন্যান্য দলের ১৪ নেতা। এর মধ্যে বেশির ভাগ নেতাই তাদের সন্তানদের সম্পর্কে কথা বলেছেন সোৎসাহে। বলেছেন, তারা কোথায় পড়ছেন, তাদের পেশা কি, তাদের অর্জন কি ইত্যাদি সম্পর্কে। আবার বিষয়টি যথার্থ নয় মন্তব্য করে অনেকে কোন কথাই বলেননি। আবার কেউ কেউ ব্যস্ততা দেখিয়েছেন। এক্ষেত্রে তাদের স্ত্রীরা কথা বলেছেন। অল্পসংখ্যক মন্ত্রী তাদের সন্তানদের নিয়ে কথা বলতে আগ্রহী ছিলেন। এ বিষয়ে রাজনৈতিক ১০৫ নেতাকে ফোন করা হয়। তাদের দেয়া তথ্যমতে, আওয়ামী লীগের ৩৪ নেতার মধ্যে ২৪ জনের ছেলেমেয়ে বিদেশে পড়াশোনা করছেন। বিএনপিতে ৩২ জনের মধ্যে এ সংখ্যা ২৬। জামায়াতে ইসলামীর ছয় নেতার মধ্যে ৫ জনের সন্তান পড়াশোনা করছেন বিদেশে। জাতীয় পার্টি (এরশাদ)-এর ক্ষেত্রে ৫ জনে এ সংখ্যা ৪। অন্যান্য দলের ২৭ নেতার মধ্যে ১৫ জনের সন্তানই বিদেশে পড়ছেন। এর অর্থ হলো- রাজনৈতিক নেতাদের শতকরা ৭৪ ভাগেরই সন্তান বিদেশে পড়াশোনা করছেন। এক্ষেত্রে প্রথম পছন্দ হিসেবে তারা বেছে নিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রকে। এর পরেই আছে বৃটেন, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও মালয়েশিয়ার নাম। আদর্শ বা অন্যান্য দিক দিয়ে নেতাদের মধ্যে পার্থক্য যাই হোক, যখন তাদের সন্তানদের পড়াশোনার বিষয়টি আসে, তখন তারা সবাই এক। বাম, ডান, মধ্যপন্থি, ইসলামপন্থি, ধর্ম নিরপেক্ষ যাই হোক তাদের সন্তানদের পড়াশোনার জন্য বিদেশে পাঠাতে ভুল করেন না। সবাই এ বিষয়টি শেয়ার করেন।
শীর্ষ পছন্দ বার এট ল’
মা-বাবার ইচ্ছাতেই অনেক ছেলমেয়ে আইন নিয়ে পড়াশোনা করেন। ব্যারিস্টার হওয়ার জন্য তাদের শতকরা বড় একটি অংশ বার এট ল’ পরীক্ষা দেন। দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাসে অনেক ব্যারিস্টার ও আইনজীবী রাজনীতিতে জায়গা করে নিয়েছেন। তারা প্রভাবও বিস্তার করেছেন। আর সম্ভবত তাই তারা তাদের সন্তানদের এই পেশায় দেখতে চান। কারণ তারা এটাকে সফলতা হিসেবে দেখে থাকেন। বার পাস করে রাজনীতিবিদদের যেসব সন্তান আইন চর্চা করছেন তাদের মধ্যে আছেন ড. কামাল হোসেনের মেয়ে ব্যারিস্টার সারা হোসেন, ব্যারিস্টার আমীর উল ইসলামের মেয়ে ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর, প্রয়াত শেখ মনির ছেলে ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস, নাজিউর রহমান মঞ্জুর দু’ছেলে ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ ও ওয়াসিকুর রহমান। তাপস ও পার্থ দু’জনে বর্তমান পার্লামেন্টের সদস্য। ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকারের ছেলে নওশাদ জমির, আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদের ছেলে মাহবুব শফিক, শাহজাজান সিরাজের মেয়ে সারাওয়াট সিরাজ শুকলা, শেখ সেলিমের ছেলে শেখ ফজলে নাঈম, বিএনপি নেতা মীর মোহাম্মদ নাসিরুদ্দিনের ছেলে মীর হেলালুদ্দিন ও মেয়ে ইশরাত নাজনীন, অলি আহাদের মেয়ে রুমিন ফারজানা, জাগপা প্রধান শফিউল আলম প্রধানের মেয়ে তাসমিয়া প্রধান, জামায়াত আমীর মতিউর রহমান নিজামীর ছেলে নাজিবুর রহমান এবং মীর কাশেমের ছেলে মীর আহম্মদ বিন কাশেম (আরমান), এরা সবাই ব্যারিস্টার। এরা হাইকোর্টে প্রাকটিস করছেন। এখন যারা আইন ও বার এট ল’ পড়ছেন তাদের মধ্যে আছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকুর বড় ছেলে আসিফ শামস, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপুমনির ছেলে তাফিকুর রাশাদ, বাণিজ্যমন্ত্রী কর্নেল (অব.) ফারুক খানের ছোট মেয়ে কারিনা খান, নৌ পরিবহনমন্ত্রী শাহজাহান খানের ছেলে আশিকুর রহমান খান ও স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানকের মেয়ে আমব্রিন রাখি। লন্ডনে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করছেন বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার দুই মেয়ে অন্তরা ও শ্রাবন্তি, খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ছেলে খন্দকার মারুফ হোসেন, জাতীয় পার্টির নেতা কাজী ফিরোজ রশিদের ছোট ছেলে কাজী রাজিব হাসান ও জাপার মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদারের ছোট মেয়ে সারহা ফিজা বিনতে আমিন। এলডিপি নেতা আলমগীর কবিরের ছেলে মাহমুদুল কবির তাপোসের মেয়ে আনা লুইস আশা দু’জনেই ঢাকায় আইন পড়ছেন।
মাদরাসা নয়, আধুনিক শিক্ষায় আগ্রহী জামায়াত নেতারা
তদন্তে দেখা গেছে, ইসলামিক নেতা মাওলানা মহিউদ্দিন খান, শায়খুল হাদিস, ফজলুল হক আমিনী, মাওলানা ফজলুল করিম ও অন্য অনেকের সন্তানরা মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষিত। তাদের বেশির ভাগই মাদরাসায় শিক্ষকতা করছেন। অন্যরা কোন না কোন ভাবে মাদরাসার সঙ্গে সম্পৃক্ত। জামায়াতে ইসলামীতে দেখা গেছে ব্যতিক্রম। এ দলের শীর্ষ ৬ নেতার কোন সন্তান মাদরাসা শিক্ষায় শিক্ষিত নন। তারা সবাই আধুনিক ধারার শিক্ষায় শিক্ষিত। গোলাম আযমের বড় ছেলে মামুন আল আজমি জেদ্দায় ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকে চাকরি করছেন। তার চতুর্থ ছেলে ব্রিগেডিয়ার (বরখাস্তকৃত) আমান আল আজমি ঢাকায় বসবাস করেন। তার অন্য চার ছেলে বাস করেন লন্ডনে। মতিউর রহমান নিজামীর আছে চার ছেলে ও দুই মেয়ে। তারা পড়াশোনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও সৌদি আরবে। তাদের মধ্যে আছেন ডাক্তার, ব্যারিস্টার ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক। আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদীর আছে তিন ছেলে ও এক মেয়ে। তারা বাংলাদেশের বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। কাদের মোল্লার আছে দুই ছেলে ও চার মেয়ে। তার ছোট ছেলে হাসান মওদুদ মালয়েশিয়ার ইসলামিক ইউনিভার্সিটিতে বিবিএ করছেন। বাকিরা বাংলাদেশের বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন। মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের আছে ৫ ছেলে ও এক মেয়ে। এর মধ্যে এক ছেলে ও এক মেয়ে দেশেই পড়ছেন। দুই ছেলে সুইডেনে ও এক ছেলে মালয়েশিয়ায় পড়ছেন। মীর কাশেম আলীর আছে দুই ছেলে ও তিন মেয়ে। বড় ছেলে সালমান দাঁতের সার্জন। তার পরের ছেলে আরমান ব্যারিস্টার, বড় মেয়ে হাসিনা পুষ্টিবিদ। বসবাস করছেন সুইডেনে। দ্বিতীয় মেয়ে সুরাইয়া রাবেয়া মালয়েশিয়ার ইসলামিক ইউনিভার্সিটিতে পড়ছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক নিয়ে।
সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী নেতাদের পছন্দ যুক্তরাষ্ট্র
দেশের বাম নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক দলের নেতা, তারা সাচ্চা হন বা না হন তাদের আদর্শ সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী। উচ্চশিক্ষা ও নিশ্চিত ভবিষ্যতের জন্য এরাই সন্তানদের যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও যুক্তরাজ্য পাঠান। সন্তানের শিক্ষার প্রসঙ্গ আসতেই সমাজতান্ত্রিক নেতাদের পছন্দের তালিকায় উপরে থাকে পুঁজিবাদী দেশগুলো। প্রোবের তদন্তে দেখা গেছে, চীনপন্থি নেতা শিল্পমন্ত্রী দীলিপ বড়ুয়ার আছে চার মেয়ে। তারা সবাই ডাক্তার। বড়মেয়ে ঢাকায় বসবাস করেন। কিন্তু বাকিরা তাদের স্বামীর সঙ্গে বসবাস করেন যুক্তরাষ্ট্রে। সিপিবি নেতা মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমের একমাত্র কন্যা স্বর্ণালি ইসলামও স্বামীর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। জাসদ (ইনু) নেতা মাইনুদ্দিন খান বাদল এমপির বড় ছেলে সোহেল একজন বিমান প্রকৌশলী। তিনি তার স্ত্রীকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কানেটিকাটে থাকেন। অন্য দুই ছেলে শাকিল ও তৈমুর এবং মেয়ে জাহিরা সবাই কানাডাতে পড়াশোনা করেছেন। জাসদ নেতা এএসএম আবদুর রবের ছেলে রাতুল এবং রাব্বুল দু’জনেই যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করছেন।
বিদেশে বিয়ে
বাংলাদেশী রাজনীতিবিদদের ছেলেমেয়েদের অনেকেই বিদেশে পড়াশোনা করতে গিয়ে সেখানে পছন্দের মানুষকে পেয়ে বিয়ে করে সেখানেই স্থায়ী হয়েছেন। কেউ কেউ আবার তাদের স্বামী বা স্ত্রীকে নিয়ে দেশে ফিরে এসেছেন। অতীতে এ ধরনের বিয়েতে বাবা মায়ের ঘোর আপত্তি থাকলেও এখন এটা বেশ সহজেই তারা মেনে নেন। তবে রাজনীতিবিদের ছেলেমেয়েদের বিদেশে বিয়ে করার সংখ্যা তুলনামূলক ভাবে কম। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় বিয়ে করেছেন মার্কিন আইনজীবী ক্রিস্টিনকে। গণফোরাম প্রেসিডেন্ট ড. কামাল হোসেনের মেয়ে ব্যারিস্টার সারা হোসেন বিয়ে করেছেন সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যানকে। সারার ছোট বোন দীনা হোসেনও এক মার্কিন নাগরিককে বিয়ে করে স্বামীর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে বাস করছেন। সাবেক স্পিকার জমিরউদ্দিন সরকারের মেয়ে নিলুফার আক্তার মিশিগান ইউনিভার্সিটি থেকে এলএলএম সম্পন্ন করেছেন। সেখানেই তিনি আয়ারল্যান্ডের রবিন নোলসের দেখা পেয়ে তাকে বিয়ে করেছেন। স্বামীকে নিয়ে তিনি এখন পেনসিলভেনিয়াতে স্থায়ী হয়েছেন। আওয়ামী লীগ নেতা মেজর জেনারেল (অব.) সুবিদ আলী ভূঁইয়ার ছোট ছেলে জুলফিকার আলী যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করেছেন। এখন তিনি সেখানে ওয়েলেস ফারগো ব্যাঙ্কে কাজ করছেন। তার স্ত্রী রেবেকাও মার্কিন নাগরিক। জাতীয় পার্টি নেতা আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর তৃতীয় মেয়ে মনিজা হোসেন ভার্জিনিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে আইনে মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন। তার স্বামী লেবাননের নাগরিক। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী দু’জনেই একটি থিঙ্কট্যাঙ্কের সঙ্গে কাজ করছেন। মঞ্জুর ছোট মেয়ে আনুশেহ সমপ্রতি এক ইরানিয়ানকে বিয়ে করেছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ফেমিনিস্ট মেজরিটি ফাউন্ডেশনে কাজ করছেন। তিনি নিজেও একজন নারীবাদী লেখিকা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।
শিক্ষিত জাতির জন্য রাজনীতিবিদদের উদ্বেগ
ক্ষমতায় থাকুন আর নাই বা থাকুন রাজনীতিবিদরা সব সময়ই জাতির উন্নয়ন, জনগণের কল্যাণ আর শিক্ষিত জাতি দর্শনের ব্যাপারে বক্তব্য দিয়ে থাকেন। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক যে বাংলাদেশের শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নের প্রশ্নে তারা একেবারেই ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। দেশব্যাপী বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাসের অরাজকতা আর সহিংসতাই এখানকার উচ্চ শিক্ষার দুরবস্থার জানান দিচ্ছে। আর প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার দুরবস্থার কথা এখন আর গোপন কোন বিষয় নয়। একটি উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থার কথা উঠলে সেটার মানোন্নয়নের দায়িত্ব বর্তায় মূলত ক্ষমতাসীনদের ওপর। শিক্ষার মান ক্রমাগত নেমে যাওয়ার বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগের। একদিকে রাজনীতিবিদরা মানুষকে শিক্ষিত জাতি উপহার দেয়ার স্বপ্ন দেখান। অন্যদিকে নিজের দেশে ছেলেমেয়েদের শিক্ষা না দিয়ে বিদেশে পাঠানোর মাধ্যমে স্থানীয় শিক্ষা ব্যবস্থার ওপর তাদের আস্থাহীনতারই বহির্প্রকাশ ঘটান। জনগণ যখন দেখেন, রাজনীতিবিদরা তাদের সন্তানকে শিক্ষা বা কখনও কখনও স্থায়ী হওয়ার জন্য বিদেশে পাঠিয়ে দেন তখন অসামঞ্জস্যপূর্ণ শিক্ষা ব্যবস্থার পুনরুদ্ধারে তাদের যে কোন উদ্যোগ নিয়ে স্বভাবতই প্রশ্ন ওঠে।
দেশ গোল্লায় গেলে রাজনীতিবিদদের কিছু আসে যায়না কারণ... উপরের লেখা দ্রষ্টব্য।