দেশে বিদেশে ছড়িয়ে থাকা "আমি বাংলাদেশীর" পাঠকদের জানাচ্ছি বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা। যেখানে থাকুন সুস্থ থাকুন। ১৯৭১ সালে বিদেশি অপশক্তি ও তাদের স্থানীয় দোসরদের পরাজিত করে বিজয় ছিনিয়ে আনা সম্ভব হলেও দেশ সত্যিকার অর্থে কতটা স্বাধীন হয়েছে বিচারের ভার আপনাদের উপর ছেড়ে দিলাম। স্বাধীনতার অপর নাম যদি পিতা অথবা স্বামীর নামে দেশ দখল করার অবাধ লাইসেন্স হয়ে থাকে তাহলে নিশ্চয় আমরা স্বাধীন। এমন একটা স্বাধীনতার জন্যেই কি তাহলে দেশের লাখ লাখ মানুষ প্রাণ দিয়েছিল? পাকিস্তানী ২২ পরিবার ও তাদের সেবাদাস সেনা শাসকদের নাগপাশ হতে মুক্তি তথা জাতির আর্থ-সামাজিক সচ্ছলতা নিশ্চিত করাই ছিল স্বাধীনতার আসল উদ্দেশ্য। কতটা পূরণ হয়েছে সে উদ্দেশ্য? স্বাধীনতার পিতা ও ঘোষক নির্ধারণ করতেই চলে গেল প্রায় ৪০ বছর। অপ্রয়োজনীয় এ নির্ধারণ জাতিকে প্রতি পদক্ষেপে করেছে বিভক্ত, ঘরে ঘরে ছড়িয়ে দিয়েছে হিংসা, বিদ্বেষ আর রেশারেশির বিষাক্ত আগুন। সময়ের ব্যবধান পাকিস্তানী ২২ পরিবারকে সরিয়ে জাতির ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছে শেখ ও জিয়া নামের দুটি পরিবার। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের মাধ্যমে দেশের ভৌগোলিক মালিকানা চিরস্থায়ী করার লড়াইয়ে নেমেছে বৈরী দুই প্রতিপক্ষ। বাড়ি দখল, বাড়ি উচ্ছেদ, নামকরণ, নাম বদল আর আধিপত্য কায়েমের নামে গোটা দেশজুড়ে প্রতিষ্ঠিত করেছে মধ্যযুগীয় বর্বরতা। শিক্ষা ব্যবস্থার কোমর ভেংগে জাতির গলায় ঝুলিয়ে দিয়েছে দাসত্বের স্থায়ী শৃংখল। বহুদলীয় গণতন্ত্রের নামে জাতির জরায়ুতে বপন করা হয়েছে এমন এক বীজ যার ফসল আজকের বিকলাঙ্গ শিক্ষিত সমাজ।
কতদিন চলবে এ অসুস্থ লড়াই? আর কত মুখ বুজে সহ্য করতে হবে দেশকে পারিবারিক সম্পত্তি বানানোর এ হীন লিপ্সা? স্বাধীনতার পুনর্মূল্যায়ন হোক এবারের বিজয় দিবসের দাবি। আসুন সুন্দর একটা দিনের স্বপ্ন দেখি।
আসুন দেশকে ব্যাক্তি ও পরিবারের উর্ধ্বে রাখার অভ্যাস করি। পুজা করতে চাইলে আসুন দেশকে পুজা করি।