দেশপ্রেমিক প্রবাসী ভাই ও বোনেরা।
পৃথিবীর দেশে দেশে এখন স্বৈরতন্ত্র, রাজতন্ত্র ও পরিবারতন্ত্রের উচ্ছেদ চলছে। ২০, ৩০ আর ৪০ বছরের লুটেরা শাসনের জিঞ্জির ভেংগে বেরিয়ে আসছে সাহারা মরুভূমি হতে শুরু করে লোহিত সাগরের মানুষ। বেন আলী পালিয়েছে তিউনিশিয়া হতে, মিশরের হোসনি মোবারক নিজ গৃহে বন্দী, পায়ের তলা হতে মাটি সড়ে যাচ্ছে লিবিয়ার একনায়ক গাদ্দাফির। ইয়েমেন, ওমান আর সৌদি আরব পর্যন্ত পৌছে গেছে পরিবর্তনের সুনামি। ঠিক এমনি এক প্রেক্ষাপটে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশে গভীর হতে গভীরতর হচ্ছে পারিবারিক স্বৈরশাসনের বিষাক্ত থাবা। পিতার নামে, স্বামীর নামে, চেতনার নামে, ইতিহাসের নামে পারিবারিক শাসনের বেড়ি গ্রাস করে নিচ্ছে গণতান্ত্রিক শাসনের ঐতিহ্য। পাশাপাশি সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে পচনের বীজ ঢুকিয়ে তার ফায়দা লুটছে বিশেষ দুটি পরিবার। রাষ্ট্রের সবগুলো গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে পারিবারিক সেবাদাস বানিয়ে দলিত মথিত করছে একদল পেশাজীবি লুটেরা। ওরা লুটছে আর আমরা লুণ্ঠিত হচ্ছি। লুণ্ঠিত অর্থে কেউ বৈজ্ঞানিক কেউবা মেহমান হয়ে আয়েশি জীবন কাটাচ্ছে সুদূর আমেরিকা আর ইউরোপে। কোত্থেকে আসছে আর কারা যোগান দিচ্ছে এসব অর্থ একবার ভেবে দেখেছেন কি? এই কি সে অর্থ নয় যা আপনার, আমার আর লাখ লাখ প্রবাসি বাংলাদেশির মাথার ঘাম পায়ে ফেলা কষ্টের ফসল? বিনিময়ে কি পাচ্ছি আমরা? হাজার হাজার বাংলাদেশি লিবিয়ার মরুভূমিতে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। এক ফোটা পানির অভাবে নিজের প্রস্রাব পান করছে অনেকে। আর আমাদের কথিত গণতান্ত্রিক সরকার বলছে এদের ফিরিয়ে আনার মত যথেষ্ট অর্থ নেই তহবিলে। পিতার নামে ৫০ হাজার কোটি টাকার বিমান বন্দর বানাতে অর্থের কোন অভাব হয়না অথচ যাদের কারণে দেশের অর্থনীতি চালু থাকছে তাদের গন্য করা হচ্ছে উটকো ঝামেলা হিসাবে।
হতে পারে মধ্যপ্রাচ্যের বাস্তবতা আমাদের চাইতে ভিন্ন। কিন্তু একটু গভীরে প্রবেশ করলে আমরা সহজেই বুঝতে পারব স্বৈরতন্ত্রের আসলে কোন দেশ নেই, পরিচয় নেই। ওরা সব দেশে সব কালে লুটেপুটে খায় আর রাষ্ট্রকে নিজের নিবন্ধিত সম্পত্তি হিসাবে গন্য করে। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। ৪০ বছর হয়ে গেল আমাদের স্বাধীনতার। কি আমাদের প্রাপ্তি? হাসিনা, খালেদা, সজিব ওয়াজেদ জয় আর তারেক জিয়া? এদের আয়েশ নিশ্চিত করার জন্যেই কি এ দেশের লাখ লাখ মানুষ রক্ত দিয়েছিল?
প্রবাসি ভাই-বোনেরা, দেশের ভাল-মন্দ নিয়ে কথা বলার অধিকার আমাদের সীমিত। আমাদের প্রতিবাদের সুযোগ নেই, প্রতিরোধের মাঠ নেই। তাই বলে আমরা কি নীরবে নিভৃতে যুগ যুগ ধরে এদের আয়েশের জন্য অর্থ যুগিয়ে যাব? সময় কি হয়নি কথা বলার? আসুন কথা বলি এবং নেত্রী আর দলকে বুঝতে দেই দেশ চালাতে গেলে আমাদের কথাও শুনতে হবে, আমাদের ভাষাও বুঝতে হবে। আর এই বোঝানোর সংবাদটা সরকারের কাছে পৌঁছানোর প্রথম পদক্ষেপ হিসাবে নিম্নোক্ত পদক্ষেপটা প্রস্তাব করছি। জন্মভূমিকে ভালবাসলে বিবেকের কাছে প্রশ্ন করুন এবং শামিল হউন এ প্লাটফর্মে।
প্রস্তাবঃ আগামী ১লা এপ্রিল হতে ৩০ শে এপ্রিল পর্যন্ত দেশে অর্থ পাঠানো বন্ধ থাকবে।
ভেবে দেখুন, এবং কর্মসূচীর সাথে একমত হলে দেশে দেশে পৌঁছে দিন প্রস্তাবের সারমর্ম। ব্লগ, ফোরাম, ফেইসবুক আর টুইটারের মত সোস্যাল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করুন। আপনার প্রতিবেশীকে অবহিত করুন, স্থানীয় গ্রোসারি, রেষ্টুরেন্ট, ক্লাব সহ বাংলাদেশি কম্যুনিটির সব অংগ প্রত্যঙ্গে ছড়িয়ে দিন এ আহ্বান।
ধন্যবাদ সবাইকে।