মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি, জনগণের দল, একমাত্র দল যারা দেশকে পাকিস্তান বানাতে চায়না, দল যারা ধন ধান্যে পুষ্পে ভরিয়ে দেশকে স্বর্গলোকের খুব কাছে নিয়ে যেতে যায় এবং যে দলের নেত্রীত্বে আছেন দেশের ১নং দেশপ্রেমিক তারা কি স্বাধীনতা হাটে ঘাটে বিক্রি করতে চায়, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে বাধা দিতে চায়, দেশকে পাকিস্তান বানাতে চায় ও নির্বাচনে ব্যাপক ভাবে পরাজিত একটা দলের ভয়ে ভীত? ১২ই মার্চ নিয়ে দলটির অসংলগ্ন কথাবার্তা কি তাই প্রমান করেনা? খবরে প্রকাশ সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে ঢাকায় ২০ জনের বেশি লোক একত্রিত হলে রাষ্ট্রীয় স্পন্সরে ধাওয়ার করা হবে! এবং এ কাজের নেত্রীত্বে থাকবেন দেশের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা। রাজধানীর হোটেল গুলোতে দফায় দফায় পুলিশ হানা দিচ্ছে এবং খুজে বেড়াচ্ছে কথিত স্বাধীনতা ও যুদ্ধাপরাধী বিচারের বাধা সৃষ্টিকারীদের। যে দলের পকেটে বিশাল জনম্যান্ডেট, যাদের পায়ে গড়াগড়ি খায় দেশের উচ্চ আদালতের বিচারকগণ, তাদের কেন এত ভয়? ১২ই মার্চের এক জমায়েতই কি কথিত স্বাধীনতা বিরোধীদের ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনবে? দেশের কর্মহীন লাখ লাখ মানুষদের পেছনে কিছু নগদ খরচ করলে তাদের নরকে নেয়ারও ব্যবস্থা করা যায়। এমনটাই আজকের অর্থনৈতিক বাস্তবতা। ক্ষমতার ভরা যৌবনে বিএনপি নামক আলিবাবা চল্লিশ চোরের দল রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাটের মাধ্যমে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করেছিল। তাদের পেট ও পকেট দুটাই এখন পর্যন্ত ভরা। ভরা পকেট হতে কিছু নগদ বের করে তা রাজনীতির মাঠে বিনিয়োগ করা আমাদের চরিত্রহীন রাজনীতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। এ ধরণের বিনিয়োগ সমাজে সাময়িক অস্থিরতা সৃষ্টি করলেও একটা বাস্তবতা আমাদের মানতে হবে, একদিনের জন্যে হলেও কর্মহীন কিছু মানুষ কাজ পায়, একবেলা খাওয়ার নিশ্চয়তা পায় আর পকেটে পায় নগদ কিছু অর্থ। লুটপাটের বাণিজ্যে এটাই বা কম কিসের? বাংলায় একটা কথা আছে, ভাত ছড়াকে কাকের অভাব হয়না। খালেদা জিয়ার দল ভাতের মত টাকা ছড়াচ্ছে, আর এই টাকার পেছনে ধাওয়া করছে লাখ লাখ মানুষ। ঢাকার রাজপথে কোটি মানুষ জমায়েত হলেও আওয়ামী লীগের মত গোড় শক্ত একটা দলের ভয় পাওয়ার কথা ছিলনা। অথচ ওরা ভয় পাচ্ছে এবং এ ভয় তাদের বাধ্য করছে হদ্দ উন্মাদের মত আচরণ করতে। কারণটা কি?
আওয়ামী রাজনীতির সাথে সংশ্লিষ্ট একজনের সাথে আলাপ করে জানা গেল কোন মূল্যেই ক্ষমতা হারাতে রাজী নয় বর্তমান সরকার। ক্ষমতার রাজনীতিতে পরাজিত হলে তাদের অতি উচ্চ মূল্য পরিশোধ করতে হবে, ব্যাপারটা নিয়ে দলের হাইকমান্ড উদ্বিগ্ন। ওয়ান ম্যান শোঁ বামপন্থী দলগুলো বাদে দেশে এমন কোন রাজনৈতিক দল নেই, নেতা-নেত্রী নেই যাদের উচ্চ আদালত দিয়ে হেনস্থা করানো হয়নি। ডক্টর মোহম্মদ ইউনূসের কারণে দলটি আজ বন্ধুহীন, একে একে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে জাপান সহ বিশ্বব্যাংকের মত অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান গুলো। দ্রব্যমূল্য ও মুদ্রাস্ফীতির কারণে সাধারণ মানুষ আজ দিশেহারা। দলের হাইকম্যান্ড বুঝে নিয়েছে নিরপেক্ষ সরকারে অধীনে নির্বাচন হলে এ সরকার বিদায় নিতে বাধ্য। আর বিদায়ের সাথে বিপদে পরবে ৩২নং বাড়ি সহ গোটা শেখ পরিবারের অস্থিত্ব। উচ্চ আদালত ও যুদ্ধাপরাধী বিচার, এই দুই অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে নির্বাচনী বৈতরণী পাড়ি দেয়া যে সম্ভব হবেনা আর কেউ না হোক দলীয় প্রধান তা বুঝে নিয়েছেন। তাই ১২ই মার্চকে আওয়ামী লীগ কেবল তারিখ হিসাবে নিচ্ছেনা, নিচ্ছে বিদায় ঘন্টার পদধ্বনি হিসাবে।