ডেটলাইন রামুঃ কালো রাতের কালো বন্যার লাল আগুন

Submitted by WatchDog on Monday, October 15, 2012

Bangladesh

ঘটে যাওয়া যে কোন ঘটনার শেষ ঠিকানা হয় স্মৃতির আর্কাইভ, হোক তা দীর্ঘশ্বাস অথবা ইতিহাস হয়ে। রামুতে ঘটে যাওয়া ঘটনাবলী সেদিকেই এগুচ্ছে ধীরে ধীরে। অবশ্য এ ফাঁকে পানি যতটা ঘোলা করা সম্ভব তার সবটাই করে ফেলেছেন দেশের ’মহামান্য’ রাজনীতিবিদগণ। কালো রাতের কালো বন্যার লাল আগুন নিভে যাওয়ার আগেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করে বসলেন এ কাজ ’সুপ্রিয়’ বিরোধে দলের। অপরাধ, তদন্ত ও রায় ঘোষনার এমন বিদ্যুৎ গতি বিশ্ব ইতিহাসে দ্বিতীয়টা খুঁজতে গেলে আমাদের হয়ত ’ওয়ান ম্যান শো’ হীরক রাজ্যের ইতিহাস ঘাটতে হবে। কেবল এমন একটা দেশেই সম্ভব বাংলাদেশের মত ঝড়ো গতির অপরাধ ও অপরাধী শনাক্তকরণ এবং তার বিচার ও রায় ঘোষনা। মন্ত্রীসভায় স্থান পাওয়া ও তার চীর স্থায়ীত্বের জন্যে প্রধানমন্ত্রীর সন্তূষ্টিটা আমাদের দেশে খুবই জরুরি। সদ্য নিয়োগ প্রাপ্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর তা ভাল করেই জানেন। জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আসনে বসে চুরি আর অপশাসনের আর্ন্তজাতিক স্বীকৃতি পেতে সন্ত্রাসবাদের দ্বিতীয় কোন বিকল্প নেই সরকারের হাতে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভেবেছিলেন রামুর ঘটনাকে লাল নীল কাগজে মুড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীর জন্যে উপঢৌকন হিসাবে নিউ ইয়র্ক পাঠাবেন এবং প্রধানমন্ত্রী তাতে জঙ্গিবাদের রং লাগিয়ে পরিবেশন করবেন হিলারী ক্লিনটন সহ উন্নত বিশ্বের অনেকের পাতে। আওয়ামী লীগের বাংলাদেশ এ কাজে কতটা সফল হয়েছে সময়ই তা প্রমাণ করবে। তবে এ মুহূর্তের বাস্তবতা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর পরিবার সহ মন্ত্রীসভার অনেকের অপরাধ শনাক্ত করতে আর্ন্তজাতিক অঙ্গনের তিন বাঘা রাঘব বোয়াল এখন বাংলাদেশে।

সে রাতে রামুর বৌদ্ধ পল্লীতে কি ঘটেছিল বুঝতে আমাদের কি খুবই অসুবিধা হচ্ছে? ছবি যা বলছে এবং এলাকার আন্ত রাজনৈতিক ভারসাম্যের যে চিত্র ফুটে উঠছে তাতে সহজেই অনুমান করা যায়া সে রাতে রাজনীতি নামের দেশীয় কুলাঙ্গার চালকের আসনে বসা ছিলনা। আওয়ামী, বিএনপি, জামাতি, বামপন্থী আর ডানপন্থী সবাই জোট বেধে মেতে উঠেছিল ধ্বংসের উল্লাসে। যদিও উপলক্ষ ছিল ফেইসবুক ষ্ট্যাটাস আর দূরের দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিতর্কিত ছায়াছবি, কিন্তু আসল কারণ হিসাবে আমরা যদি আরকান রাজ্যের সাম্প্রতিক মুসলমান নিধনকে আসামীর কাঠগড়ায় দাঁড় করাই অন্যায় কিছু হবে বলে মনে হয়না। হিংস্রতার যে বিষাক্ত বীজ জাতির শিরা উপশিরায় বোনা হয়েছে তার দায় দায়িত্ব এককভাবে দাড়িওয়ালা স্বদেশিদের উপর চাপালে তা হবে অন্যায় বিচার। আমাদের এত দ্রুত ভুলে গেলে চলবে না রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের নামে খোদ প্রধানমন্ত্রীর লগি-বৈঠার নারকীয় তান্ডব। চুরি আর লুটপাটের পাশাপাশি কথায় কথায় শরীর হতে ধর নামিয়ে ফেলা রাজনীতিতে স্থায়ী সংস্কৃতি হিসাবে ঠাঁই করে নিয়েছে। ক্ষমতার সবোর্চ্চ আসনে বসে ’মহামান্য’ রাজনীতিবিদগণই এর ধারক বাহক হিসাবে কাজ করে যাচ্ছেন। এ কাজে সরকারের সহায়ক শক্তি হিসাবে পাশাপাশি থাকছে তার আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী। দৈনিক পত্রিকাগুলোতে পিস্তল আর বন্দুক হাতে পুলিশের পাশাপাশি রাজনৈতিক পেশী শক্তির ন্যাক্কারজনক ছবি কি তাই প্রমাণ করেনা? অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে রামুর ঘটনায় পুলিশ ছিল বিপরীত ভূমিকায়। তারা আন্ত রাজনৈতিক জোটের সহিংস ঘটনায় লীগ/দল/শিবিরের ভূমিকা পালন করে প্রত্যক্ষ ভূমিকা রেখেছে ধ্বংসযজ্ঞে। সোজা বাংলায়, রামুর ঘটনার পেছনে এলাকার জনসমর্থন ছাড়াও সাথে ছিল সরকারী সমর্থন। প্রশাসন যদি সরকারের অংশ হিসাবে বিবেচিত হয় তাহলে মানতে হবে শেখ হাসিনার সরকার প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিল এ কাজে। প্রধানমন্ত্রী যতই গলাবাজী করুন না কেন আর্ন্তজাতিক বাজারে ধর্মীয় সন্ত্রাসের বিকল্প কোন পুঁজি এ মুহূর্তে সরকারের হাতে নেই, তাই ঘটনা নিয়ে তেজারতির দায় দায়িত্ব চাইলেও তিনি এড়াতে পারবেন না।

বাংলায় একটা কথা আছে, ’গু খায় সব মাছে, বদনাম হয় টাকি মাছের‘। মওদুদ আহমেদ বাংলাদেশের স্বীকৃতি টাকি মাছ। ভদ্রলোকের চুরি চামারির শুরু বাংলাদেশের উষালগ্ন হতে। শেখ মুজিব হয়ে জিয়া, জিয়া হয়ে এরশাদ, এরশাদ হয়ে খালেদা জিয়া, এক কথায় কোন আমলেই বাদ যায়নি এই রাজনীতিবিদের অপকর্ম। রামুর ঘটনা নিয়ে বিরোধী দল যে তদন্ত কমিশন বসিয়েছিল তার নেত্রীত্বেও ছিলেন এই ব্যারিষ্টার। কমিশনের ফলাফল কতটা সত্য নির্ভর আর কতটা পক্ষপাতদুষ্ট তা কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর আগে খোদ পদক্ষেপ অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে। মওদুদের মুখ হতে তদন্তের ফলাফল বের হওয়া মাত্র প্রধানমন্ত্রী মুখ খুললেন এবং নতুন করে প্রমাণ করলেন অনেকদিন ধরে তিনি মুখ ও দাতের যত্ন নেন না। সমসাময়িক বিশ্বে এমন অশ্রাব্য মুখের সরকার অথবা রাষ্ট্রপ্রধানের বিকল্প খুঁজতে গেলে আমাদের টেনে আনতে হবে উগান্ডার এককালীন প্রেসিডেন্ট ইদি আমিনকে। যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে ধরণী হতে চীর বিদায়ের জন্যে প্রধানমন্ত্রী নেংটি বেধে মাঠে নেমেছেন তারই অপরাধ ও বিচার পর্বকে আলোকিত করে মওদুদকে ধরাশায়ী করার চেষ্টা অবশ্যই স্ববিরোধী। প্রধানমন্ত্রীর মত যাদের গোল্ডফিশ মেমোরি তাদের মনে করিয়ে দিচ্ছি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দুর্নীতি বিরোধী আদালতের রায় ছিল অপরাধ প্রতি ১৩ বছরের জেল। এ হিসাবে মওদুদের কত বছর প্রাপ্য তার কিছুটা রূপরেখা পাওয়া গেছে প্রধানমন্ত্রীর খিস্তি হতে। একই সরকার খোদ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা ঠুকেছিল সর্বসাকুল্যে ১৩টি। বছরের হিসাবে রাজনীতিবিদ নামের এই চর্মহীন সাপের প্রাপ্য ১৬৯ বছর। মওদুদ চোর একাই যে গু খান না তা প্রমাণ করতে বিশ্বব্যাংকের মত আর্ন্তজাতিক সংস্থা লোক পাঠাচ্ছে বাংলাদেশে। বলাই বাহুল্য সত্যের গভীরে ঢুকলে চোরের তালিকায় প্রধানমন্ত্রী সহ শেখ পরিবারের অনেকের নাম সামনে চলে আসতে বাধ্য। তাই মওদুদ চরিত্র নিয়ে মাতামাতির আগে প্রধানমন্ত্রীর উচিৎ ছিল আয়নায় নিজের চেহারা দেখা এবং ক্ষমতার কোন পানশিতে চড়ে ১৬৯ বছরের ভব দরিয়া পাড়ি দিয়েছিলেন তার ব্যাখ্যা দেয়া।

পর্যবেক্ষণটা কেবল আমার নিজের না অন্য কেউ একই চোখে দেখতে পান বুঝতে পারিনা। ৭১’সালে রাজাকার আল বদরদের মুখের রব ছিল ’ইসলাম গেল‘। কথিত ধর্ম প্রেমী এসব আজরাইলদের হাতেই নিহত আর ধর্ষিত হয়েছিল লাখো মানুষ। অপরাধ মাত্রার সাথে পাল্লা দিয়ে এসব কুলাঙ্গারদের দল ইসলাম দরদের জারী গানে মুখরিত করেছিল এ দেশের জনপদ। ব্লগীয় স্ফেয়ারে সমসাময়িক দেশপ্রেমের সাথে কোথায় যেন ৭১’এর ইসলাম দরদের সমান্তরাল খুজে পাই। হতে পারে এ আমার বিভ্রান্তি, কিন্তু রেলের কালো বিড়াল, সেতু চুরির পারিবারিক সিন্ডিকেট, ডেসটিনির মহামারী আর হলমার্কের লুটপাট মহোৎসব জোৎস্না প্লাবনের মত যতই আমাদের আলোকিত করছে জপমালা হাতে নিয়ে একদল পোষ্য ততই জপছে দেশপ্রেম তথা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার জপ। বলতে গেলে রাষ্ট্রীয় খাঞ্জাজিখানার পশ্চাৎদেশ উন্মুক্ত করে গণধর্ষণের জাতীয় সঙ্গীতে পরিণত করা হয়েছে আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে। ব্যর্থতার ডায়রিয়া হতে জনগণের চোখ, নাক ও কানের নিরাপদ দূরত্ব নিশ্চিত করার জন্যেই হয়ত ইয়া নফসি ইয়া নফসি কায়দায় নিত্য উচ্চারিত হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, ভুগোল আর পৌরনীতি। কিন্তু আমরা যারা পারিবারিক দাসত্বের সদস্য হয়ে ডায়রিয়া পরিষ্কারের কাজে নাম লেখায়নি তাদের কাছে স্বাধীনতা মানে কেবল মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে চেতনা ব্যবসা নয়, বরং অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান আর স্বাভাবিক জন্ম-মৃত্যু সহ আইনী শাসনের নিশ্চয়তা।

পেরু নামে দক্ষিন আমেরিকার একটা দেশ আছে। একটা সময় ছিল যখন সে দেশে রাজত্ব করত ম্যানুয়েল রুবেন আবেমায়েল গুজমান রেইনেসোর নেত্রীত্ত্বাধীন সাইনিং পাথ গেরিলা দল। শ্রেণীহীন সমাজ ব্যবস্থা কায়েমের নামে হত্যা, খুন সহ দেশের গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি সহ দৈনন্দিন চাহিদার ভীত উপড়ে ফেলেছিল মাটি হতে। কল্পরাজ্যের ভূতের ভয়ের মত সন্ধ্যা নামতে দেশটার জনগণ ঠাঁই নিত নিরাপদ আশ্রয়ে। ঘোর অমানিশা নেমে এসেছিল দেশের ভাগ্যাকাশে। দরিদ্র, ক্ষুধা আর দুর্নীতির কড়াল থাবায় নিমজ্জিত ছিল মানুষের বেচে থাকা। এমন এক দুঃসময়ে জাতির ত্রাণকর্তা বনে দিগন্ত রেখায় উদয় হন আলবার্তো ফুজিমোরে নামের জাপানি বংশোদ্ভুত এক মানুষ। নির্মম ও কঠিন হস্তে দমন করেন বামপন্থীদের হঠকারী বিল্পব। পাশাপাশি জনগণের জন্যে নিশ্চিত করেন গণতন্ত্র তথা বেচে থাকার নূণ্যতম চাহিদা। অবদানের স্বীকৃতি হিসাবে পেরুর জনগণ নেতাকে বসিয়ে দেয় সরকার প্রধান পদে। এবং এখানেই শুরু হয় ফুজিমোরের নতুন অধ্যায়। প্রেসিডেন্ট পদকে ব্যক্তিগত সম্পদ ভেবে নেমে পরেন চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করার ষড়যন্ত্রে। ভ্লাদিমোরো মনতেসিনোসদের মত সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পরেন দুর্নীতির মহাসমুদ্রে। সময়মত জেগে উঠে পেরুর জনগণ এবং ফুজিমোরেকে দেখিয়ে দেয় প্রয়োজনীয় রাস্তা। শাস্তি হতে বাঁচার জন্যে পালিয়ে যান পিতৃভূমি জাপানে। সেখানেও জায়গা হয়নি, তাই চলে আসেন পেরুর প্রতিবেশী দেশ চিলিতে। জনগণের চাপে চিলি সরকার ফুজিমোরকে তুলে দেয় পেরুর হাতে। এবং শেষ পর্যন্ত বিচারের সন্মুখীন হয়ে স্থায়ীভাবে ঠাই নেন জেলখানায়। সেখানেই পচে মরছেন বৃদ্ধ এই নেতা। জনগণকে গুজমানের সন্ত্রাস হতে উদ্ধার করে ফুজিমোরে নিজেই বনে যান নতুন গুজমান এবং জগদ্দল পাথরের মত চেপে বসেন জাতির বুকে। লেখকের নিজের দেখার সৌভাগ্য হয়েছে এন্ডিজের নির্জনতায় হুয়াংকা হুয়াসি নামের এক গুহায় এই নেতার বিলাসিতার ভয়াবহ চিত্র। নিজের দুঃসময়ে তিনি তুলে ধরতেন গুজমানের অন্ধকার হতে পেরুকে মুক্ত করার কাহিনী। কিন্তু এক মুক্তি পর্ব দিয়ে ঢাকতে পারেননি নিজের অপরাধ পর্ব। বাংলাদেশের বর্তমান ক্ষমতাসীন দলকেও বোধহয় ফুজিমোরের সিনড্রোমে পেয়েছে এবং পাকিস্তানীদের বিদায় করে নিজেরাই বসে গেছে টিক্কা খান আর নিয়াজীর আসনে। আর চামড়া বাঁচানোর তাগাদা হতে ঘন ঘন উচ্চারণ করছেন মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পর্ব। ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার কাজে এক ভৌগলিক স্বাধীনতাই যে যথেষ্ট হয়না তার প্রমাণ ইতিহাসে বিরল নয়। চাইলে আমাদের প্রধানমন্ত্রী এ নিয়ে পড়াশুনা করতে পারেন।

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্যে আমাদের যুদ্ধ করতে হয়নি। আমাদের উপর কেউ তা চাপিয়েও দেয়নি। মাঝে পাকিস্তানিরা চেষ্টা করেছিল কিন্তু কাজ হয়নি। জাতীয় জীবনে ধর্মীয় প্রভাবকে স্বীকার করলেও মানুষ হিসাবে আমরা কোন দিনই হিন্দু, মুসলমান অথবা বৌদ্ধ হিসাবে আলাদা করতে শিখিনি। এ আমাদের হাজার বছরের ইতিহাস ও ঐতিহ্য। জাতি হিসাবে এভাবেই আমরা বেড়ে উঠেছি। রাজনৈতিক সমীকরণ ও তার পঙ্কিলতায় ডুবন্ত কজন বিপদগামীর বিচ্ছিন্ন কার্যকলাপ দিয়ে গোটা জাতিতে বিচার করা হবে ঘোরতর অন্যায়। ভুলে গেলে চলবে না আমরা প্রতিবেশী দেশের নরেন্দ্র মোদি অথবা তামিল টাইগার নই যে রাষ্ট্রীয় স্পনসরে সংখ্যালঘু নিধনে অভ্যস্ত। রামুতে যা হয়েছে তা বিচ্ছিন্ন, রুগ্ণ ও অসুস্থ রাজনীতির ফসল। সময়মত এ অপরাজনীতি হতে দেশকে মুক্ত না করা গেলে কেবল রামুর বৌদ্ধ সম্প্রদায়ই নয় বরং গোটা জাতিকেই গুনতে হবে চড়া মাশুল।

ভালো লাগলে শেয়ার করুন