যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের উপর তথ্যবহুল একটা লেখার ওয়াদা করেছিলাম একজনের কাছে। এ নিয়ে বেশকিছুটা সময়ও ব্যায় করেছি ইতিমধ্যে। কিন্তু লেখা যেন কিছুতেই এগুতে চাচ্ছে না। কিবোর্ডের উপর আঙ্গুল রাখতে গেলে মনিটরের অন্য পীঠে ঘটতে থাকে এলাহি সব কাজ কারবার। কয়েক লাইন লিখে বিরতি হতে ফিরে এসে দেখি তামাদি হয়ে গেছে লেখার বিষয়বস্তু। ঘটনার প্রেক্ষাপটে চলে আসছে নতুন সব চরিত্র, জন্ম দিচ্ছে নতুন নতুন কাহিনী। কুলিয়ে উঠতে পারছিনা বিচারকে ঘিরে আবর্তিত হওয়া ঘটনা সমূহের সাথে পাল্লা দিতে। স্কাইপি কেলেংকারির রেশ নেতিয়ে আসার আগেই দৃশ্যপটে হাজির তুরস্কের ব্রাদারহুড বাহিনী। পাশাপাশি রায়ের উপর চোর সুরঞ্জিতের বেআইনী কথাবার্তা ও মতিয়া চৌধুরির নেত্রী লেহনে বিচার প্রক্রিয়ার চুনসুরকি ব্যবহার, সব মিলিয়ে একেবারে লেজেগোবরে অবস্থা! তার উপর আজ দেখলাম আসামী ’আল্লামা’ সাইদীর কথিত ফোন সেক্স মসলা। এখানেই থামতে হল আমাকে। এসব চোদনার ভাই বদনাদের উপর গবেষণা করার কোন কারণ আছে বলে মনে হলনা। অযথা সময় নষ্ট করার জন্যে দুঃখ হচ্ছে। ভুলেই গিয়েছিলাম এসব ওলামায়ে কেরামদের জন্ম এ দেশের মাটিতে এবং এরা রক্তখেকো ভ্যাম্পায়ারের জ্ঞাতি ভাই। ১৯৭১ সাল হাজার বছর আগের কোন সাল নয় যার স্মৃতি রোমন্থন করতে রেকর্ডপত্র ঘাটতে হবে। একই সালের জুলাই-আগষ্ট মাস হবে হয়ত।
বাসে করে ঢাকা যাচ্ছি। ঢাকা-সিলেট রোডের পাচরুখি নামক একটা জায়গায় এসে থামতে হল। মুক্তিযোদ্ধারা একটা ব্রীজ উড়িয়ে দিয়েছে, তাই নৌকা করে পাড়ি দিতে হবে ব্রীজের পথ। ওপার হতে ধরতে হবে নতুন একটা বাস। এখানেই ঘটল ঘটনাটা। বেশ্যার ছাওয়াল পাকি সেনা সাথে তার বিচি লেহনকারী স্থানীয় রাজাকারকে নিয়ে আমাদের পথ আটকে দিল। বন্দুকের নলের মুখে নিয়ে গেল কিছুটা দুরে এবং একে একে সবাইকে কাপড় খুলতে বাধ্য করল। ওরা আমাদের নুনু পরখ করে যাচাই করল ওখানে ইসলামী ঝান্ডা আছে কিনা। একজনকে পাওয়া গেল যার ঝান্ডা নেই। এবং তাকে নিয়ে দুই খানকির ছাওয়াল অদৃশ্য হয়ে গেল নিজদের বেশ্যালয়ে। ইহজগতে তাকে আর কোনদিন দেখা যায়নি। নুনু হাতড়ানো এসব বেজন্মাদের বিচারের জন্য এখন আদালত বসাতে হচ্ছে। কৈ আমার নুনুতে ওরা যেদিন হাত লাগিয়েছিল তার জন্য তো নালিশ করার রাস্তাও খোলা রাখেনি? তাহলে ওদের জন্যে কেন? নাকি ওরা সৃষ্টির সেরা জীব আর আমরা তাদের বাই-প্রোডাক্ট? নূরানী চেহারার এসব পশুরা ন'টা মাস ছড়ি ঘুরিয়েছে। রাতের ঘুম হারাম করেছে। অসহায় ছিন্নমুলের মত এ বন্দর হতে ও বন্দরে পালিয়ে বেড়াতে বাধ্য করেছে। আজ বাপধনরা খাঁচায় আটকে পরেছে এবং তাতেই নাকি খোদার আরশ পর্যন্ত কেঁপে উঠেছে। এমন খোদার জন্যে একটাই ম্যাসেজ আমার, ’খেলারাম খেলে যাও’।
মাঝে মধ্যে আমরা বোধহয় ভুলে যাই কোন দেশের নাগরিক আমরা। এটা বাংলাদেশ। এখানে ৪০ হাজার টাকা লুটের পরিকল্পনার জন্যে ছয়জনকে পাখির মত গুলি করে মারে সরকারের লাঠিয়াল বাহিনী। এখানে টাকা দিয়ে আদালত কেনা যায়, মন্ত্রী কেনা যায়, খুনি ভাড়া করা যায়, রাজনৈতিক পরিচয়ে রাষ্ট্রপতির দয়ায় ফাঁসির মঞ্চ হতে বেরিয়ে আসা যায় বীরদর্পে। এমন একটা দেশে লাখ লাখ মানুষের রক্ত খেকো একদল হায়েনার শাস্তি দিতে আন্তর্জাতিক আদালত বসাতে হবে, ট্যাক্সের টাকা ব্যায় করে ঘন্টার পর ঘন্টা শুনানি করতে হবে, বিদেশি আইনজ্ঞদের উপস্থিতিতে বিচার জায়েজ করতে হবে।কারণটা কি? তেনাদের কাছে রাষ্ট্র কি তার কন্যা সন্তানদের বিবাহ দিয়েছে, নাকি তেনারা আমাদের ঘরজামাই? এই এরাই কি সে আল্লামা নন যারা সামান্য অপরাধে ফতোয়ার নামে পৈশাচিক লালসায় ঝাঁপিয়ে পরেন অসহায় মা-বোনদের উপর? এদের বিচারের জন্যে যারা আদালতের প্রয়োজন অনুভব করেন দ্বিমত করি তাদের সাথে।
যুদ্ধাপরাধী বিচার পর্ব শেষ হওয়াটা খুবই জরুরি। এবং তা যথা সম্ভব দ্রুত। বিচারের নামে রাজনৈতিক ফায়দা লুটে ক্ষমতার ভব দরিয়া নতুন করে পাড়ি দেয়ার মহাপরিকল্পনা করছে অযোগ্য, অপদার্থ একটা সরকার। দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজনীতি, আইনের শাসন সবকিছু শৃঙ্খলিত হয়ে আছে এই বিচারের পদতলে। আবুল চোরদের পুকুর চুরিতে পাথর সিমেন্ট বসানো হচ্ছে গো আজম আর নিজামীদের অপরাধে। রাজনীতিবিদদের কাছে অপরাধ-শাস্তি এখন নাট্যমঞ্চের সিরিয়াল নাটকের মত। মুখে যা আসছে তাই বলছেন এবং বিচারের গ্রহণযোগ্যতাকে নিয়ে যাচ্ছেন গোয়ালঘরে। নিজামী মুজাহিদের দল আদলতের রায় নিয়ে এদেশের লাখ লাখ মানুষ হত্যা করেনি, বিবাহের বৈধতা নিয়ে মা-বোনদের ইজ্জতে হাত দেয়নি। ওরা হাটে মাঠে ঘাটে মানুষ মেরেছে, রক্তাক্ত করেছে এ দেশের জনপদ। ফিরিয়ে দেয়া হোক সে দৃশ্য। নিয়ে যাওয়া হোক সে গলিতে যে গলিতে ওরা হায়েনা হয়ে বিচরণ করেছিল। তারপর ঢুকিয়ে দেয়া হোক দুটা করে বুলেট। হয়ত পাশের বটগাছ হতে ভয়ে উড়ে যাবে কটা পাখি। কিন্তু সে পাখিদের পাখায় করে উড়তে থাকবে হাজার হাজার পরিবারের অনেকদিনের কান্না, জমে থাকা হাহাকার আর অক্ষমতার আহাজারী।
আমি যদি জামায়েত ও শিবিরের মত দল গুলোর সাথে যুক্ত থাকতাম দাবি থাকত একটাই, দলকে অপরাধী মুক্ত করা। আদর্শের অনুসারী এ সব দলের ক্ষমতা নির্দিষ্ট কোন পরিবারের কাছে কুক্ষিগত নয়। এক গোলাম আজম অথবা নিজামীর বিদায় দলকে নেত্রীত্ব শূন্য করবেনা। তাহলে কেন এসব অপরাধীদের জন্যে আহাজারী? ৭১’এর খুনিদের বিচার যত দীর্ঘায়িত হবে দল হিসাবে জামায়েত ও শিবির ততই ঘরকুনো হতে বাধ্য থাকবে। এটাই তাদের ভাগ্যের লিখন। দল হিসাবে বেচে থাকতে চাইলে বাকি সবার আগে তাদের নিজদের এগিয়ে আসতে হবে ফাঁসির দাবি নিয়ে। আজ একটা সত্য দিবালোকের মত স্পষ্ট, রাজনীতি ও ৭১’এর খুনিরা এক সাথে চলতে পারেনা। হতে পারে তা আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক এজেন্ডা, কিন্তু এ দাবি গণদাবি, এ তাদের দাবি যাদের মাওলানা আর ওলামায়ে কেরামের দল কুকুর বেড়ালের মত হত্যা করেছিল। এ দাবির সাথে গলা না মেলালে ইতিহাস তথা সভ্যতার কাছে আজীবন অপরাধী হয়ে থাকতে হবে।