ঢাকা, জানুয়ারি ০২ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- ‘আত্মরক্ষার প্রয়োজনে’ দুই দেশের সীমান্ত রক্ষা বাহিনীর সদস্যদের গুলি ছোঁড়ার অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে নয়া দিল্লির সঙ্গে একমত হয়ে এসেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর। নতুন বছরের প্রথম দুই দিনে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর গুলিতে চার বাংলাদেশির প্রাণ হারানোর পর বুধবার সাংবাদিকদের এই তথ্য জানিয়েছেন মন্ত্রী। তিনি বলেছেন, কেবল ‘আত্মরক্ষার প্রয়োজনে’ দুই সীমান্ত বাহিনীকে গুলি করার বিষয়ে নীতিগতভাবে মতৈক্য হয়েছে। “গত মাসে ভারতে গিয়ে সে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে একমত হয়েছি।” (http://www.bdnews24.com/bangla/details.php?cid=2&id=215351&hb=1)
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ভারতীয়দের নিয়মিত হত্যাকাণ্ড নিয়ে যারা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন সংবাদটা তাদের বিভ্রান্ত করতে বাধ্য। এসব খুনের জন্য প্রতিবেশী দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে যারা একক ভাবে দায়ী করছেন তাদের উৎকন্ঠাকেও প্রশ্নের মুখোমুখি করবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে প্রতিবেশী দেশ ভারত দ্বিপক্ষীয় চুক্তির আওতায় সীমান্তে খুন করছে। এবং এ চুক্তি স্বাক্ষর করতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গত মাসে নয়াদিল্লি সফরে গিয়েছিলেন। চুক্তিতে বলা আছে আত্মরক্ষার খাতিরে উভ্য় পক্ষ গুলি ছুড়তে পারবে। প্রশ্ন উঠবে, ভারতীয় সীমান্ত রক্ষা বাহিনীর জন্য আত্মরক্ষার শব্দের ডেফিনিশিন কি? নতুন বছরের প্রথম দুই দিনে চারজনকে হত্যা করেছে ভারতীয়রা। এখানে আত্মরক্ষার অধ্যায়টা কোথায় স্থান পাবে এর উত্তর জানতে আমাদের বোধহয় চুক্তির বিস্তারিত জানতে হবে। আমরা যতদূর জানি সীমান্তে যাদের খুন করা হয় তাদের সবাই প্রায় গরু ব্যাবসায়ী। অবৈধ পথে গরু পারাপারের সাথে দুই দেশের সীমান্ত রক্ষীরা ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। এসব বাহিনীর অনেক সদস্য টু দ্যা পয়েন্টে নিয়োগ পাওয়ার জন্য সাড়া জীবন অপেক্ষায় থাকেন। যখন পান দিনকে রাত বানিয়ে দুহাত ভরে আয় করেন। বলাই বাহুল্য এসব আয়ের সবটাই অবৈধ। হত্যাকাণ্ডের মূল কারণও আয়ের বখরা নিয়ে ব্যবসায়ীদের সাথে মতদ্বৈততা। চোরাকারবার হতে প্রাপ্ত কোটি কোটি টাকার অলিখিত আয়ের উপর কেবল সীমান্ত রক্ষা বাহিনীর সদ্যসরা নির্ভরশীল এমনটা বলতে অনেকের প্রতি অন্যায় করা হবে। বাংলাদেশের বেলায় এসব অবৈধ আয়ের বিশাল একটা অংক পাড়ি জমায় সুদূর ঢাকা শহরে। দুই বাহিনীর অনেক রুই কাতলাদের ভাগ্য লেখা হয় ব্যবসায়ীদের লাল রক্তে। ভারতীয় হত্যাযজ্ঞকে বৈধতা দিতে চাইলে আমাদের বিশ্বাস করতে হবে কোন এক অলৌকিক ক্ষমতা বলে রাতের আধারে পাচারকৃত গরুদের শিং হতে গোলাবারুদ বিচ্ছুরিত হতে থাকে, যা ভারতীয়দের আত্মরক্ষায় যেতে বাধ্য করে। এখানেও প্রশ্ন উঠবে, শিং গজায় গরুদের অথচ হত্যা করা হয় ব্যবসায়ীদের। আশাকরি মন্ত্রী উদ্দিন খান আলমগীরের কাছে এসব প্রশ্নের উত্তর তৈরী আছে।