পত্রিকার প্রথম পাতায় লোকটার চেহারা দেখলে কিছু একটা করতে বাধ্য হই। হয় লেখালেখি অথবা কোথাও কোন অশ্লীল মন্তব্য করে ভেতরের পশুটিকে বাইরে আনতে হয়। তা না করলে অস্বস্তি লাগে, অস্থিরতা পেয়ে বসে এবং এক ধরণের ডিপ্রেশনে ভুগতে শুরু করি। বলছিলাম সুরঞ্জিত বাবুর কথা। মান ও হুশের সমন্বয়েই নাকি মানুষ। কেবল ধর্ম নয়, সভ্যতার সংজ্ঞাও সৃষ্টির সেরা জীবকে এভাবে বর্ণনা করে। এ দুটো আছে বলেই আমরা পশুর চাইতে আলাদা এবং ভাল মন্দ, ন্যায় অন্যায়ের পার্থক্য বুঝতে পারি। সুরঞ্জিত বাবু আসলেই কি রক্ত মাংসের মানুষ? আমার কেন জানি সন্দেহ হয়। চোখ ও মুখের চামড়া কতটা পাতলা হলে দুই হাত, দুই পা ওয়ালা রক্ত মাংসের একজন মানুষ এতটা লজ্জাহীন হতে পারে! জামায়েত-হেফাজতকে আখেরি মোকাবেলার আহ্বান জানিয়ে তুমুল এক বক্তব্য দিয়েছেন তিনি। ’ঠিকানা বাংলাদেশ’ নামক সংগঠনের আলোচনায় সভায় ইনস্টিটিউট অফ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের মিলনায়তনে বসে আহ্বান জানিয়েছেন আগামী নির্বাচনে মৌলবাদী শক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মোকাবেলা করার। জানিনা ’ঠিকানা বাংলাদেশ’ সংগঠনের নেত্রীত্বে কারা এবং সুরঞ্জিত বাবুর মত ব্যক্তিকে কেন তাদের সভায় প্রধান বক্তা বানাতে হয়। দুর্মুখদের ভাষ্য সুরঞ্জিত বাবু নিজেই অর্থায়ন করে থাকেন নিজের সভা। হোক তা ’ঠিকানা বাংলাদেশ’ অথবা ’কুদ্দুস মিয়ার কুকুর প্রেম’ নাটকের প্রিমিয়াম শো। নির্বাচনে বিএনপি আসবে কি আসবেনা এ নিয়ে উনার নাকি মাথা ব্যথা নেই। তিনি নাকি দেশের অসাম্প্রদায়িক সংখ্যাগুরু শক্তির প্রতিনিধি এবং নির্বাচনে এ শক্তিরই জয় হবে বলে দাবি করছেন। এসব রাজনৈতিক বক্তব্যের জবাব রাজনীতির ভাষা ব্যবহার করেই দেয়া উচিৎ। কিন্তু সুরঞ্জিত বাবু পরিচয় এ মুহূর্তে একজন রাজনীতিবিদ হিসাবে নয়, বরং বমাল ধরা পরা চোর হিসাবে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস ’ঠিকানা বাংলাদেশ’ও একদল চোরের মেলা। সুরঞ্জিত বাবুর মত দাগি চোরকে মেলার মঞ্চে বসানোর কারণ বোধহয় আয়নায় নিজদের প্রতিচ্ছবি দেখা এবং এ নিয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তোলা। বাংলাদেশ এখন চোরের স্বর্গরাজ্য। সুরঞ্জিত চোরই একমাত্র চোর নয়। রাষ্ট্রীয় সম্পদ চুরি করার হরিলুটে রাজনীতিবিদদের পাশাপাশি জড়ো হয়েছেন দেশের আমলা হতে শুরু করে প্রায় সবাই। কিন্তু হাতেনাতে ধরা পরা চোরের সংখ্যা এখানে হাতেগোনা। আমাদের সৌভাগ্য এবং সুরঞ্জিত চোরার দুর্ভাগ্য যে তিনিই একমাত্র রাজনীতিবিদ যিনি হাতেনাতে ধরা পরেছেন। বিশ্ব চুরির ইতিহাসে এমন কোন ইতিহাস নেই যে ধরা পরার পরও চোর মন্ত্রী হিসাবে বহাল থাকে। সুরঞ্জিত চোর তার অন্যতম ব্যতিক্রম।
আওয়ামী লীগ তার সাম্প্রতিক নির্বাচনী ব্যর্থতা কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছে। সুদূর আমেরিকার হতে ডেকে এনে খোদ প্রধানমন্ত্রীর সন্তানকে মাঠে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সুরঞ্জিত চোরকে মাঠে নামিয়ে আওয়ামী লীগ কোন ভোটারদের আকৃষ্ট করতে চাইছে তা স্পষ্ট নয়। একজন চোরের পরিচয় কেবল চোরই, তার কোন রাজনৈতিক পরিচয় থাকতে পারেনা। সুরঞ্জিত বাবু একজন চোর, জামায়েত-হেফাজত গান গেয়ে তিনি যতই সাধু সাজার চেষ্টা করেন না আমার মত কোটি কোটি স্বদেশির চোখে আজীবন তিনি চোর হিসাবেই বেচে থাকবেন। চলমান রাজনৈতিক প্রক্রিয়া দেশের সাধারণ মানুষের জন্য, রাষ্ট্রীয় চোরদের জন্য নয়। জাতি হিসাবে এটা আমাদের দুর্ভাগ্য যে একজন চোরের ঠাঁই জেলখানায় না হয়ে ইনস্টিটিউট অফ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের মিলনায়তনে হয়।
একটা কুকুর পালার ইচ্ছা অনেকদিনের। এতদিন এপার্টমেন্টে থাকতাম তাই সুযোগ ছিলনা মনোবাসনা পূর্ণ করার। এতদিন পর নিজের একটা বাড়ি হয়েছে। কুকুর পালার মত ব্যকইয়ার্ডও আছে। ভাবছি মেয়েটা একটু বড় হলে একটা কুকুরের জন্য খুলে দেব বাড়ির দুয়ার। কথা দিচ্ছি তার নাম রাখবো সুরঞ্জিত। রাষ্ট্র ও সরকারী অন্যায়, অবিচার ও সন্ত্রাসের কাছে জিম্মি ও অসহায় একজন সাধারণ বাংলাদেশির প্রতিবাদের এটাই হতে পারে উপযুক্ত ভাষা। আপনাদের বাড়ির আঙ্গিনায় অথবা গলির রাস্তায় বেওয়ারিশ কুকুর বিড়াল থাকলে তাদেরও একটা নাম দিন। সুরঞ্জিত চোরের নামটা বিবেচনায় রাখতে অনুরোধ করবো।