গই গেরামে একখান মূল্যবান কতা মুখে মুখে ঘুইরা বেড়ায়। হেরা কয়, যেই গেরামে যত বেশী মসজিদ হেই গেরামে তত বেশি পাপ। আমি কই, ওয়াসতাগফেরুল্লাহ বিন মোহম্মদ জাফরুল্লাহ, এইডা তুমি কি কইলা? হেয় কয়, পাপের উপর রড সিমেন্ট লাগাইতে মসজিদ ভেরি এপেকটিব। মামা, চুরি কইরা দুনিয়া গাং করেন, মাগর হেই চুরির মাল দিয়া আপনে যদি মোক্কা-মদিনায় নবীজির মাজার জেয়ারত করেন এবং নিজ মায়ের নামে গেরামে একখান আলীশান মজিদ বানান তয় খেলা এক্কেরে ফাইনাল। কোয়াটার আর সেমি খেলার পিলার পাইবেন না। আমি কই, লা হাওলা অয়ালা কুয়াতা...হে নালায়েক, ধর্ম লইয়া এতবড় বেয়াদপি! দূর হ! কি যেন ভাবতে ভাবতে ওয়াস্তাগফেরুল্লাহ বিন মহম্মদ জাফরুল্লাহ রনে ভঙ্গে দিয়া হাতে একখান বদনা লইয়া টাটকির দিকে রওয়ানা দিল। আমার অবশ্য বুঝতে অসিবিধা হয়নাই অকস্মাৎ গাত্রোত্থানের এই হেতু। বদনা টাটকি মাবুদের লীলাখেলা, এইসব লইয়্যা ফিকির না করাই উত্তম।
আমিও হাটা শুরু করলাম এবং হাটতে হাটতে একই পথে চেতনা বিন মহম্মদ মজিবর খিলজির মোলাকাত হইয়্যা গেল। আমি জিগাই, আরে আরে বাবা চেতনা এই বিয়ান বেলা লেফট রাইট কইরা কই যাইতাছ? হেয় উত্তর দেয়, উত্তর বিলে চেতনার মজমা বইছে। হাজির হইতে হইব। শোনা যাইতেছে মজমা শুনিয়া বিলের তাবৎ মাছ পর্যন্ত পাড়ে উইঠা পরছে। আমি জিগাই, তা অগভীর বিলকে গভীর করার টেন্ডারটা কিডা পাইছে, তুমি না ইতর আলী দফাদার? চেতনা বিন মহম্মদ কয়, কিয়ের মধ্যে কি, হুটকি মাছে ঘি! আপনে বড়ই দুষ্টু। মানী লোকের মান রাখতে জানেন না। যখন তখন ইজ্জতে হাত দেন। আপনের হেদায়েত দরকার। বালুর মাঠে কাইল চেতনার নবী কেমি রহমান চাতাল (রাঃ) আসতাছেন। মূল্যবান বয়ান হইব। আইসেন। বিশেষ উপকার পাইবেন। আমি জিগাই, আরে বালুর মাঠের বালু ভরাট লইয়া চাতাল (রা) আর ইতর আলী দফাদারের মধ্যে যেই মারামারি কাটাকাটি সেইটা কি শেষ হয়িছে? মুখ সামলাইয়া কতা কইয়েন মামা। চাতাল (রাঃ) অপমান মানে ৩০ লাখ শহীদের অপমান। মুক্তিযুদ্ধের অপমান। হেরে অপমান কইরা দিন দুনিয়ায় দোকানদারী চলবো না। সাবধান হইয়া যান। ভয়ে আমার সমস্ত শরীর ঠাস ঠাস কইরা কাপতে শুরু করল।
শেখ পাড়ার বাঁক হইতে বালু ভর্তি একখান টেরাক আসতে দেখিয়া আমি তাল গাছের মত লম্বা আর তেজপাতার মত পাতলা হইয়া গেলাম। কওন তো যায়না, যা দিনকাল পরছে! টেরাকের পিছে থানার ওসি সাবকে দেখলাম মোডর সাইকেলে চইড়া কই যেন যাইতাছেন। আমি সেলাম দিলাম। তিনি সেলাম নিলেন। জিগাইলেন মজিদ মিয়ার বাড়ির মজমায় যামু কিনা। খুব বড় মজমা। চেতনার মজমা। গতরাইতে শুরু হইছে। যারা যারা আগের রাইতে হাজির ছিল সবার ছোট মিয়া নাকি কারনে অকারনে নাচানাচি করছে। চাইরদিকে হৈ চৈ পইরা গেছে। হেই হৈ চৈ থামাইতে যাইতাছি। আমি জিগাইলাম, বসুর হাটে ধরা পরা ইন্ডিয়ান শাড়ির চালানডার কি অইল? মোডর সাইকেলের ভট ভট আওয়াযে কিছুই শুনিতে পাইলাম না। শুধু একটা শব্দ কানে আইল...জয়বাংলা।