সাত খুনের আসামী তিনি। এবং প্রথম শ্রেণীর বন্দী। আছেন ঢাকার কেন্দ্রীয় কারগারের চম্পাকলি নামক ভিআইপি সেলে। কারাগারে টিভি, ফ্রিজ, রঙ্গিন টেলিভিশন, পানি পরিশোধনের দামি ফিলটার, এয়ারকুলার সহ আধুনিক সুযোগ সুবিধা নিয়ে আয়েশি জীবন কাটাচ্ছেন। অপরাধের দায় স্বীকার করে জবানবন্দীও দিয়েছেন ইতিমধ্যে। তাই ’প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত অপরাধী নন’ অপরাধ, শাস্তি ও বিচার প্রক্রিয়ার এ চিরন্তন সত্য তার বেলায় প্রযোজ্য নয়। পাঠকরা আশাকরি ইতিমধ্যে বুঝে নিয়েছেন কার কথা বলছি। হ্যাঁ, র্যাব নামক কিলার ফর হায়ার গেষ্টাপো বাহিনীর অধিনায়ক তারেক সাইদ মোহম্মদ হচ্ছেন সে ভাগ্যবান অপরাধী। তবে এটাই এই কুত্তার বাচ্চার একমাত্র পরিচয় নয়। এই কুত্তার বাচ্চা ৫ই জানুয়ারির কমেডি নির্বাচনের স্বঘোষিত সংসদ সদস্য এবং তার মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার জামাই। কেবল নারায়ণগঞ্জের সাত খুনই নয়, কুমিল্লা সহ আরও অনেক জেলায় দায়িত্ব পালন কালে টাকার বিনিময়ে তিনি মানুষ খুন করেছেন। বলা হয় খুন সংক্রান্ত আগ্রহী গ্রাহকদের যোগার করার দায়িত্বে ছিল মন্ত্রিপুত্র দিপু চৌধুরী। বিশাল অংকের অর্থের বিনিময়ে ছেলে, মেয়ের জামাই এবং মন্ত্রীর যৌথ প্রযোজনায় মঞ্চস্থ হত শতাব্দীর এসব কুৎসিত ও হৃদয়বিদারক হত্যাকাণ্ড।
জাতি হিসাবে আমরা কি এতটাই পঙ্গু, এতটাই ঠুনকো সে একজন আত্ম-স্বীকৃত খুনিকে প্রথম শ্রেণীর সুবিধা দিয়ে লালন পালন করতে হবে? কেবল মন্ত্রীর জামাই হওয়ার সুবাদেই কি সিরিয়াল কিলার, নরপশু, পিশাচ এই আদমকে শত বর্ষের স্বীকৃত অপরাধ ও শাস্তির ধারা বদলে দিয়ে আরাম-আয়েশে রাখার দায়বদ্ধতা দেখাতে হবে? নাকি এটাও আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ঋণ পরিশোধের অংশ? কেউ যদি প্রশ্ন তোলে এমন মুক্তিযুদ্ধের আদৌ কি আমাদের প্রয়োজন ছিল তাহলে খুব কি অন্যায় হবে? মুক্তি! কিসের মুক্তি? আইয়ুব, ইয়াহিয়া আর টিক্কা খানদের খপ্পর হতে বের হয়ে মায়া, দিপু আর সৈয়দ তারেকদের হাতে শীতলক্ষ্যার শীতল পানিতে লাশ হওয়ার মুক্তি?