জাতীয় দলের ক্রিকেটার লিটন দাসের 'ভিক্টিম অব ইনোসেন্স' পর্বটা বেশ আগ্রহ নিয়ে পড়লাম। এ মুহূর্তে দেশে তেমন কোন সমস্যা নেই, তাই সামাজিক মাধ্যমকে লাগছে অনেকটা এতিমখানার মত। লিটন দাসের মত মাইনর ফ্যাক্টরের স্ট্যাটাস পড়ার এটাই বোধহয় উপযুক্ত সময়। বেচারার বয়স তেমন কিছু নয়, তাই কি লিখল তা নিয়ে গবেষণা না করাটাই ভাল। তবে যেহেতু ঘটনায় ১৭ কোটি স্বদেশীকে জড়ানো হয়েছে তাই তার একজন হিসাবে পালটা মন্তব্য করা বোধহয় অন্যায় কিছু হবেনা। শারদীয় পূজা উপলক্ষে দেশের একজন উদীয়মান সেলিব্রেটি সামাজিক মাধ্যমে সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। অনেকে পালটা শুভেচ্ছা জানিয়ে আলোকিত করেছে্ন হিন্দু সম্প্রদায়ের এই উৎসবকে। দু'একজন অবশ্য গতানুগতিক পথে না গিয়ে গেছেন বাঁকা পথে। তাদেরই একজন পূজার মূর্তিকে অবৈজ্ঞানিক ও কাল্পনিক আখ্যা দিয়ে এ ধরনের স্ট্যাটাস দেয়া হতে বিরত থাকার অনুরোধ করেছেন। উত্তরে লিটন বাবু ১৭ কোটি বাংলাদেশির কাফেলা হতে ১৭ হাজার সভ্য জন খুঁজে পাওয়া যাবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। আপত্তিটা এখানেই। এই লিটন দাস যখন দেশের জার্সি গায়ে মাঠের ২২ গজকে আন্দোলিত করে সাথে আন্দোলিত হয় ১৭ কোটি জনগণ। লিটন দাসের হিসাব মতে ধরে নিতে হবে এই ১৭ কোটি ক্রিকেট প্রেমিকের প্রায় সবাই অসভ্য। বাস্তবতা হচ্ছে কথিত অসভ্যদের ক্রিকেট পাগলামির জন্যই কিন্তু লিটন দাস আজ সেলিব্রেটি। তাদের অনেকে গাঁটের পয়সা খরচ করে মাঠে যায়। আর সে পয়সায় লিটন দাসের মত অপ্রাপ্তবয়স্ক, অপরিপক্ব ক্রিকেটারদের পকেটে লাখ টাকা জমা হয়। সোশ্যাল মিডিয়াতে নিজের বক্তব্য প্রকাশের আগে এসব উদীয়মান প্রতিভাদের আরও যত্নবান হওয়া বাঞ্ছনীয়। কারণ এই এক মন্তব্যের কারণে কেবল নিজের সেলিব্রেটি স্ট্যাটাসই হারাতে পারেন না, বরং ক্রিকেট ক্যারিয়ারেরও টানতে পারেন দুঃখজনক ইতি।
দেশের গণতন্ত্র এখন গোরস্তান-মুখী। এমন একটা চরম অনিশ্চয়তার সময় সামাজিক মাধ্যম গুলো আপন মহিমায় মানব সভ্যতার অন্যতম স্তম্ভ গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখছে। এই মাধ্যমে এমন কোন ধর্ম, বর্ণ, কর্ম নেই যা নিয়ে আলোচনা সমালোচনা হচ্ছেনা। ইসলাম ধর্মের গোঁড়া নিয়ে টান দিলে যা হয় মুক্তমনা, একই টানাটানি হিন্দু ধর্মের বেলায় হয়ে যায় সাম্প্রদায়িকতা। ব্যপারটা কি স্ববিরোধী হয়ে গেলনা?