বিচারের লম্বা হাত

Submitted by WatchDog on Sunday, November 8, 2015

Rojon

রাজন ও রাকিব হত্যাকাণ্ডের এক্সপ্রেস ট্রায়াল ও তার রায় দেশীয় বিচার ব্যবস্থাকে আলোকিত করার চাইতে বরং এর অন্ধকার দিকটাই ফুটিয়ে তোলে বেশি ( জনমত ও দাবির মুখে ত্বরান্বিত বিচার)। আমাদের বিচারের গতি প্রকৃতির অনেক ফ্যাক্টর। রাজনৈতিক পরিচয় ও নগদ নারায়ণ এর অন্যতম। হিসাব কষলে দেখা যাবে নিম্ন আদালতের বিচারক ও দুর্নীতির ভারে পচে যাওয়া পুলিশ বাহিনীর মাঝে আসলে মৌলিক কোন তফাৎ নেই। আদালত পাড়ায় না ঘুরলে বুঝা যাবেনা দেশিয় পুলিশ ও বিচারক আসলে ক্রাইম সিন্ডিকেটের তালিকাবদ্ধ সদস্য এবং একে অপরের পরিপূরক। নিম্ন আদালত ফাঁসির রায় দিয়েছে, তা মরুভূমিতে এক ফোঁটা বৃষ্টি কেবল। বিচার ব্যবস্থার সবকটা সিঁড়ি ডিঙ্গিয়ে বাংলাদেশের কজন অরাজনৈতিক আসামিকে ফাঁসির মঞ্চে নেয়া হয় তার পরিসংখ্যান কেউ রাখে না। কারণ খুব সোজা। সময় গড়ানোর সাথে মানুষের শোক ও আবেগ থিতিয়ে আসে। যে হত্যাকাণ্ড গোটা দেশকে উদ্বেলিত করে তা-ও চাপা পরে যায় সময়ের চাকায়। আর তখনই থলে হতে বেরিয়ে আসে আসল বেড়াল। আদালত ও পুলিশ সিন্ডিকেটের খোলা পকেটে ধরা দেয় আসামীরা। লেনদেন হয় কাড়ি কাড়ি টাকা। রায়ের বিরুদ্ধে আপিল হয়। এবং সে আপিলে বদলে যায় রায়ের ধারাপাত। নগদ নারায়ণ গিলোটিনে দেয় ফাঁসির আদেশ। এসব খবর অবশ্য পত্রিকার শিরোনাম হয়না। ভেতরের পাতার ছোট্ট খবর হয়ে তলিয়ে যায় কালের চক্রে। আর যদি রাজনীতির লম্বা হাতকে আদালত পর্যন্ত আনা যায় কোন এক সুন্দর সকালে দেখা যায় আসামীরা বেরিয় আসছে। এবং জেলগেটে তাদের বরন করা হচ্ছে ফুলের তোড়া দিয়ে।

এই দুই হত্যাকাণ্ডের বিচারের রায় কোন বন্দরে গিয়ে ঠেকবে সময়ই তা বলে দেবে, তবে গোটা জাতিকে উদ্বুদ্ধ করে আইন ও বিচার ব্যবস্থার অনেকের 'প্রাপ্য হক' বঞ্চিত করায় যার ভূমিকা ছিল চোখে পড়ার মত তা হল এই সোশ্যাল মিডিয়া। নব্য এই মিডিয়া এখনো অগোছালো.. যেদিন গুছানো শক্তি হয়ে আবির্ভূত হতে পারবে বানর রাজ্যের অনেক কিছুই যে টলিয়ে দিতে পারবে তার আগাম ঘন্টাই এই দুই কিশোরের বিচার।

ভালো লাগলে শেয়ার করুন