গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর, দহবন্দ, বেলকা, হরিপুর, চন্ডিপুর, কাপাশিয়া ও শ্রীপুর ইউনিয়নের লাখ লাখ জনগণ এখন প্রতিবেশী ভারতের 'শত্রু'। যে তিস্তার পার ঘিরে তাদের জীবন বেড়ে উঠেছিল থেমে গেছে সে জীবনের স্পন্দন। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পলিতে খরস্রোতা তিস্তা পরিণত হয়েছে মৃত নালায়। খননের নামে যা বরাদ্দ তার সবটাই লুটে নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। নদীর বুকচীরে জেগে উঠছে হাজার হাজার একর জমি। আর তাতে ভাগ্য ফিরছে ক্ষমতার জরায়ুতে বেড়ে উঠা একদল টাউট বাটপারের। ভরা নদীতে যারা নৌকা চালিয়ে ও মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করত সেই নৌ-শ্রমিক ও জেলেরা আজ বেকার। মাছ ধরার উপকরণ বিক্রি করে বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছে অন্য পেশা। দ্বারস্থ হচ্ছে দাদন ব্যবসায়ী ও এনজিওদের দুয়ারে। চড়া সুদে ধার নিয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছে। অনেকে নাম লেখাচ্ছে ভিক্ষাবৃত্তিতে । অথচ একসময় তিস্তা পাড়ে সব ছিল। ছিল কোলাহল মূখর জীবন। সচ্ছল না হলেও জীবন নিয়ে কারও তেমন অভিযোগ ছিলনা। কিন্তু চেতনার চড়া সুদে কেনা আমাদের স্বাধীনতার মূল্য শোধ করতে গিয়ে তিস্তা-পাড়ের মানুষের মত গোটা বাংলাদেশই এখন সর্বস্বান্ত। নদী মরে যাচ্ছে বললে নিশ্চয় ভুল হবে... নদীকে মারা হচ্ছে। মারছে তারা যাদের শত্রুতা করলে দেশেরও শত্রুতা হয়।
কথিত আছে প্রতিবেশী দেশের প্রভুরা নাকি টাইম টু টাইম এভ্যালুয়েট করে তাদের নিয়োগ দেয়া দাসদের। কথা ও কাজে যারা তাদের স্বার্থের প্রতিফলন ঘটায় না তাদের ছুড়ে ফেলতে বাধ্য হয়। হয়ত আমুর হোসেন আমুর আমলনামা হাল-নাগাদ করার সময় হয়েছিল। প্রভুভক্তির মূল্য শোধ করতেই হয়ত বাধ্য হয়েছেন এমন কথা বলতে। কারণ আমার আপনার চাইতে জনাব আমু হোসেনের ভাল করে জানার কথা্, নালা নয়, তিস্তা ছিল একটি নদীর নাম...এবং এ নদীর শত্রুরাই দেশের আসল শত্রু।