স্থানীয় সরকার নির্বাচনে নৌকার ভূমিধ্বস বিজয়ের প্লাটফর্ম বিশ্লেষণ করলে সহজেই অনুমান করা যায় শেখ হাসিনার নেত্রীত্বে আওয়ামী লীগ আরও ৫০ বছর ক্ষমতায় থাকতে যাচ্ছে। দলীয় মুখপাত্রদের কথাবার্তা আমলে নিলে মনে করার যথেষ্ট কারণ আছে দেশকে মধ্য আয়ের গন্ডি হতে কথিত উন্নত আয়ের গন্ডিতে না নেয়া পর্যন্ত ক্ষমতা ছাড়ছেন না জনাবা শেখ হাসিনা ও শেখ বংশের বাকি রাজকুমার-কুমারীরা। স্বভাবতই আমরা ধরে নিতে পারি সামনের ৫০ বছর সমুদ্র বিজয়ের মত আরও একাধিক বিজয়ের মাইলস্টোন অপেক্ষা করছে জাতির জন্যে। যার অন্যতম হতে পারে রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। রাশিয়ার সহযোগিতায় এমন একটা প্রকল্পের আসল উদ্দেশ্য কি দেশের বিদ্যুৎ ঘাটতি কমানো, না আত্মীয়-স্বজন সহ দলীয় নেত্রীবৃন্দের পকেট স্ফীত করা তা পরিষ্কার হতে হয়ত একটু সময় লাগবে। তবে অতীত অভিজ্ঞতা হতে আমরা বলতে পারি হাজার হাজার কোটি টাকা ডান-হাত বাম-হাত হওয়ার সম্ভাবনা হতেই প্রকল্পের চলাফেরা। আমাদের মত রাশিয়াও তৃতীয় বিশ্বের একটি উন্নয়নশীল দেশ। মুখে, চেহারায় ও কাগজে কলমে সুপার পাওয়ায়ের তকমা থাকলেও ভেতরের খবর যারা রাখে তাদের কাছে রাশিয়া স্রেফ উন্নত ভার্সনে আমাদেরই কার্বন কপি। বিশেষ করে জোর করে ক্ষমতা কুক্ষিগত করা ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাট করার মত সূক্ষ্ম কাজে। সেই রাশিয়ার সহযোগিতায় সমুদ্র বিজয়ের মত নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশের নব্য রাজতন্ত্র, রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র! খবরটা পড়েই একদল মগজ-কানা দলীয় কিন্তা-কুন্তির দল উল্লাস শুরু করে দিয়েছে। অবৈধ রুটি-হালুয়ার জারজ মশা-মাছির দল ভন ভন করছে প্রকল্পের আশপাশে। দেশের খেটে খাওয়া কোটি কোটি সাধারণ মানুষ হয়ত কোনদিনও জানবে না কোন ভয়ংকর মৃত্যু-কুপে তাদের ঠেলে দেয়া হচ্ছে। চেরনোবিল অথবা ফুকুশিমা তাদের জন্য দিল্লি অনেক দুরের মতই রূপকথার গল্প। তাদের জানা থাকার কথা নয় অণু পরমাণুর ভয়াবহতা। হয়ত একদিন সকালে ঘুম হতে উঠে দেখবে তাদের মাথার চুল উঠে যাচ্ছে। চামড়া কুচকে যাচ্ছে। চেহারা বিকৃত হয়ে যাচ্ছে। সন্তান জন্ম নিচ্ছে শরীরে ক্যান্সার নিয়ে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধেয়ে যাচ্ছে স্থায়ী বিকলাঙ্গ ও পঙ্গুত্বের দিকে। যেদিন বুঝতে পারবে তাদের সর্বনাশের ভয়াবহতা, ততদিনে রাজা-রানী, রাজপুত্র-রাজকুমারীর দল পালিয়ে যাবে নিরাপদ আশ্রয়ে।
পৃথিবীর সবচাইতে জনবহুল ও পা হতে মাথা পর্যন্ত চোর ও চুরির রাজত্বে পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নেহাতই আত্মহত্যা। দুর্ঘটনা দুরে থাক, কেবল টক্সিক ওয়েস্টই জাতির অস্তিত্বকে পৃথিবীর মানচিত্র হতে মুছে দেয়ার জন্য যথেষ্ট। জাপান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া সহ পৃথিবীর উন্নত দেশ গুলো যেখানে পিছিয়ে আসছে সেখানে আমরা, কেবল জয়ের তিলক কপালে লাগানোর লালসায় এগিয়ে যাচ্ছি গণহত্যার দিকে। জাতির অস্তিত্বকে ইনস্যুর করতে কিছু প্রস্তাব রাখছি যার মেরিট এ মুহূর্তে হাস্যকর মনে হতে পারে। কিন্তু যেদিন রূপপুর সহ বাংলাদেশের ঘরে ঘরে কান্নার রোল উঠবে সেদিন বুঝতে সহজ হবে এসব প্রস্তাবের যথার্ততাঃ
- রাজতন্ত্রের রাজপ্রাসাদ পাবনার রূপপুর ও হেমায়েতপুরের মাঝামাঝি কোন এক জায়গায় সরিয়ে নিতে হবে
- রাজকুমার ও রাজকুমারীদের তাদের ভিনদেশি স্ত্রী-স্বামী সহ স্থায়ীভাবে ঐ রাজপ্রাসাদে বাস করার আইন করতে হবে