গেল শতাব্দীর শেষ দিকের কথা। হবে হয়ত ৯০ দশকের শুরুর দিকে। অস্ট্রেলিয়ায় অবৈধ অভিবাসীদের জন্য সহসাই একটা ভাল খবর জন্ম দেয় সে দেশের সরকার। ৮১৬ ভিসা ক্যাটাগরিতে কোয়ালিফাইড কিছু অভিবাসীকে বৈধ হওয়ার সুযোগ দেয়া হয়। কোয়ালিফিকেশনের তালিকায় আহামরি এমন কিছু শর্ত জুড়ে দেয়া হয়নি যার কারণে সে দেশে অবস্থানরত শত শত বাংলাদেশিদের আবেদনে অসুবিধা ছিল। সাজ সাজ রব পরে গেল দেশিয় কম্যুনিটিতে। প্রসেস শুরু হয় উকিল পছন্দের মাধ্যমে। পছন্দের তালিকায় বড় ব্যবধানে এগিয়ে থাকলেন বিশিষ্ট ইমিগ্রেশন আইনজীবী জনাব ডেভিড বিটল (সিডনি)। শর্ত সমূহের অন্যতম ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েট এবং স্ব স্ব পেশায় যথেষ্ট অভিজ্ঞতা। তো রাতারাতি বাংলাদেশিদের সবাই কোন এক মন্ত্রবলে গ্রাজুয়েট বনে গেল এবং অভিজ্ঞতার ঝাঁপি ওজনদার করতে স্থানীয় বাংলাদেশি ও ভারতীয় রেস্টুরেন্ট হতে সেফ অভিজ্ঞতার সনদ উপস্থাপন করতে সচেষ্ট হয়ে পড়লো। প্রায় সবাই দরখাস্ত জমা দিয়ে অপেক্ষার প্রহর গুনতে শুরু করলো। দিন যায়, মাস ঘুরে বছর আসে এবং কোন এক সুন্দর সকালে হাজির হল সে মাহেন্দ্রক্ষণ। ইন্টারভিউতে ডাকা হল ভাগ্যবানদের। ইন্টারভিউ যতই এগুতে থাকলো একটা বাস্তবতা লক্ষ্য করে কর্তৃপক্ষ অবাক হল... দরখাস্তকারীদের সবাই গ্রাজুয়েট! কেমন যেন সন্দেহ হল এবং তালিকা সংক্ষিপ্ত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা সীমিত করে দিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ হাতে গোনা ২/১ বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাজুয়েটদেরই কেবল বিবেচনা করার আইন করা হল। এবার দরখাস্তকারীদের স্ব স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হতে সনদপত্র জমা দিতে অণুরোধ করা হল। আবারও অবাক হল কর্তৃপক্ষ, দেখা গেল আবেদনকারীদের সবাই ঐ সীমিত সংখ্যার বিশ্ববিদ্যালয়েরই গ্রাজুয়েট। বদলে গেল দৃশ্যপট। দরখাস্তকারীদের আবেদনপত্র ঢাকাস্থ হাইকমিশনের মাধ্যমে যাচাই বাছাই করার সিদ্ধান্ত নিলো। এখানেই উন্মোচিত হল গ্রাজুয়েটদের আসল চিত্র। দেখা গেল অনেকেই স্রেফ ভুয়া! বাদ গেল ভুয়ার কাফেলা। হতাশ হল আবেদনকারীরা... হতাশ হলেন ডেভিড বিটল। কিন্তু এ হতাশার মাঝেও জন্ম নিলো নতুন আশা, বাজারে রটানো হল যারা বাদ পরেছে তাদের কেউ যদি সমকামী হিসাবে প্রমাণ করতে পারে তাহলে নতুন ক্যাটাগরিতে বিবেচনা করা হবে। বলাই বাহুল্য জনাব বিটল নিজেই ছিলেন সমকামী। অসফল ২/১ জন অভিযোগ করলো এ ক্যাটাগরিতে আবেদনের অন্যতম শর্ত হচ্ছে ডেভিড বিটলের শয্যাসংগী হওয়া। অবশ্য এর সত্যতা কোনদিন যাচাই করা যায়নি। তথ্যটা কর্তৃপক্ষের কাছে পৌছতেও সময় লাগেনি। যেই কথা সেই কাজ...এবার কর্তৃপক্ষ নতুন শর্ত নিয়ে হাজির হল... সমকামীদের পশ্চাৎ-দেশ পরীক্ষা। ভড়কে গেল স্বদেশী গ্রাজুয়েটদের অনেকে। এ যাত্রায় ডেভিড বিটল তার গ্রাহকদের কোন কৌশল নিয়ে এগুতে বলেছিলেন তা জান নেই। অস্ট্রেলিয়ার পালা শেষ করে ইউএসেতে পাড়ি জমানোর সময় হয়েছিল আমার।
দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নাকি ফুলে ফেঁপে উপচে পরছে। এক কথায় গোয়াইন স্টক, যা ঠাঁই দেয়ার মত যথেষ্ট জায়গা নাকি নেই রিজার্ভ ভল্টে। ন্যায়-অন্যায়, ভাল-মন্দ, পাপ-পুণ্যকে জলাঞ্জলি দিয়ে বিদেশে স্থায়ী হওয়ার ধান্ধা করছি আমরা। তার জন্যে ডেভিড বিটলদের শিকার হতেও অস্বীকার করছিনা। এমনকি লুকিয়ে উড়োজাহাজের পাখায় চড়েও পাড়ি দেয়ার মিশন হাতে নিচ্ছি। সাহারা মরুভূমির দুর্গম পথ, লোহিত সাগরের উত্তাল ঢেউ, ট্রাকের রিফ্রেজিরেটর...কোন কিছুই আমাদের বাধা হচ্ছেনা। আমরা রাস্তা খুঁজছি দেশ হতে পালানোর। তো ইদানীং দেশের কথিত মুক্তমনারা সে পথ মাড়ানোর নতুন রুট আবিষ্কার করেছেন, যা সুবিবেচনার দাবি রাখে... ধর্মের বিরুদ্ধে খিস্তি এবং উন্মুক্ত যৌন সুড়সুড়ি। বলাই বাহুল্য ডেসটিনেশন জার্মানি। সম্প্রতি এক মুক্তমনা কপোত কপোতী জার্মানি হতে আমাদের এন্টারটেইন করেছেন চুম্বনের ছবি ছাপিয়ে। চুম্বনের মহিলা পার্টনার একধাপ এগিয়ে রঙ্গরস করেছেন এই বলে চুম্বনে তিনি নাকি সন্তানসম্ভবা হয়ে পরেছেন। ... হতেই পারেন। পশ্চাৎ-দেশ পরীক্ষার মত ধর্ম-খিস্তি পরীক্ষায় পাশ করে তেনারা এখন বিদেশে। মিশন একমপ্লিশড। ইমিগ্রেশন জয়ের পর একটু রিলাক্স মুড নিশ্চয় বড় কোন অপরাধ নয়। বিশেষ করে এ অপরাধ যদি আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়াতে সাহায্য করে। সরকারের উচিৎ হবে দেশের আনাচে কানাচে সংরক্ষিত এলাকা বানিয় চুম্বন সহ খোলা মাঠে যৌনমিলনের ব্যবস্থা করা। এক্সপোর্ট জোনের মত এসব জোনও ডলার, পাউন্ড, ইউরো, মার্ক আয়ের বিশাল দিগন্ত উন্মোচনে সহায়তা করতে সক্ষম হবে।