অতঃপর ইটা বিজ্ঞানীর মোমাটা আবিষ্কার!

Submitted by WatchDog on Sunday, March 20, 2016

অবশেষে রাজমাতা রাজ্যসভার জরুরি সভা আহবান করিলেন। সভাসদদের অবহিত করিলেন ইঁদুরের উৎপাতে শেখ সালতানাতের রাজকোষ নাকি অরক্ষিত হইয়া পরিয়াছে। ইহার বিধান প্রয়োজন। এই বিষয়ে সবার সুচিন্তিত মতামত চাহিলেন। বিজ্ঞজনদের প্রায় সবাই একবাক্যে বলিলেন...রাজমাতা, রাজ্য আপনার, রাজকোষও আপনার, যাহা বলিবেন অথবা করিবেন উহাই আইন, উহাই শিরোধার্য। প্রজাদের প্রভুভক্তি দেখিয়া রাজমাতা অভিভূত হইলেন। সবশেষে রাজ্যসভার ইটা বিষয়ক উপদেষ্টা ভুবন-খ্যাত ইটা বিজ্ঞানী যুবরাজ শেখ টাজিব বিন বাজেদ বিন আবদুল্লাহর দ্বারস্থ হইলেন। বলাই বাহুল্য, বিন আবদুল্লাহ কেবল বিজ্ঞানী ও উপদেষ্টাই নন, রাজমাতার একমাত্র সন্তান, শেখ সালতানাতের ভবিষ্যৎ কর্ণধারও। কাগজে কলমে মাসে ১ কুটি ৬০ লাখ বিবন্ধু (রাজ্যের মুদ্রা) বেতন দেয়া হইলেও রাজ্যের শিশুরা পর্যন্ত জানে এই অংক যুবরাজের পেটিকোট কেনার জন্যও যথেষ্ট নহে। 'যুবরাজ উপদেষ্টা, আপনি কি অবহিত আছেন রাজ্যের রাজকোষে চলমান ঘটনা প্রবাহে? এত বিবন্ধু খরচ করিয়া সুদূর উড়িষ্যা হইতে ইটা আনাইলেন, বিহার হইতে স্পেশাল অর্ডার দিয়া সিমেন্ট আমদানি করাইলেন, বাংলা হইতে রড খরিদ করাইলেন... এবং কুটি কুটি বিবন্ধু খরচ করিয়া প্রাচীর বানাইলেন, অথচ সেই প্রাচীর এখন ইঁদুরও ছেঁদা করিতে সক্ষম হইতেছে। কি ভাবিতেছেন আর কি ব্যবস্থা নিতেছেন উহা জানাইয়া জাতিকে ধন্য করিবেন কি? 'আলবৎ ইউর এক্সিলেন্সি, আলবৎ। অবশ্যই জানাইব। আমরা বিবন্ধু খরচ করিয়াছি ঠিকই কিন্তু যথেষ্ট করিনাই। আমাদের প্রতিপক্ষের তা জানা ছিল এবং সময়মত এই তথ্য ইঁদুর রাজ্যের মাননীয় ছেঁদামন্ত্রিকে অবহিত করিতে দুইবার চিন্তা করেনাই। তাই বলিয়া আমিও বসিয়া নাই। ইটার উপর নিরলস গবেষণায় গেল ছয়টা মাস রাইতকে দিন আর দিনকে রাইত বানাইয়াছি। আপনি জানিয়া বিশেষ খুশি ও উপকৃত হইবেন যে, গবেষণার ফসল এখন আমার হাতে। ...গলদ উড়িষ্যা হইতে আনা ইটায়। এই ইটার যথেষ্ট ঘনত্ব নাই। কারণ? আমার গবেষণা আমাকে নিশ্চিত করিয়াছে উড়িষ্যার ইটা কারখানায় জ্বালানী হিসাবে ব্যবহার করা হইয়াছিল লাকড়ি। লাকড়ির ইটা রাজকোষে ব্যবহারের উপযুক্ত নহে। উহাতে ডাইক্লোরো-ড্রাইডিভাইন-ট্রাইক্লোরো ইথাইনের গন্ধ থাকে। এই গন্ধ ইঁদুরদের প্রজনন শক্তি বাড়াইয়া দেয়। এতটাই বাড়ায়, ইটার তৈরি দেয়ালে ছেঁদা করিতে পর্যন্ত সক্ষম হয়। এবং সে ছেঁদায় রতিক্রিয়া করিতে বাধ্য হয়। আপনি জিজ্ঞাস করিবেন, তাহলে উপায়! উপায় আমি আবিষ্কার করিতে সক্ষম হইয়াছি জাঁহাপনা। এই আবিষ্কার গোটা মানবজাতিকে নতুন দিকনির্দেশনা দিবে। উপায় হইল; লাকড়ি নয়, মোমবাতির আগুনে ইটাকে পড়াইতে হইবে। এবং এই আবিষ্কারের নাম রাখিয়াছি "মোমাটা", মোমে পোড়ানো ইটা...। 'সুবহানাল্লাহ, সুবহানাল্লাহ...ইহা কি শুনিতেছি! এত বড় আবিষ্কার! গর্বে আমার জরায়ু পর্যন্ত নৃত্য করিতেছে। ওহে মূর্খ জাতি, তোমরা কি শুনিতে পাইতেছ কি হইতে কি ঘটিয়া গেল! যুবরাজ মোমাটা আবিষ্কার করিয়া বিশ্বব্রহ্মাণ্ডকে নাড়াইয়া দিয়াছে...আর তোমরা এখনো মুখ আঙ্গুল দিয়া লালা চুষিতেছো। শেখ সালতানাতের অধীশ্বর এক মাসের জন্য জাতীয় ছুটি ঘোষণা করিলেন। চারিদিকে হাতি নাচিল, ঘোড়া সাজিল...আনন্দ মিছিলে গোটা রাজ্য অচল হইয়া গেল। কেহ কেহ আদালতে গিয়া এতদিন কেন মোমাটা আবিষ্কার হয়নাই এই অভিযোগে রাজ্যের বাকি বিজ্ঞানীদের বিরুদ্ধে মামলা পর্যন্ত ঠুকাইয়া দিল।

ইঁদুর দলপতির কাছে গোপন-সূত্রে খবর আসিল, এইবার কেবল ছেঁদা না, গোটা রাজকোষ পর্যন্ত উঠাইয়া আনিতে হইবে। এই কাজে রাজ্যের ইঁদুরদের সাথে বেড়াল, কুকুর, হাতী, ঘোড়া সহ অনেকে শামিল হইবে। যুবরাজের নতুন পেটিকোট কেনার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়াছে।

http://www.amibangladeshi.org/blog/03-20-2016/1549.html

ভালো লাগলে শেয়ার করুন