আইনের ঊর্ধ্বে উঠে যারা অস্ত্র হাতে নেয় তারাই জঙ্গি। তাদের বাকি পরিচয় মুখ্য হতে পারেনা। অন্তত: দেশের প্রচলিত আইন ও বিচার ব্যবস্থার বিবেচনায়। পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রীর হত্যাকাণ্ডে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখছেন শহরের পুলিশ কমিশনার। কথায় বলে ইট মারলে পাটকেল খেতে হয়। সরকারী স্পন্সরে দেশের এমন কোন স্তর নেই যেখানে বিনাবিচারে মানুষকে হত্যা করা হয়নি। অর্থের লোভে দেশের পুলিশ, র্যাব অহরহ ভাড়া খাটছে। জলজ্যান্ত মানুষকে লাশ বানিয়ে পুতে ফেলছে, ভাসিয়ে দিচ্ছে নদী-নালায়। পুলিশ বর্বরতার লাইভ ভিডিওতে সয়লাব হয়ে আছে সোশ্যাল মিডিয়া। ছেলেকে না পেয়ে বাবাকে ধরে আনছে, স্বামীকে না পেয়ে গর্ভবতী স্ত্রীকে লাথি মারছে, বৃদ্ধা মার গায়ে হাত তুলছে। টাকার লোভে নীরিহ পথচারীর পকেটে ইয়াবা ঢুকিয়ে বেধড়ক পেটাচ্ছে। ক্ষুধার্ত হায়েনার মত গোটা জাতির উপর ঝাঁপিয়ে পড়ছে অবৈধ সরকারের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার মিশনে। যে সন্তানের সামনে তার মা-বাবাকে বুটের তলায় নিষ্পেষিত করেছিল, যে বাবার আদরের সন্তানকে পশুর মত অত্যাচার করেছিল তাদের সবার গায়েই রক্ত আছে। এবং সে রক্তও ফিনকি দেয়। এবং সে রক্তেও প্রতিশোধের নীল আগুন জ্বলতে অভ্যস্ত। আপনার পুলিশ, আমাদের পয়সায় বেতন পাবেন, আমদের পকেটের অর্থ কেড়ে নিয়ে বাড়ি, গাড়ি, সোনা-দানা আর সুন্দরী স্ত্রী গড়বেন, আর আমরা বসে বসে আঙ্গুল চুষবো এমনটা ভাবা হবে হীরক রাজ্যে বাস করা। হীরক রাজ্য কেবল ছায়াছবির গল্প, সুস্থ সবল রক্ত-মাংস-ওয়ালা মানুষের গল্প নয়। মানুষ যতদিন বেচে থাকবে ততদিন অন্যায় অনাচার আর অবিচারের বিরুদ্ধে সে প্রতিবাদ প্রতিরোধ করবে। রাষ্ট্রের আইন ও বিচার ব্যবস্থা যখন পঙ্কিলতার নর্দমায় ডুবে থাকে তখনই মানুষ অস্ত্র হাতে নেয়। জঙ্গি হতে বাধ্য হয়। হয়ত কথিত ইসলামী জঙ্গি তত্ত্ব সরকারের অবৈধ জন্মের আন্তর্জাতিক বৈধতা পেতে সহায়তা করবে। কিন্তু গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের নাগরিক হিসাবে আমরা সবাই জানি সর্বকালের, সর্বনিকৃষ্ট জঙ্গি হচ্ছে এ দেশের পুলিশ।
খুন কেবলই খুন। এর কোন জাতপাত নেই। এখানে বাবুল আক্তারের জন্য তার স্ত্রীর খুন যেমন মেনে নেয়া যায়না তেমনি মেনে যায়না দেশের অলিগলি রাজপথে ঘটে যাওয়া প্রতিদিনের শত শত খুন। একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে আমরা। একটা সময় আসবে যখন দেশের প্রত্যেকটা নাগরিককে তার বেচে থাকার তাগিদেই জঙ্গি হতে হবে।