কেমন আছেন জনাব? ভাল নিশ্চয়? শুনছি ঢাকার কোন এক হীমাগারে লাশ হয়ে বিশ্রামে আছেন আপাতত। কবরে যাওয়ার সময় কি হয়নি এখনো? তাহলে আর দেরী কেন? যত দ্রুত যাবেন তত দ্রুতই স্বর্গের সুশীতল বাতাস, সুস্বাদু আহার, লাল নীল পানীয় আর তুলতুলে নরম গরম শরীরের পরীদের ভোগ করার কথা। দেরী মানেই তো স্বর্গসূখ হতে বঞ্চিত হওয়া। এসবের জন্যেই তো সুদূর তুরস্ক হয়ে সিরিয়ার পথে পা বাড়িয়েছিলেন। মিশন একমপ্লিশড্! দেরী নিশ্চয় আপনার মেনুতে ছিলনা? আপনি দেখতে পাচ্ছেন কিনা জানিনা তবে আমরা পাচ্ছি, আপনাকে কবরে নিয়ে যাওয়ার মতও কেউ নেই। জন্মদাতা মা-বাবাও বিগড়ে গেছে তাদের রাজনৈতিক সমীকরণের বলি হয়ে। হয়ত এক সময় রাষ্ট্র তার মৃত নাগরিকের বোঝা বইতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়বে ও উপায় না দেখে ওয়ান ম্যান শো জানাজা পড়িয়ে পুতে রাখবে মাটির নীচে। কোথাও কি গৌরবের কোন সৌরভ পাচ্ছেন? বোধহয় না। অন্তত আমরা পাচ্ছিনা। সাদ্দাম হোসেনের ভাড়াটে খুনি বাহিনী রিপাব্লিকান গার্ডদের যখন মার্কিন দখলদার বাহিনী চাকরি হতে বরখাস্ত করে তাদের অহমিকায় ঘাঁ লেগেছিল। লাগারই কথা! হাজার হলেও খুনের ফ্রি লাইসেন্স কে-না উপভোগ করতে ভালবাসে। ঐ খুনির দলই অসমাপ্ত ডমেষ্টিক ম্যাসাকার ক্ষান্ত দিয়ে নাম লেখায় আন্তর্জাতিক ম্যাসাকারে। এবং নিজেদের পরিচিত করে আইসিস হিসাবে। ইসলামিক স্টেইট অব ইরাক এন্ড সিরিয়া...কথায় বলে বৃক্ষ নাম তার ফলে পরিচয়! সিরিয়া ও ইরাক - ইতিহাস কি আপনার জানা ছিলনা? ওরা ছিল বন্য, অসভ্য, খুনি, ধর্ষক। মেয়ে মানুষ জন্ম নিলে জ্যান্ত মাটিতে পুতে ফেলতো। এদের মানুষ হওয়ার প্রয়োজন ছিল। বোধহয় সে তাগাদা হতেই যুগে যুগে অতিমানবরা এসেছিলেন এবং ধর্মীয় শিক্ষার মাধ্যমে তাদের মানুষ করার চেষ্টা করেছিলেন। একবার কি ভেবে দেখেছিলেন কেন সব ধর্মের জন্মস্থানই মধ্যপ্রাচ্য? এসব প্রশ্ন করতে সাহষ লাগে। উত্তর খুঁজতে নেশার জগত হতে বেরিয়ে আসতে হয়। আপনি বেরিয়ে আসতে পারেননি। বরং ধর্মীয় উন্মাদনা আর রক্তের নেশায় বুদ হয়ে ভুলে গিয়েছিলেন আমি আপনি আরব ছিলাম না। আমরা আজন্ম বাংলাদেশি বাঙালি। আমাদের রক্তে খুনের নেশা ছিলনা, ছিলনা মেয়ে মানুষকে জ্যান্ত কবর দেয়ার তাগাদা। আরব সভ্যতা আর বাঙালি সভ্যতা কোথাও কোনদিন এক রেখায় মেলেনি। আপনি ও আপনার ব্রাদার্স ইন আর্মস সে চেষ্টাই করেছিলেন। আধুনিক সভ্যতার যাবতীয় উপকরণ ভোগ করে বড় হয়েছেন। শ্রদ্ধা কাপুড়ের কোমর ধরে নেচেছেন। অথচ এই আপনিই সেজেছেন ছুরা বিচারক। যে ছুরা জানবেনা তাকে জবাই করেছেন কুরবানীর পশুর মত। আরবদের ঘরোয়া মারামারিকে নিয়ে এসেছেন এ দেশের মাটিতে। বলতে পারেন ইতালীয়ান আর জাপানীদের কি অপরাধ ছিল? তাদেরও কি ছুরা জানা বাধ্যতামূলক ছিল? কেন? স্বপ্ন দেখছেন গোটা বিশ্বব্রন্মাণ্ডে একদিন ছুরার রাজত্ব কায়েম হবে? সমাজতন্ত্রীরাও কিন্তু একদিন আপনার মত খোয়াব দেখেছিল। ভেবেছিল বিশ্বজুড়ে সমাজতন্ত্রের রাজত্ব সময়ের ব্যপার মাত্র। কোথায় সে দিবাস্বপ্ন? আস্তাকুড়ে নয় কি? ধর্মীয় রাজত্ব এখন ইতিহাস। সে ইতিহাসে কোনদিন আর ফিরে যাবেনা মানব সভ্যতা। ইসলামের বিজয় নিশান স্পেন পর্যন্ত প্রসারিত হয়েছিল। সাদ্দাম হোসেনের প্রাইভেট খুনি বাহিনীর নেত্রীত্বে কি সেদিনের সে গৌরব ফিরে পাওয়ার জাল বুনছেন? বুনতে থাকুন। মানুষ এখনো জেগে উঠেনি। জেগে উঠলে আপনার মত নিরবাসকে হোলি আর্টিজানের মত রেষ্টুরেন্টেই কেবল ঢুকতে দেবেনা তা নয়, বরং কুকুর বেড়ালের মত তাড়াবে। থেতলে মারবে পথে-ঘাটে। ইসলাম কায়েম করতে চান? তাহলে করুন এবং শুরু করুন আপন ঘর হতে। যে বাবার পয়সায় দামী ইউনিভার্সিটি আর বিদেশে পড়তে গিয়েছিলেন তা ছুরার কষ্টি পাথরে যাচাই করে দেখুন। হালাল না-ও হতে পারে। জবাই করতে চাইলে সে বাবাকে জবাই করুন। জবাই করুন আপনার মাকে। কারণ তিনিও হয়ত ছুরা পণ্ডিত নন। হয়ত হিজাব ভক্ত নন। কতল করুন আপনার বোনকে যে শ্রদ্ধা কাপুরের মত পর পুরুষের কোমর ধরে নাচছে। রেহাই দিন এ দেশকে, রেহাই দিন এ জাতিকে। মরতে হয় সিরিয়ায় গিয়ে মরুন। নরম কাদা মাটির এ দেশ আপনার মত তৃতীয় শ্রেনীর খুনিদের জন্য নয়।