শান্তিপুর গ্রামে আজ অশান্তির ছায়া। চতুঃপার্শ্বের গ্রাম গুলোতে দাবানলের মত ছড়িয়ে পরেছে খবরটা। পঞ্চায়েত জরুরি বৈঠকে বসেছে। সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিচার বসাবে জুমা নামাজের পর। আসামী ছ্যার ছ্যার আলী। মারাত্মক অভিযোগে অভিযুক্ত সে। আল্লাহর কালাম অবমাননা করার অভিযোগ। যেন তেন প্রকারে নয়, মাটিতে ফেলে, পায়ে দলে। উত্তেজিত হয়ে আছে শান্তিপুরের জনগণ। যে কোন সময় অঘটন ঘটে যেতে পারে। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান ইলশা হাজী বাধা না দিলে অনেক আগেই মাটিতে পিষে ফেলত তাকে। ইমাম ও মুয়াজ্জিন দুজনেই স্বচক্ষে দেখেছেন ঘটনাটা। বাতাসে উড়ে যাচ্ছিল পবিত্র কালামের ছিন্ন-পাতা। হাতে ধরার চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর পা দিয়ে আটকানোর চেষ্টা করেছিল ছ্যার ছ্যার। চোখে পড়তে এক সাথে হায় হায় করে উঠেন ইমাম মুয়াজ্জিন দুজনে। এক কান দুকান করে খবরটা গ্রামে-গঞ্জে ছড়িয়ে পড়তে সময় লাগেনি। বালাপুর খেলার মাঠে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সভা করেছে ইতিমধ্যে। প্রতিবাদের মাধ্যমে আল্টিমেটাম দিয়েছে ছ্যারছ্যারকে। স্বইচ্ছায় নিজের এক চোখ, এক হাত শরীর হতে বিচ্ছিন্ন না করলে জবাই করা হবে তাকে। পবিত্র কালামের যে পাতাকে অবমাননা করা হয়েছে তাকে যত্ন করে সংরক্ষণ করেছেন ইমাম সাহেব। জুমাবার দিন মুসুল্লিদের দেখাবেন বলেও কথা দিয়েছেন।
জুমাবার। নামাজ শেষে ছ্যার ছ্যার আলীর মৃত্যু পরোয়ানা ঘোষণার জন্য পঞ্চায়েতের সভা বসেছে। মসজিদের ইমাম সাহেব চোখের পানি নাকের পানি এক করে নিজে কেঁদেছেন, দর্শক-শ্রোতাদের কাঁদিয়েছেন। কলি যুগে ধর্মীয় অবমাননা নিয়ে জনগণকে সাবধান করেছেন। কোরান-হাদিস হতে রেফারেন্স টেনে ইহ ও পরজগতের শাস্তির রূপরেখা দিয়েছেন। উত্তেজিত জনতা এক কণ্ঠে রায় দিয়েছে, মৃত্যুদণ্ড! কোথায় এবং কিভাবে ছ্যার ছ্যার আলীর দণ্ড কার্যকর করবেন তার জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট ওলামা পরিষদ গঠন করেছেন চেয়ারম্যান সাহেব।
ইউসুফ আল ভটভটিয়া তিন দিন হল গ্রামে ফিরেছেন। তাও প্রায় দশ বছর পর। থাকতেন দূরের দেশ মিশরে। দেশটায় গোলমাল শুরু হওয়ার তিন মাসের মাথায় সপরিবারে পালিয়ে যান। বিভিন্ন দেশ হয়ে শেষ পর্যন্ত জাতিসংঘের সহায়তায় পাড়ি জমাতে সক্ষম হয়েছেন নিজ দেশে। তিনিও উপস্থিত হয়েছেন পঞ্চায়েতের বিচারে। রায় পড়ে শোনানো শেষ। ইমাম সাহেব পবিত্র কালামের পাতায় গভীর শ্রদ্বা ও মমতায় চুমা খেয়ে জনসন্মুক্ষে প্রকাশ করলেন। শোকে, দুঃখে, রাগে ক্ষোভে কেউ কেঁদে উঠলো, কেউবা আবার আগুনের গোলার মত জ্বলে উঠলো। ইউসুফ আল ভটভটিয়া নিজের চোখকে বিশ্বাস করাতে পারলোনা। একি দেখছে সে! দাঁড়িয়ে গেল সে। পঞ্চায়েতের সৃষ্ট ওলামা পরিষদের সামনে গিয়ে পাতাটা দেখানোর জন্য অনূর্ধ্ব করল। মুয়াজ্জিন সাহেব রাগে ক্ষোভে ফুসে উঠে জানতে চাইলেন ওযু আছে কিনা। ভটভটিয়া করুণ চোখে স্বীকার করলেন পাতাটা তার নিজের এবং উপস্থিত জনগণের সামনে পড়ে শুনানোর জন্য যেন তাকে অনুমতি দেয়া হয়।
ওলামা পরিষদ সংক্ষিপ্ত আলোচনার পর অনুমতি দিল ভটভটিয়াকে।
- ওহে স্বদেশী ভাই-বোনেরা, আমি ইউসুফ আল ভটভটিয়া দশ বছর পর দেশে ফিরেছি। মিশরে থাকার সুবাদের আরবি ভাষা শিক্ষার সুযোগ হয়েছে। আলেকজান্দ্রিয়া হতে পালানোর পর মরক্কোর কাসাব্লাঙ্কায় দুই দিন তিন রাত কাটাতে বাধ্য হই। সময় কাটানোর জন্য কাসাব্লাঙ্কা এয়ারপোর্টে কিনি আরবি ম্যাগাজিনটা। সে পাতাটা দেখছেন তা ঐ ম্যাগাজিনেরই অংশ। একটু দম নিয়ে বেশ সূর করে আরবিতে পড়ে শোনালেন ম্যাগাজিনের বিষয়বস্তু। তারপর অনুবাদ করে যা জানালেন তাতে উপস্থিত সবাই থ মেরে গেল!...মরোক্কান রাজ পরিবারের জনৈকা প্রিন্সেসের গোপন জীবন নিয়ে রগারগা যৌন কাহিনী!