খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার মানুষের জন্য 'চান্দের গাড়ি' আসলেই হয়ত চান্দে যাওয়ার মহাকাশযান। জীবনকে যদি যুদ্ধ হিসাবে নেই তবে সে যুদ্ধে জয়ী হয়ে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানো চান্দে যাওয়ার মতই বিশাল এক প্রাপ্তি। স্কুল শেষে বাড়ি ফিরছে একদল কিশোরী। অস্বাভাবিক কোন ছবি নয়। বাঁচার লড়াইয়ে ওরা শামিল হয়েছে কেবল। লম্বা পথ পাড়ি দিতে হবে। সে পথ দুর্গম, আঁকাবাঁকা, বন্ধুর। চান্দে যাওয়ার মতই কঠিন। তবুও থমকে যাবেনা ওদের যাত্রা। কেবল বৈরী প্রকৃতিই নয়, পাহাড়ের বাঁকে বাঁকে ওৎ পেতে থাকা হায়েনাদের রক্তচক্ষুও থামাতে পারবেনা ওদের। বাঁচার তাগিদেই মানুষকে পথে নামতে হয়। খুঁজে নিতে হয় তার পথ। এ কিশোরীরাও বাইরের কেউ নয়। চান্দের গাড়ী কোন বন্দরে নোঙ্গর করবে তার আগাম ইশারা নেই। ওদের কেউ হয়ত ছিটকে পড়বে গাড়ি হতে। কারও যাত্রা হবে সংক্ষিপ্ত। হয়ত সামনের ষ্টেশনেই শেষ হবে অনেকের লম্বা পথ পাড়ি দেয়ার স্বপ্ন। যাত্রার শেষ পথে কেউ হয়ত খুঁজে পাবে চার-দেয়ালের ছোট একটা স্কুল। কারও জন্যে অপেক্ষা করবে ছোট্ট সুখী একটা সংসার। কারও জীবন খাদে পরে পথ হারাবে। কারও কারও মুখ হয়ত ঝলসে যাবে এসিড আগ্রাসনে। কেউ হয়ত কুলাঙ্গার আরবদের লালসার লোভে বিভ্রান্ত হয়ে পা বাড়াবে মধ্যপ্রাচ্যের দিকে। হোক সে পথ আঁকাবাঁকা, দিন শেষে ওদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার উপরই দাঁড়িয়ে থাকবে ভবিষ্যতের বাংলাদেশ। ওদের অর্থেই ফুলে ফেঁপে উঠবে দেশের মুদ্রা ভাণ্ডার। সে ভাণ্ডারকে ঘিরেই এক দল ক্ষুধার্ত হায়েনা বুক উঁচিয়ে গর্ব করবে... দেখ, আমাদের কারণেই এ ভাণ্ডারের যাত্রা এখন চান্দের দিকে...
বাংলাদেশ থেমে যাবেনা ডাইনী আর হায়েনাদের বলৎকারের ভয়ে। দেশ এগিয়ে যাবে। এগিয়ে যাবে এর মানুষ। চান্দের গাড়ি একদিন ঠিকই পৌঁছে যবে চান্দে। তবে তার কৃতিত্ব একক কোন ব্যাক্তি, পরিবার অথবা দল দাবি করলে এ ছবি কথা বলবে, স্বাক্ষী দেবে.