মামদু ভূত আশেকানে মারহাবা শাহ সূফী সৈয়দ পীরজঙ্গি ফোসেন মহব্বত এরশাদ চাচার আমল তখন..ক্ষেমতা নিয়া মহা ক্যাচাল চাইরদিকে।। মানুষ আহত নিহত হইতেছে। গুলোস্থান আর পল্টন অফিসের কিছু লালু-ভুলুর দল চাতক পক্ষীর মত বইস্যা থাকে। বইস্যা থাকে খবরের আশায়...এই বুঝি নতুন কোন সংবাদ আইল...মৃত্যু সংবাদ। লাশ ক্ষেমতার লড়াইয়ে ভাইটামিন যোগায়। কোরামিন ইংলিশোনের কাজ দেয়। দুই লাশের বয়স এক সপ্তাহ আগ-পিছ হইলে দুই শিবিরে কপালের ভ্রু কুচকাইয়া যায়। ভয় আর আশুংকা জাগে...এই বুঝি নেতাইয়া গেল! ক্ষমতার গন্দম বুঝি ফসকাইয়া গেল!
তো একদিন মাদান বেলা খবর আইল দুই সাহাবি কতল মোবারেক ফরমাইয়াছেন। লাশ বনিয়া অপেক্ষায় আছেন। গুলোস্থান আর পল্টনের লালু-ভুলুর দল সচল হইল। কতল ময়দানে হাজির হইবার আগৈ উভয়ে ঘোষনা দিল...দুই জনেই আমাগো সৈনিক। হেরা আদর্শের লাইগ্যা কতল হইছে। তাগো রক্ত ব্রেথা যাইতে দেয়া হইবেনা। গায়েবানা জানাজার ঘোষনা আসিল...হরতালের ঘোষনা আসিল...ধানমণ্ডি আর ক্যান্টনমেন্টের লৌহ বলয়ের আড়ালে করিমন ও নসিমন বিবিরা কাইন্দা কাইট্টা একাট্টা হইল।...হাইঞ্জা না হইতে লাশ লইয়া শুরু হইল নতুন ক্যচাল। দলীয় ডিএনএ টেস্টের লীটমাছে যাচাই বাছাই পূর্বক পাওয়া গেল দুই জনের একজনও না গুলোস্তানের, না পল্টনের। লালু ভুলুরা রনেভঙ্গ দিয়া নিজ নিজ ক্যাম্পে ফিরিয়া গেল। লাশের উপর বিছানো লাল সবুজ পতাকা হাওয়া হইয়া গেল। হুমড়ি খাওয়া মানুষের মিছিল বাতাসে মিলাইয়্যা গেল। লালু বলিল, হালার পো হালারা, বুলু কহিল, পুঙ্গির পোলারা, মরিবার আর উপলক্ষ পাইলানা! সূবর্ন সুযোগ পাইয়্যা মামদু ভুতের দল ভীড় জমাইল। নয় মন তেলের লগে নয় বালতি জোলাবি খরচ করিয়া ধ্যানে বসিল। উপর হইতে অহি নাজিল্ হইল...হে আমার আশেকানে ফোরকানগন, তোমরা কবুল কর এবং বল, লাশের মালিক আমরা মামদু ভুতের দল। ক্ষণিকের মাধ্যে লম্বা লম্বা গাড়ি ছুটিয়া আসিল। উজির নাজির কোতয়ালের দল হাজির হইল। সাথে আসিল সুংবাদিকের দল। হোমপ্যাথিক সমিতির ম্যানেজার কর্তৃক সরবরাহকৃত গ্লিসারিন চোখে মাখিয়া সবাই কান্দিল। খোদ মামদু ভুত ঘটনাস্থলে হাজির হইয়া ঘোষোনা দিল...আমার বান্দাদের আমি জীবিত অবস্থায় কিছু দিতে পারিনাই, তয় মরণের পর হেগোরে কিছু দিমু...হেগো লাশ হেলিকপ্টারে চড়াইয়া আসমানে ঘুরামু আর পরোয়ারদিগারের খুব কাছাকাছি গিয়া বিচার দিমু করিমন নসিমনের বিরুদ্ধে। তারপর শাহী দাফন শেষে কবরে শোয়াইয়া দিমু। জয়গন বিবি খবর পাইয়া হাউমাউ কইরা কান্দন শুরু করল...তরমুজ আলীর লাশের উপর আছড়াইয়া পরিয়া জোরে জোরে গাইল পারতে লাগল...গোলামের ঘরের গোলাম, তর কোন বাবায় কইসিল এদিকে আইতে! এই ধরণের কতাবার্তায় মামদু ভুতের দল হচকিত হইয়া গেল...জয়গন বিবিকে শূলে দাড় করাইল। বিবির এক কথা...তরমুজ আলী কোন দলের না...হেয় দিনের বেলার মিন্তি দেয় আর রাইতের বেলা চুরি করে। সিদ কাইটা মাইনষের ঘরে ঢুকে আর হাড়ি পাতিল চুরি করে। বাতিল হইয়্যা গেল তরমুজ আলীর হেলিকাপকাপ ভ্রমণ। দুই টেকা বার আনা গজের মুসা মিয়ার বাবুর হাটী মার্কিন কাপড় উপহার দিয়া ভুতের দল অন্য লাশ লইয়া পরোয়ারদিগারের দিকে রওয়ানা হইয়া গেল। জয়গন বিবি ভুতেগো হাতে পায়ে ধরিয়া লাশ বাড়ি নেওয়ার খরচা ভিক্ষা চাহিল। এক ভুত কইল...আরে মাদানির পো মাদানি...কোন চাইলের ভাত খাইয়া এইদিকে আইছিলি! উপায় না দেখিয়া জয়গন বিবি আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলামের দ্বারস্ত হইল। রাইত বারটার দিগে ঠেলাগাড়ি করিয়া বাড়ির দিকে হওয়ানা হইল তরমুজ আলী।
ফাইনাল কথাঃ গত রোববার পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে ফুলবাড়িয়া কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ এবং পথচারী সফর আলী মৃত্যুবরণ করেছেন।