বুবু, তুমি ১৬ কোটি মানুষরে খাওয়াইতে পারলে আরও ৫ লাখকেও খাওয়াইতে পারবা' - রোহিঙ্গাদের নিয়ে দুই বোনের এই বাক্যালাপ আমার মনগড়া আলাপের অংশ নয়, মিডিয়ায় এসেছে, তাই কোট করছি। মিডিয়া মিথ্যা বলে থাকলে তার দায় দায়িত্ব আমার নয়। প্রতিবাদ, প্রতিরোধের কণ্ঠ ইতিমধ্যে উন্নতির সুনামিতে সাঁতার কেটে যাদুঘরে ঠাঁই নিয়েছে। হয়ত আজ হতে এক দশক পর এসব দেখতে আমাদের ওখানেই যেতে হবে। সুস্থ, সবল ১৬ কোটি মানুষকে ছিনতাইকৃত ক্ষমতার অধিপতি ক্ষুধার্ত সোমালিয়ানদের মত খাইয়ে পরিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছেন এমন নিকৃষ্ট মন্তব্যের পরও যখন কোথাও কোন প্রতিবাদ হয়নি ধরে নিতে হবে আমরা আসলেই সোমালিয়ান এবং জাতিসংঘের কায়দায় এক পরিবারের মার্সির উপর বেঁচে থাকছি। দু'দিন আগে যিনি রোহিঙ্গাদের উত্তাল সাগরের মাঝপথে আটকে রেখে নিশ্চিত মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে বাধ্য করতেন হঠাৎ করে নিজে একবেলা খেয়ে হলেও তাদের থাকা খাওয়া নিশ্চিত করবেন এমন সী-চেঞ্জ দাবী কিছুটা হলেও সন্দেহের সৃষ্টি করবে। বিশেষ করে ক্ষমতা লিপ্সু এই চোঁচরা পাতাকে যারা ভাল করে চিনেন তাদের জন্যে। নতুন করে রোহিঙ্গা ক্রাইসিস সৃষ্টি হওয়ার প্রথমক্ষনেই আমাদের সরকার (সবসময় অবৈধ শব্দটা যোগ করতে হবে) প্রধান প্রস্তাব দিয়েছিলেন যৌথ অভিযানের। অর্থাৎ খুনি মায়ানমার সরকারের সাথে মিলে আমাদের সেনাবাহিনী অভিযান চালাবে প্রায় নিশ্চিহ্ন হওয়া একটা জাতির প্রতিবাদ-প্রতিরোধের বিরুদ্ধে। কি এমন ঘটল যে তিনি সুর পালটে ফেললেন? রক্ষিতা জাতি হয়েও রক্ষকের ইচ্ছাকে উপেক্ষা করলেন এবং খুলে দিলেন সীমান্ত। সাণ্ডার তেলের গ্যালন হাতে এমন সুযোগেরই অপেক্ষায় ছিলেন কিন্তা-কুন্তির দল। তেলের নহর বইতে খুব একটা দেরী লাগেনি। সে তেলের ফিনিশড গুডস হিসাবে উদয় হল মাদার অব হিউম্যানিটি আখ্যা। যে সরকার প্রধানের অঙ্গুলি হেলনে তার পোষা বাহিনী রাতের আধারে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে গুম করে, খুন করে তিনিই বনে যান মানবতার জননী! হয়ত সাণ্ডার তেলের প্রভাবে আমাদের চলার পথ পিচ্ছিল ও তৈলাক্ত, চোখ আন্ধা ও কান দেন্ধা, কিন্তু বাকি বিশ্ব এখনো সুস্থ এবং জাগ্রত। নারায়ণগঞ্জ ৭ খুনের মত ইট সিমেন্ট আটকে অপরাধ এদেশে চাপা দেয়া সম্ভব হলেও গ্লোবাল পৃথিবীর বাকি অংশে এসব ধাপ্পাবাজি চাপা থাকেনা। বিদেশী কূটনীতিবিদরা প্রতিদিন স্ব স্ব দেশে যেসব সংবাদ পাঠান তার সবটাই চেতনার সাণ্ডার তেলে তৈলাক্ত থাকে তা নয়। স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশগুলোতেও যায় এক পরিবার, দুই বোন ও তাদের উজির,নাজির, কোতোয়ালদের খবর। নোবেল নষ্ট হলেও পচে যায়নি। শেখ হাসিনার মত পচা কাঁঠালের খদ্দের হতে তাদের আরও নিকৃষ্ট পথ পাড়ি দিতে হবে। যতদিন তা না হচ্ছে অধরাই থেকে যাবে নোবেল নামের সোনার হরিণ। এর আগেও এ নিয়ে বাড়াবাড়ি হয়েছে। সন্তু লারমার সাথে পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি করার পর পরই নোবেলের সন্ধানে জাহাঙ্গীর কবির নানকের নেতৃত্বে একদল দলকানা কৃতদাস ছড়িয়ে পরেছিল দেশে বিদেশে। নোবেল কমিটির অনেককে চেতনার ভায়গ্রা পর্যন্ত অফার করা হয়েছিল। কাজ হয়নি। সতর্কবার্তা এসেছিল স্ক্যন্ডেনেভিয়া হতে। লগি-বৈঠা বাহিনী সেখানেই থামতে বাধ্য হয়েছিল।
হঠাৎ করে রোহিঙ্গাদের জন্য উথলে উঠা মমতা, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে রক্ষকদের ডিঙ্গিয়ে বিশ্ব-মহলের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা, লন্ডনে বসে নোবেল কমিটির ফোনের অপেক্ষায় থাকা...এসব এক সূতায় গাঁথলে একটা ছবি পরিষ্কার হয়ে যাবে, গোটা রোহিঙ্গা ইস্যুটাই ছিল নোবেলে শান্তি পুরস্কার হাসিল করার স্বরলিপি। এ যাত্রায়ও কাজ হয়নি। এবার দেখার পালা একবেলা না খেয়ে হলেও তাদের খাওয়ানোর প্রতিজ্ঞা হতে তিনি সরে আসেন কিনা। যাত্রার পালা শেষ। এবার মঞ্চ ভাঙ্গার পালা।