কোথায় যেন কার একটা গানে শুনেছিলাম
you say it all
when say nothing at all...
বাংলাদেশের রাজনীতি ও তার দুবৃত্তায়ন নিয়ে লেখালেখিতে একসময় এতটাই obsessed ছিলাম শয়নে স্বপনে এদের কচুকাটা করে গায়ে লবণ মরিচ লাগাতে নেশাগ্রস্ত হয়ে থাকতাম। ভাবতাম হয়ত এখান হতেই শুরু হবে কাঙ্ক্ষিত বিদ্রোহ। সে বিদ্রোহ, যার আগুনে পুড়ে কয়লা হবে দেশ এবং তার ছাই হতে জন্ম নেবে নতুন এক আরব বসন্ত... নতুন এক বাংলাদেশ। খাম্বা মামুন, হাওয়া ভবন আর মাগুরা মার্কা নির্বাচনের প্রতিবাদ করতে গিয়ে অনেক সময় শালীনতার সীমা অতিক্রম করে প্রবেশ করেছি এমন এক গণ্ডিতে যার গ্রহণযোগ্যতা খোদ আমার কাছেই প্রশ্নাতীত ছিলনা। তবু করেছি। এবং তা করতে গিয়ে একধরণের বন্য উদ্দামতা ও অর্গাজমের মত সন্তুষ্টি উপভোগ করেছি। সময় বদলেছিল। পতন হয়েছিল হাওয়া ভবনের। ডান-বাম চিন্তা না করেই সমর্থন দিয়েছিলাম উদ্দিন গংদের। ভেবেছিলাম হোক তা অবৈধ, লুটেরার দল তো পেয়েছিল তাদের পাপের শাস্তি!
আমি জানি সে সময় সমসাময়িক লেখক ও পাঠকদের অনেকেই ছিলেন আমার পাশে। এবং আমরা একসাথে লড়েছি। ২০০৮ সালের নির্বাচনে ক্ষমতাসীনদের পরাজয় কাছ হতে দেখতে ছুটে গিয়েছিলাম দেশে। ছুটাছুটি করেছিলাম এক ভোটকেন্দ্র হতে আরেক ভোটকেন্দ্রে। কেবল বিএনপি তথা হাওয়া ভবনের পতন নিশ্চিত হওয়ার পর ফিরে এসেছিলাম প্রবাসের কর্মক্ষেত্রে। এয়ারপোর্টের এক্সিট লাউঞ্জে বসে হালি হালি মশার কামড় সহ্য করে আগ্রহ নিয়ে শুনেছিলাম নতুন প্রধানমন্ত্রীর শপথ অনুষ্ঠান। ভেবেছিলাম হয়ত নতুন বাংলাদেশের গোড়াপত্তন হয়ে গেছে...স্বপ্ন দেখেছিলাম শাহ আলম (কল্পিত নাম) নামের ইখতিয়ার উদ্দিন বিন মোহম্মদ বখতিয়ার খিলিজিরা আর কোনদিন আমাদের ব্যবসা বাণিজ্যকে জিম্মি করবেনা ক্ষমতাকে পুঁজি করে। কিন্তু হায়!
অনেকেই প্রশ্ন করেছেন কেন আগের মত আর সরব নই। তাহলে কি দেশ হতে রাজনৈতিক দুবৃত্তায়ন দূর হয়ে গেছে? কমে গেছে ক্ষমতার রক্তাক্ত চেহারা? অথবা কম্প্রোমাইজ করে নিয়েছি বাস্তবতার সাথে? আসলে বোধহয় তার কোনটাই না। বাস্তবতা হচ্ছে আমি লেখক নই। বাংলা শব্দভাণ্ডারও আমার সীমিত। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী মাফিয়া চক্রের অধুনা অবৈধ ও জারজ শাসনের ইতিবৃত্ত লেখার মত ভাষা আমার সম্ভারে নেই। খাম্বা চুরির বিপরীতে ব্যাংকের ভল্ট কেটে লাখ লাখ কোটি চুরি, মাগুরা নির্বাচনের বিপরীতে গোটা নির্বাচনী ব্যবস্থাকে এক ব্যাক্তির দুষিত রক্তস্রাবে সমাহিত করা, শিক্ষা ব্যবস্থার অকাল মুসলমানি করা...এসব নিয়ে লিখতে গেলে কলম তথা কিবোর্ডের জোর লাগে। সে জোর আমার নেই। যাদের জোর আছে তারা এখন শকুন আর নেকড়েদের উচ্ছিষ্ট খেয়ে নাম লিখিয়েছে ইঁদুরের তালিকায়। তাই আমি আর লিখতে যাইনা। কথাও বলিনা। অনেকে বলবেন ভয়, নিশ্চয় সেটাও একটা ফ্যাক্টর। অনেকের মত আমার কথারও এখন ভাষা নেই। যে ভাষার বর্ণনা করা যায় গানের ভাষায়...
you say it all
when say nothing at all...