কোন ভিত্তিতে ১.২ বিলিয়ন মুসলমানদের তীর্থভূমি মক্কা-মদিনা সৌদি রাজতন্ত্রের অংশ হয়ে থাকবে, এমন একটা প্রশ্ন সামনে আনার কি সময় হয়নি? যুগে যুগে মধ্যপ্রাচ্যের আরবরা নিজদের বর্বর হিসাবে প্রমাণ করতে দ্বিধা করেনি। এ নিয়ে কোন কালেও ওরা রাখ-ঢাকের চেষ্টা করেনি। একবিংশ শতাব্দীর শুরুতেও তারা খুব একটা বদলায়নি। পেট্রো ডলারের ঝনঝনানি আর বাংলাদেশের মত দেশগুলো হতে সস্তা শ্রম আমদানি এই দুইয়ের সমন্বয়ে যতই শান-সৈকতের বাহারি প্রদর্শনী করুক না কেন জাতি হিসাবে ভেতরের পশুকে ওরা কিন্তু বাগে আনতে পারেনি। চরিত্রহীনতার লম্বা তালিকায় সৌদিদের স্থান হবে সবার উপরে। ওরা জন্মগত-ভাবে চরিত্রহীন। পৃথিবীর দেশে দেশে ওদের পরিচয় প্রাচুর্যের জোয়ারে ভাসমান একদল অশিক্ষিত, বর্বর ও বিকৃত মানসিকতার পশু হিসাবে। প্রতিবেশী দুর্বল ও অর্থনীতির সবকটা মাপকাঠিতে পিছিয়ে পরা দেশ ইয়েমেনের বিরুদ্ধে অঘোষিত যুদ্ধ চালাচ্ছে সৌদিরা। বাহ্যত এর কোন কারণ নেই। তবে এ কনফ্লিক্টের গোঁড়া যে অন্য জায়গায় তা বের করতে পণ্ডিত হওয়ার দরকার হয়না। ইরান! সৌদি রাজপরিবারের জন্যে ইরান হচ্ছে মূর্তিমান আতংক। শিয়া সংখ্যাগুরুর এ দেশে অনেক কিছু গিলোটিনে আনা গেলেও দেশটার গণতন্ত্র নিয়ে খুব বেশী প্রশ্ন করা যাবেনা। রাজনৈতিক সমস্যায় ক্ষতবিক্ষত ইয়েমেনে সংখ্যালঘু শিয়াদের একটার অংশ ক্ষমতার দখল নিয়েছে। তাতেই মসনদ কেঁপে উঠেছে সৌদি রাজ পরিবারের। এখানে শিয়া-সুন্নি রেষারেষির চাইতেও বেশী কাজ করে গণতন্ত্রের ভয়। সৌদি আরবে গণতন্ত্রের সহজ অনুবাদ হবে রাজ পরিবারের বিদায়। কেবল নিজেদের সিংহাসন পোক্ত রাখার জন্যেই ওরা নির্বিচারে মানুষ খুন করে চলছে।
কিছুদিন আগে তেমনি এক অভিযানে ওরা বোমা মেরে উড়িয়ে দিয়েছে চলন্ত একটা বাস। বাস যাত্রীদের প্রায় সবাই ছিল স্কুলগামী শিশু। ৪০ জনেরও উপর শিশু প্রাণ হারিয়েছে নির্মম এ হামলায়। কথিত শান্তির ধর্ম ইসলামের রক্ষক হিসাবে ওরা বছরে ১২ বিলিয়ন ডলারের মত হাতিয়ে নিচ্ছে হজ্ব হতে, যার একটা অংশের যোগানদাতা বাংলাদেশের সহজ সরল খেটে খাওয়া একদল মানুষ। ধর্মীয় বিশ্বাসের দায়িত্ব ও কর্তব্য হিসাবে আমরা আমাদের শেষ সম্বল ব্যায় করে হলেও পাড়ি দিচ্ছি সৌদি আরবে। গাঁটের টাকা ব্যায় করে হজ্ব করছি। অথচ দিনশেষে কোথায় যাচ্ছে এ অর্থ তার খোজ রাখছিনা। দুঃখজনক হলেও সত্য এ অর্থের অনেকটাই চলে যায় সৌদি রাজপরিবারের যুবরাজদের মনোরঞ্জনের কাজে। ইদানীং বাংলাদেশ হতে গৃহপাচারিকার কাজ নিয়ে অনেক মহিলা পাড়ি জমাচ্ছে সৌদি আরবে। চরিত্রহীন সৌদিদের কাছে গৃহপাচারিকা মানে যুদ্ধের মাঠ হতে জয় করে আনা ভোগের সামগ্রী। ওদের লাম্পট্যের কাছে পরাজিত হতে ইজ্জত হারাচ্ছে শত শত নারী। শারীরিক ভাবে নির্যাতিত হচ্ছে অনেকটা ওদের দৌড় মনোরঞ্জনে ব্যবহূত উটের মত।
সৌদি রাজতন্ত্র ও ইসলামী মূল্যবোধ (!) কোন কালেই সমান্তরাল রেখায় চলতে পারেনি। দুই অস্তিত্ব সাংঘর্ষিক। তাই সময় এসেছে দুই স্বত্বাকে পৃথক করার। ক্যাথলিকদের পুণ্য শহর ভ্যাটিকানের কায়দায় মক্কা মদিনাকেও আলাদা করার দাবি উঠতে পারে, যার নিয়ন্ত্রণে থাকবে ওআইসির মত গ্রহণযোগ্য কোন প্রতিষ্ঠান।