ইউরোপ ও দক্ষিণ আফ্রিকা হতে জবরদখল করতে আসা অবৈধ সাদারা আদিবাসী আমেরিকানদের নির্মমভাবে দমন করার মাধ্যমে এদেশে নিজেদের প্রভুত্ব কায়েম শুরু করে। সম্পদের উর্বর-ভূমি আমেরিকায় মাটি খুঁড়লেই সোনা পাওয়া যায় এমন বিশ্বাসে বিশ্বাসী হয়ে হাজার হাজার সাদা চামড়ার মানুষ দলে দলে পাড়ি জমায় আমেরিকায়। ওরা আসতে শুরুকরে ইউরোপ ও আফ্রিকা হতে। আদিবাসী আমেরিকানরা এসব অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়লেও তা সফল হয়নি। কঠিন হস্তে ও অত্যন্ত নির্মমভাবে দমন করা হয় এসব প্রতিরোধ। উড়ে এসে জুড়ে বসা এসব জবর দখলকারীর দল নিজেদের এদেশের মালিক হিসাবে ঘোষণা করতে শুরু করে। সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলার পাশাপাশি একসময় তারা অনুভব করতে শুরু করে আরাম আয়েশের জন্যে তাদের কৃতদাসের প্রয়োজন আছে। কৃষি ও গৃহস্থালির কাজে সহায়তার জন্যে এসব কৃতদাসের খোজে অনেকে পাড়ি জমায় দূরের মহাদেশ আফ্রিকায়। জংগলে ফাঁদ পেতে, জালে আটকে হাজার হাজার কালো আফ্রিকানদের জাহাজে তুলে নিয়ে আসে আমেরিকায়। শুরু হয় মানবসভ্যতার কলঙ্কিত এক অধ্যায়।
অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাস আরও কলঙ্কময়। বিভিন্ন অপরাধে দণ্ডিত ব্রিটিশ নাগরিকদের শাস্তির অংশ হিসাবে পাঠানো হয় দূরের দ্বীপ অস্ট্রেলিয়ায়। এক অর্থে অস্ট্রেলিয়াকে বানানো হয় ব্রিটিশদের জেলখানা। ভয়ংকর এসব অপরাধীরা ধীরে ধীরে দ্বীপের মালিক আদিবাসী অস্ট্রেলিয়ানদের কোণঠাসা করে দখল নিতে শুরু করে তাদের আবাসভূমি। অবৈধ দখলের ফ্রি লাইসেন্স পেয়ে ব্রিটিশরা পিপীলিকার মত পাড়ি জমাতে শুরু করে অস্ট্রেলিয়ায়। আদিবাসী এবরোজেনিসরা আত্মগোপনের কৌশল হিসাবে ঠাঁই নিতে শুরু করে গহীন জঙ্গলে। পাশাপাশি কলোনিয়াল ব্রিটিশরা মালিক সেজে ছলে বলে দমন করতে শুরু করে আদিবাসীদের। এক পর্যায়ে জন্ম নেয়া শিশুদের ওরা অপহরণ করতে শুরু করে। নিউজিল্যান্ডের কাহিনীও প্রায় একই রকম। ঐ দ্বীপের আসল মালিক আদিবাসী মাউরিরা। কিন্তু এখানেও পা ফেলে ব্রিটিশ সহ অনেক সাদা চামড়ার ইউরোপিয়ান। এভাবেই একে একে আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড সহ অনেক দেশের দখল নেয় সাদা চামড়ার অবৈধ দখলদারের কাফেলা।
Moral of the story is, পৃথিবীর দেশে দেশে অভিবাসীদের নিয়ে সাদা চামড়ার মানুষদের এলার্জি এক অর্থে চরম হিপোক্রেসি। আমেরিকার আসল মালিক আদিবাসী আমেরিকানরা। ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাদা জাতীয়তাবাদীরা এদেশে দখলদার মাত্র। অবৈধভাবে শুরু হয়েছিল এদের যাত্রা। একই কথা প্রযোজ্য সাদা চামড়ার উগ্র জাতীয়তাবাদী অস্ট্রেলিয়ানদের বেলায়। ওরা এসেছে ব্রিটেন হতে, ইতালি হতে, গ্রীস হতে, দক্ষিণ আফ্রিকা হতে। আজকের বাদামি রংয়ের অভিবাসীদের উপর তাদের ঘৃণার সামান্যতম বৈধতা পেতে চাইলে প্রথমে তাদের ফিরে যেতে হবে স্ব স্ব দেশে।