পতনের স্বরলিপি হাতে নিয়েই ওদের উত্থান হয়। বিদ্যুতের চমক নিয়ে হাজির হয়। দিনশেষে তর্জন গর্জনের পর রাস্তার কাদা হয়ে নেতিয়ে যায়। রাজনীতির ছত্রছায়ায় ওরা বেড়ে উঠে। উঠতে উঠতে একসময় গাছের মগডালে উঠে যায়। উঁচু হতে সবকিছু ছোট দেখে। তাদের পৃথিবী হয়ে রঙ্গিন। মুখ আর পেশী অনেকটা ইনক্রেডেবল হল্কের মত ফুলতে শুরু করে। মুখ হতে নির্গত হয় বি-৫২ বিমান হতে বোমাবর্ষণের ভাষা। শাহেদ মিয়া তাদেরই একজন।
তবে সুখবর হচ্ছে এ পথের পথিক তিনি একা নন। পৃথিবীর অনেক স্বৈরাচারী শাসক ও তাদের দোসরা হেঁটে গেছেন অথবা হাঁটছেন এ পথে। লিবিয়ার গাদ্দাফি ছিলেন তেমনি এক শক্তিধর চিতা। বছরের পর বছর মসনদে বসে বাজিয়ে গেছেন ক্ষমতার রূপালী গিটার। কিন্তু হায়! দিনশেষে এই গাদ্দাফিকে তার নিজের মানুষরাই টেনে হিঁচড়ে বের করেছিল ড্রেনের পাইপ হতে।
ইরাকের সাদ্দাম হোসেনও কম ছিলেন না। রাজসভায় সভাসদদের কেউ বেফাঁস কথা বললে বারান্দায় নিয়ে খুলি উড়িয়ে দিতেন। নিজের মেয়ের স্বামীকে জর্ডান হতে মিথ্যা আশ্বাসে ডেকে এনে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন পরপারে। ক্ষমতা ছিল অপরিসীম। তার নামে বাঘে ছাগলে এক ঘাটে পানি খেতো। এই সাদ্দাম হোসেনকেই লুকাতে হয়েছিল গর্তে। এবং তাকে যখন ওখান হতে টেনে উঠানো হয় তার শরীরও ছিল শাহেদের মত নোংরা।
আজকে বাংলাদেশে ক্ষমতাসীনদের অনেকেরই এখন ভরা বসন্ত। সম্পদের প্রমোদ-তরীতে ভাসছে অনেকে। ক্ষমতা এখন অনেকের কাছে ৯৯ বছরের ইজারা নেয়া সম্পত্তি। বলার অপেক্ষা রাখেনা জোয়ারের অপর পারেই অপেক্ষা করছে ভাটা। যেদিন ভাটার টান ঠিকমত লাগবে অনেক রাঘব বোয়ালদের যে একই অবস্থা হবে তা নিয়ে সন্দেহ থাকার কোন কারণ নেই। কারণ এসব ঐতিহাসিক সত্য।