মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে প্রায় ৮৫ লাখ ভারতীয় বাস করে থাকে, যার অধিকাংশই হিন্দু। উপসাগরীয় অঞ্চলের জিসিসিভুক্ত দেশগুলোর সাথে ভারতের সম্পর্ক খুবই মধুর। এই সংস্থার অন্তর্ভুক্ত ছয়টি দেশ হতে ভারতীয়রা বছরে ১০০ বিলিয়ন ডলার নিজ দেশে পাঠায়। বাংলাদেশ সহ বাকি বিশ্বের মুসলিম দেশগুলো হতে ভারতীয়রা বছরে নিজ দেশের অর্থনীতিতে ১২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যোগান দেয়। বিলিয়ন মানুষের দেশ ভারতের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে এ অর্থ বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। অধুনা বিশ্বের নব্য হিটলার নরেন্দ্র মোদী সঙ্গত কারণেই ঘন ঘন এসব দেশে ভ্রমণ করে থাকেন এবং দেশগুলোর রাজা-বাদশাহ ও সরকার প্রধানদের সাথে আমুদ আহ্লাদে সময় কাটিয়ে আসেন। ভারতের প্রিন্ট ও সোশ্যাল মিডিয়া ফলাও করে প্রচার করে থাকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের দলিলাদি। দেশটার অভ্যন্তরে নির্যাতিত কোটি কোটি মুসলমানদের জন্যে এসব দলিল এক অর্থে উপহাসমূলক ম্যাসেজ।
...দেখ, মুসলমানদের অর্থে আমরা মুসলমানদেরই পেটাচ্ছি, আর তাতে মুসলিম বিশ্বের কোন আপত্তি নেই! বছরের পর বছর খুব মসৃণভাবে চলে আসছিলো এই অপকর্ম। কিন্তু ইদানীং মুসলিম বিশ্ব মুখ খুলতে শুরু করেছে। বিশেষকরে ভারতীয়দের আয়-রোজগার ও আমুদ-আহ্লাদের তীর্থভূমি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে।
শুরুটা আমিরাতের প্রিন্সেস শেইখা হেন্দ আল-কাসেমিকে দিয়ে। তারপর কুয়েত। কুয়েত মন্ত্রীসভার সচিবালয় থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়, ভারতে মুসলিমদের বিরুদ্ধে যারা মানবতা-বিরোধী অপরাধ করেছে এবং তাদের অধিকার লঙ্ঘন করছে, তারা কি মনে করছে যে বিশ্বের মুসলিমরা এসব অপরাধের বিরুদ্ধে নীরব থাকবে এবং তাদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিকভাবে, অর্থনৈতিকভাবে ও আইনগত-ভাবে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করবে না? এর আগে ১৮ এপ্রিল ওআইসি এক বিবৃতিতে ভারতে ইসলামফোবিয়ার ক্রমবর্ধমান স্রোত বন্ধ করতে জরুরি-ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নয়া দিল্লির প্রতি আহ্বান জানায়।
বলতে গেলে কূটনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে নয়া দিল্লিতে। সাম্প্রদায়িক চেতনা-বোধ এতটাই নীচে নেমেছে ভারতে, অনেক প্রদেশের হাসপাতালে কোভিট-১৯'এ আক্রান্ত মুসলমানদের চিকিৎসা পর্যন্ত দিতে অস্বীকার করছে। একবিংশ শতাব্দীর গো-মূত্র-খোর এসব অমানুষদের জন্যে সভ্যতার সর্বস্তর হতে ম্যাসেজ পাঠানো এখন সময়ের দাবি। ওদের ঠেকাতে হবে। সভ্যতাকে ওরা অপবিত্র করছে। নতুন করে লিখছে মানুষে মানুষে সম্পর্কের স্বরলিপি। প্রিন্সেস কাসেমির ভাষায় আসুন আমরাও বলতে শুরু করি, আধুনিক দুনিয়ায় নতুন কোন হিটলারের প্রয়োজন নেই, প্রয়োজন আছে একজন মার্টিন লুথার কিং'য়ের।