করোনাভাইরাস আতংক ধীরে ধীরে গ্রাস করে নিচ্ছে আমেরিকান জীবন। থমকে যাচ্ছে লাখো মানুষের প্রাণের স্পন্দন। ঘর হতে বের হওয়ার আগে দু'বার চিন্তা করছে অনেকে। অনিশ্চয়তার ছোঁয়া লাগছে প্রতিদিনের জীবনে। সবচাইতে বিপদজনক হচ্ছে মানুষের জানা নেই কোথা হতে শুরু করতে হবে এর প্রতিরোধ। কার্যকর কোন ভ্যাক্সিন নেই বাজারে। খুব শীঘ্র আসার সম্ভাবনাও কম। নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন গভর্নর কমো। ওয়াশিংটনের অবস্থা আরও খারাপ। ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে সেখানকার স্কুল-কলেজ। তেমনি এক স্কুলের ম্যনেজমেন্ট স্থানীয় জনগনের সহযোগীতায় প্রতিটা ছাত্র-ছাত্রীর ঘরে পৌঁছে দিয়েছে ল্যাপটপ। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বাসা হতে অনলাইনে ক্লাস করবে সবাই।
ঘরের অনিশ্চিয়তা বাজারেও প্রতিফলিত হচ্ছে। মানুষ লাইন ধরে কিনছে হ্যান্ড স্যানেটাইজার। যার কারণে ওয়ালমার্টের মত মেগা স্টোর হতে উধাও এ জাতীয় অনেক কিছু। এক কথায় টনক নড়তে শুরু করেছে। মানুষ নড়েচড়ে বসছে। সংগ্রহ করতে শুরু করেছে শুকনো খাবার। এই পেনডেমিকের কারণে ধ্বস নামতে শুরু করেছে ওয়াল স্ট্রীটে। বিশেষকরে আকাশপথের পরিবহন খাত, ট্যুরিজম ইণ্ডাষ্ট্রি সহ বিনোদন মাধ্যমেও ছড়িয়ে পরছে আতংক। তেলের বাজারের অবস্থাও টালমাটাল।
এই ভাইরাসের উৎপত্তি ও বিস্তারের বৈজ্ঞানিক কোন ব্যখ্যা এখনো সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছায়নি। তাই মানুষ নিজেই তৈরী করছে এর কারণ। অনেকে দায়ী করছে চীনাদের লাগামহীন খাদ্যাভাস। যার ফলে দেশটার চীনা নাগরিকদের মোকাবেলা করতে হচ্ছে অনাকাংখিত বর্ণবাদ।
পৃথিবীর দেশে দেশে এখন একটাই আলোচ্য বিষয়, করোনা ভাইরাস। কি করে এর মোকাবেলা করা যায় তা নিয়ে ব্যস্ত উন্নত, উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশের অনেক সরকার। সব বিচারে পৃথিবীর সবচাইতে ঘনবসতি দেশ বাংলাদেশ সরকারকে মনে হচ্ছে একেবারেই নির্বার। দেশটার গায়ের জোরে ক্ষমতায় চেপে বসা সরকারের কর্মকাণ্ড দেখলে মনে হবে করোনাভাইরাস সাতসমুদ্র তেরনদীর ওপারের কোন দেশের গল্প। আসলেই কি তাই?
মুজিব বর্ষ পালনের নামে জনগনের হাজার কোটি টাকা লোপাট ও অপচয়ের যে মাষ্টারপ্ল্যান তা সময়মত এক্সিকিউট করার জন্যেই কি এই নীরবতা? আমার মত অনেকের মনেই উদয় হচ্ছে এ জাতীয় প্রশ্ন। বন্দুকের নল, আইন ও বিচার ব্যবস্থা, আর রাজনৈতিক পেটোয়া বাহিনীর ষ্টীমরোলারের মুখে ক্ষমতা পোক্ত করার জন্যেই যে এই মুজিব বর্ষের অবতারনা তা ধীরে ধীরে পরিস্কার হচ্ছে। কিন্তু জন্মদিন পালনের নামে এই ম্লেচ্ছতার মূল্য জাতি করোনাভাইরাস দিয়ে পরিশোধ করবে কিনা সময়ই তা প্রমাণ করবে।