প্রিয় ফেসবুকার...
আপনি কি বিদেশ যেতে আগ্রহী? এই যেমন কানাডা অথবা আমেরিকায়? তাহলে আপনাকেই খুঁজছেন তিনি। ৫ ফুট ৩ ইঞ্চি লম্বা। সুন্দরী। নিঃসন্তান ও ডিভোর্সী। বয়স সর্বসাকুল্যে ৩৭ বছর। এবং নামাজী। নামটাও উল্লেখ করার মত, জান্নাতুল ফেরদৌস। প্রথমত বিয়ের পর আপনাকে উপরে উল্লেখিত দুই দেশের যেকোন একটাতে নিয়ে যাবেন। এবং ওখানে আপনাকে ২০০ কোটি টাকার ব্যবসার দায়িত্ব দেবেন। পারবেন সামলাতে? বুকে সাহস থাকলে চেকবুক সাথে নিয়ে তৈরী থাকুন।
কুমিল্লার দেবিদ্বারের নাজির হোসেন আটঘাট বেধেই মাঠে নেমেছিলেন। সত্তর বছর বয়স্ক নাজির হোসেনের স্ত্রী নেই। নামাজী এমন পাত্রীর সন্ধানেই ছিলেন তিনি। তার উপর বিদেশ যাওয়ার হাতছানি। যথারীতি জমা করেন নিজের আর্জি। দেখা করেন হবু স্ত্রীর সাথে। তাও অভিজাত এলাকার এক রেষ্টুরেন্টে। পাসপোর্ট ও সাথে ১৫ লাখ টাকা তুলে দেন জান্নাতের হাতে। কিছুদিন পর নাজির হোসেন জানতে পারে কানাডায় বেজায় শীত। ওখানে ৭০ বছর বয়স্ক কারও পক্ষে বাস করা সম্ভব হবেনা। তাই জনাবা ফেরদৌস নতুন এক প্রস্তাব দেন হবু স্বামীকে। কানাডার ব্যবসায় নিয়োগ করা ২০০ কোটির সবটাই দেশে এনে দেবেন হবু সোয়ামীর হাতে। এবং দুজন দুজনার হয়ে বাকি জীবন সুখের জোয়ারে ভাসতে থাকবেন। সোয়ামী বিনা বাক্যে লুফে নেন এ প্রস্তাব। তবে সমস্যা দেখা দেয় অন্য জায়গায়। একসাথে এত টাকা আনবেন কি করে! এর জন্যে ট্যাক্স,ভ্যাট, ডিএইচএল বিল সহ আনুসাঙ্গিক অনেক খরচ।
তাতে কি! নাজির হোসেনেরও অনেক টাকা। পুরানো ঢাকায় ব্যবসা আছে। হবু স্ত্রীর জন্যে খুলে দেন নিজের ভাণ্ডার। একে একে ১ কোটি ৭৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা তুলে দেন জান্নাতুল ফেদৌসের হাতে।
সময় যায়...বিবাহের আসর আর বসেনা। বিরহ পর্বে শেষে আস্তে আস্তে সন্দেহের দানা বাধে নাজির হোসেনের মনে। এবং শেষ পর্যন্ত দ্বারস্থ হন পুলিশের। বেমজার পুলিশ কোন এক সুন্দর সকালে হানা দেয় জান্নাতের দরবারে। একে একে বেরিয়ে পরে জান্নাতি এই হুরের আসল চেহারা।আজ পর্যন্ত ২৫ কোটি টাকা আয় করেছেন আমাদের জান্নাত। নাজির হোসেনের মত একাধিক নাজিরকে বশ করেছেন। স্বামী-স্ত্রী মিলে তাদের সবাইকে সর্বশান্ত করে ধর্ণা দিয়েছেন এক দুয়ার হতে অন্য দুয়ারে।
সুপ্রিয় ফেসবুকার...
অবৈধ ক্ষমতার জরায়ুতে একজন জান্নাতুল ফেরদৌসদের জন্ম খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। বরং এমন ঘটনা না ঘটাটাই ছিল অস্বাভাবিক। কিন্তু আপনি কি পারবেন কেবল বিদেশ যাওয়া ও বিয়ের আগে হবু স্ত্রীর ২০০ কোটি টাকার ব্যবসার অংশীদার হওয়ার জন্যে আপনার সারা জীবনের সঞ্চয় কোটি টাকা তুলে দিতে? দোষ আমি জান্নাতুল ফেরদৌসকে দিচ্ছিনা। কারণ তেনার জন্মই এসব করার জন্যে। জালিয়াতি আর ধাপ্পাবাজির খবরে সয়লাব ইদানিংকালের প্রিন্ট ও ভার্চুয়াল মিডিয়া। এতসব জেনেও যারা প্রতারকদের খপ্পরে ধরা দোষ আমি তাদেরই দেবো।