অনেকেই অবাক হচ্ছেন এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের মত সন্দেহ করছেন আমেরিকান নির্বাচনের আউট-কাম নিয়ে। এই যেমন, নির্বাচনের রাতে পেন্সেলভানিয়ার ফলাফল ছিল ট্রাম্পের পক্ষে। তিনি প্রতিদ্ধন্দি জো বাইডেনের চাইতে ৬ লাখ ভোট বেশী পেয়ে এগিয়ে ছিলেন। আজ এ মুহূর্তে এ লিড মাত্র ২২ হাজারে নেমে এসেছে। এবং আমার মত অনেকেই আশা করছেন রাত পোহাবার আগেই জো বাইডেন লিড নিয়ে জিতে যাবেন। যাদের আমেরিকান নির্বাচনের ডায়নামিক্স জানা নেই তারা বলবেন কেমন কি! ব্যাপারটা একটু খোলাসা করছি।
কোভিড-১৯ পেন্ডেমিকের কারণে এবারের নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টি ও তাদের নিয়ন্ত্রিত অঙ্গরাজ্যগুলো মেইল-ইন ব্যালটকে অগ্রাধিকার দিয়েছিল। এসব অঙ্গরাজ্যের কাউন্টি অফিস হতে ভোটারদের বারবার তাগাদা দিচ্ছিল ভোটকেন্দ্রে লাইন না দিয়ে ডাক মাধ্যমে ভোট দিতে। এবং ডেমোক্রেট দলের সদস্যরা এই সুযোগটা কাজে লাগিয়েছিল। আমি নিজেও একই পন্থায় ভোট দিয়েছি। অন্যদিকে ট্রাম্পের দল রিপাবলিকানরা পেন্ডেমিকের অস্তিত্বকে প্রথম হতেই গুরুত্ব দেয়নি এবং নির্বাচনের দিন সরাসরি ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেয়াকে উৎসাহ করেছিল। ট্রাম্প পাগল রিপাবলিকান দলীয় সদস্যরা ভোটকেন্দ্রে ভোট দেয়াকে ট্রাম্পের প্রতি নিজদের লয়ালটি প্রমাণের অংশ হিসাবে নিয়েছিল।
পেন্সেলভানিয়া অঙ্গরাজ্যে ক্ষমতায় ডেমোক্রেটরা। তাদের নিয়ম-কানুনও অন্যরকম। তাই নির্বাচনের রাতে কাউন্টিগুলো প্রথমে ইন-পারসন ভোটারদের ভোট গণনা দিয়ে ফলা প্রকাশ করা শুরু করেছে। যে কারণে রাত গভীর হওয়ার আগেই ডোনাল্ড ট্রাম্প ৬ লাখ ভোট বেশি পেয়ে এগিয়ে থাকেন। যাদের ভেতরের খবর জানা ছিলনা তারা ধরে নিয়েছিল এখানে ট্রাম্পের বিজয় অবধারিত। কিন্তু ভোটকেন্দ্রের ভোট গোনা শেষ করে যখনই মেইল-ইন ব্যালট গোনা শুরু করে চিত্র বদলাতে শুরু করে। গোনা এখনও চলছে। এবং যতবার ফল প্রকাশ করছে বাইডেনের পক্ষে যাচ্ছে শতকরা ৯০ ভাগ cভোট। বিশেষকরে আফ্রিকান আমেরিকান অধ্যুষিত ফিলাডেলফিয়া শহরে (এ শহরে আমি ৬ মাস বাস করেছিলাম এবং পাবলিক সেন্টিমেন্ট সম্পর্কে ভাল জ্ঞান লাভ করেছিলাম)। এ শহরের আরও অনেক ভোট গোনা হয়নি। আমার মত অনেকেই নিশ্চিত, রাত পোহাবার আগে জোসেফ বাইডেন পেন্সেলভানিয়ায় জিতে প্রেসিডেন্সিও জিতে যাবেন। বলাই বাহুল্য, পেন্সেলভানিয়া অনেকদিন ধরেই ডেমোক্রেটদের ঘাটি ছিল। কিন্তু ২০১৬ সালে সবাইকে চমকে দিয়ে ট্রাম্প জিতে যান। এবার অনেকটা ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে আসার মত ডেমোক্রেটরাও ফিরে যাচ্ছে নিজেদের শিবিরে।
রিপাবলিকানদের ঘাঁটি জর্জিয়াতেও ফাটল দেখা যাচ্ছে। এখানেও অনেককিছু ঘটে যেতে পারে!