আশার আলো জ্বলতে শুরু করেছে টানেলের শেষপ্রান্তে। সবকিছু পরিকল্পনা-মাফিক চললে আগামী এপ্রিলের মধ্যে করোনাকে পরাজিত করার আশা দিচ্ছে মার্কিন গবেষক, বিজ্ঞানী ও রাজনীতিবিদগণ। এই তালিকায় অবশ্য বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নাম নেই। ফাইজারের পর ম্যাসাচুসাস ভিত্তিক আরেক মার্কিন কোম্পানি Moderna তাদের গবেষণার ফল প্রকাশ করেছে। তাদের কোভিড-১৯'এর ভ্যাক্সিনের কার্যকারিতা শতকরা ৯৪.৫ ভাগ বলে দাবি করছে। ফাইজার ভ্যাক্সিনের তুলনায় এই ভ্যাক্সিনের এফেকটিভনেস কিছুটা বেশী। ভ্যাক্সিন সংরক্ষণ ও সরবরাহে ফাইজারের যেসব সমস্যা তার অনেকটা দূর করতে সক্ষম মডের্নার ভ্যাক্সিন।
Moderna ভ্যাক্সিনের ভিত্তি হচ্ছে messenger RNA (mRNA)। উইকেপেডিয়ার মতে In molecular biology, messenger RNA (mRNA) is a single-stranded molecule of RNA that corresponds to the genetic sequence of a gene and is read by a ribosome in the process of synthesizing a protein. উৎপাদিত প্রোটিনই শরীরে এন্টিবডি তৈরি করে যা করোনা ইনফেকশন প্রতিরোধে সক্ষম। আমি ডাক্তার নই। এই প্রফেশনের নিজস্ব একটা ভাষা আছে যার অনেককিছুই আমার বোধগম্য নয়। তবে ফাইজার ও মর্ডেনার বক্তব্য হতে ধারণা করা যায় এই দুই ভ্যাক্সিনের কোনটাই কোভিড ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্যে নয়। বরং flu ভ্যাক্সিনের মত শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে ভাইরাসকে শুরুতেই মোকাবেলা করতে সক্ষম হবে। ৪ সপ্তাহের ব্যবধানে দুটো ডোজের মাধ্যমে সমাপ্ত হবে ভ্যাক্সিন ক্যান্ডিডেট গ্রহণ প্রক্রিয়া। ফাইজারের ভ্যাক্সিনের অসুবিধা এখানেই। তাদের ভ্যাক্সিনকে -৭০ ডিগ্রী সেলসিয়াসে সংরক্ষণ করতে হবে। মর্ডেনার বেলায় এই বাধ্যবাধকতা অনেকটা শিথিল।
ভ্যাক্সিন তালিকায় আরও বেশকটা কোম্পানি তাদের গবেষণার শেষ পর্যায়ে আছে।হয়ত খুব শীঘ্রই ফল প্রকাশ করবে। এই তালিকায় আছে ফ্রেঞ্চ কোম্পানি Sanofi, ব্রিটিশ GlaxoSmithKline, মার্কিন Merck & Co, Johnson & Johnson, Novavax ও Inovio অন্যতম।
এ তালিকার Inovio'র ভ্যাক্সিনের এপ্রোচ হবে ডিএনএ ভিত্তিক। তাদের গবেষণা এখন ২/৩ ট্রায়ালে আছে। ছোট এই কোম্পানির ভ্যাক্সিন আলোর মুখ দেখলে বদলে দিতে পারে ভ্যাক্সিনের ফ্যাব্রিক।
আরও ৬ মাস ধৈর্য ধরার পাশাপাশি মাস্ক পরা ও সোশ্যাল ডিসটেন্টিং মেনে চলার উপর নির্ভর করবে কোভিড-১৯'এর আগ্রাসন। এমনটাই বলছেন মার্কিন গবেষকরা। তবে সমাজ ব্যবস্থার কারণে দুটোর কোনটাই মেনে চলা সম্ভব হবেনা মার্কিন জনগণের পক্ষে। বিশেষকরে শাসনতান্ত্রিক বাধ্যবাধকতার কারণে। দেশটার সরকার চাইলেই তার নাগরিকদের এসব মানতে বাধ্য করাতে পারবেনা। গণতন্ত্রের ভাষায় তা হবে ব্যক্তি স্বাধীনতার উপর সরকারী হস্তক্ষেপ। মূলত এ কারণেই মার্কিন সরকার পারছেনা কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে আনতে।
করোনা সময়কে জয় করে যারা বেঁচে যাবেন তাদের জন্যে সময়টা চিরদিনের জন্যে ঠাঁই পাবে রোমন্থনের পাতায়। ইতিহাস কথা বলবে। গবেষকরা গবেষণা করবেন। কিন্তু একটা সত্য চাইলেও আমরা এড়াতে পারবোনা। তা হচ্ছে এ ভাইরাসে চীনাদের ভূমিকা। মানব সভ্যতাকে যাচাই করতে হবে, কেন চীন দেশেই জন্ম নেয় বেশিরভাগ ভাইরাস।