ব্যক্তিটি উত্তর কোরিয়ার সুপ্রিম লিডার অথবা ভগবান কিম জং ঊন। দেশটার উনিই সব। তিনি হাসলে দেশ হাসে। কাঁদলে দেশ ও জাতি সমস্বরে কান্দে। পাশের জন উনার স্ত্রী রি সল-জু। ছবিটি গতকালের। বলা হচ্ছে ভগবান ও তার স্ত্রীকে অনেকদিন এক ফ্রেমে দেখা যায়নি। স্বভাবতই আশংকা দানা বাধছিল হয়ত খুন হয়ে গেছেন লিডারের স্ত্রী। এমনটাই হয় দেশটায়। লিডারের মনে কেউ গোস্বা ধরালে সে হারিয়ে যায় সোলার সিস্টেমের কোন এক কক্ষপথে। কেউ তার খবর পায়না। তার এই আকস্মিক অন্তর্ধানে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারেনা। চোখে পানি এলে তাও আটকে রাখতে হয়। কারণ মুখের প্রশ্ন ও চোখের পানি দুটোই শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এবং এসব অপরাধের শাস্তি একটাই, সোলার সিস্টেমের কোন এক গলিতে চিরস্থায়ী নির্বাসন।
বয়স যখন খুব অল্প পিতা কিম জং ইল ছোট কিমকে পাঠিয়ে দেন সুইজারল্যান্ডে। ওখানে ছদ্মনামে লেখাপড়া শেষ করে ফিরে আসনে নিজের দেশ উত্তর কোরিয়ায়। ২০১১ সালে পিতার মৃত্যুর পর খুব অল্প বয়সে বাবার রেখে যাওয়া সিংহাসনে আসীন হন ছোট কিম। পাগলা ঘোড়ার মত ছুটতে শুরু করেন বাবার রেখে যাওয়া কথিত জুচে মতবাদ বাস্তবায়নে। অভুক্ত জনগণকে পূজারীর কাফেলায় আটকে গড়ে তুলেন আপন সাম্রাজ্য। শুরু করেন পারমানবিক কর্মসূচী। ব্ল্যাক-মেইল শুরু করেন পশ্চিমা দুনিয়ার বিভিন্ন দেশকে। এ তালিকায় এগিয়ে থাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ভগবান কিম নিশ্বাসে প্রশ্বাসে ছড়াতে থাকেন এন্টাই আমেরিকান ঘৃণা।
ভেতরের খবর হচ্ছে; কিম জং ঊন বাস্কেটবলের খুবই ভক্ত। আমেরিকান বাস্কেটবল লীগ NBA'এর কোন খেলাই মিস করেন না। নিজ প্রাসাদে স্যাটেলাইট টিভি লাগিয়ে লাইভ উপভোগ করেন এ খেলা। কেবল বাস্কেটবলই না, আমেরিকান পপ সংগীতেরও তিনি একান্ত ভক্ত। হুইস্কি পছন্দ করেন স্কটল্যান্ডের। সিগার আমদানি করেন সুদূর কিউবা হতে। যেহেতু তিনি দেশটার ভগবান এসব তিনি করতেই পারেন। সমস্যা হচ্ছে, একই দেশের অন্য কেউ এসব পছন্দ করলে তাকে বানানো হয় দেশের শত্রু, সাম্রাজ্যবাদের দোসর। এবং শাস্তি হিসাবে পাঠানো হয় গ্রহ-নক্ষত্রের কোন এক চোরা গলিতে।
ক্ষমতা আসলেই এক বিচিত্র চীজ। সুসংবাদ হচ্ছে, এসব বুঝতে আমাদের এখন আর দূরের দেশ উত্তর কোরিয়া যাওয়ার দরকার হয়না!