সাহারা মরুভূমির ঠিক নীচে বিশাল এক এলাকা আছে যা প্রায় গোটা আফ্রিকা মহাদেশকে ছুঁয়ে গেছে। জিওগ্রাফিক্যালি এলাকাটা সাহেল (Sahel) নামে পরিচিত। এই এলাকার সেন্টারে আছে বুরকিনো ফাসো, মালী ও নাইজারের মত দেশগুলো। ক্ষুধা, দারিদ্র, অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা, বাসস্থান, চিকিৎসা ও খরার মত সমস্যাগুলোর সাথে যোগ হয়েছে নতুন এক সমস্যা, ইসলামী সন্ত্রাসবাদ।
বুরকিনো ফাসো, চাঁদ, মালী, মৌরেতানিয়া ও নাইজারকে নিয়ে গঠিত সাহেল জি৫ গ্রুপের সম্মিলিত প্রচেষ্টাতেও থামানো যাচ্ছেনা সন্ত্রাসবাদের উত্থান।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাঁক্রো ঐ অঞ্চলে ফ্রান্সের উপস্থিতি কমানোর ঘোষণা দেয়ার সাথে সাথে সন্ত্রাসীদের পালে নতুন হাওয়া লাগতে শুরু করেছে। যেমনটা লেগেছিল আফগানিস্তান হতে সরে আসার মার্কিন ঘোষণার পর তালিবানদের পালে। জি৫'এর যৌথবাহিনী হতে চাঁদও তার সৈন্য প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে। এসব ঘোষণার পর জিহাদিদের আক্রমণ ব্যাপকহারের বৃদ্ধি পেয়েছে।
এপ্রিল মাসে চাদের প্রেসিডেন্ট ইদ্রিস ডিভাই'এর মৃত্যুর পর আভ্যন্তরীণ সমস্যা সমাধানের জন্যে তারাও তাদের বাহিনীর বিরাট একটা অংশ N'Djamena'য় ফিরিয়ে আনতা বাধ্য হয়।
পৃথিবীর এ অঞ্চলের মূল সমস্যা হচ্ছে বৈরী প্রকৃতি। সীমিত পরিমাণ বৃষ্টির কারণে খাদ্য পরিস্থিতি সবসময় বিপদজনক অবস্থায় থাকে। এসব অনিশ্চয়তাই জন্ম দেয় সন্ত্রাস। সাথে যোগ হয়েছে উগ্র ধর্মীয় উন্মাদনা। মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে কেবল নাইজারের পশ্চিমাঞ্চলে সন্ত্রাসীদের হাতে ৪২০ জন সিভিলিয়ান খুন হয়েছে।
অনেকেই আশংকা প্রকাশ করছেন পশ্চিমা বিশ্বের সাহায্য ছাড়া সাহেল অঞ্চলে ইসলামী সন্ত্রাসবাদের মূল উৎপাটন করা কোনভাবেই সম্ভব হবেনা। তা না করা গেলে লাখ লাখ মানুষ অনাহারে মারা যাবে।
আফগানিস্তান হতে মার্কিনীরা যে শিক্ষা নিয়েছে তাতে নিশ্চিতভাবে বলা যায়, তারা কোনভাবেই সাহেল অঞ্চলে জড়াতে যাবেনা। দেখার বিষয় সাহেল জি৫ ব্যর্থ হলে মার্কিনীরা মানবিক সাহায্য নিয়ে এগিয়ে যাবে কিনা। সময়মত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘ হস্তক্ষেপ না করলে রুয়ান্ডা যা ঘটেছিল তার পুনরাবৃত্তি হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা আছে সাহেল অঞ্চলে।