ছবিটা বেশীদিন আগের নয়। ২০০৮ সালের আগস্ট মাসের ৩০ তারিখ। চীনের রাজধানী বেইজিং'এ চলছে সামার অলিম্পিক। রুশ দেশের ক্ষমতার মাসলম্যান ভ্লাদিমির পুতিনের মগজে তখন অন্য চিন্তা। দক্ষিণাঞ্চলীয় দেশে জর্জিয়াকে শিক্ষা দেয়া।
জর্জিয়ার প্রেসিডেন্ট মিখাইল সাকাসিভিলি দেশটার দক্ষিণ ওসেটিয়ায় বিদ্রোহীদের দমনে সৈন্য পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিলে পুতিন হস্তক্ষেপ করার সিদ্ধান্ত নেন। এমন সিদ্ধান্তের প্রেক্ষাপট জানতে আমাদের ফিরে যেতে হবে আরও দুই বছর আগে, ২০০৬ সালে।
স্বাধীন সার্বভৌম জর্জিয়া তার দেশ হতে চারজন রুশ গোয়েন্দাকে বহিষ্কার করে জাতিসংঘের সনদের আওতায়। তাতে ঘা লাগে পুতিনের অহমিকায়। দক্ষিণ ওসেটিয়ায় বসবাসকারী রুশদের মদদ দিয়ে গড়ে তোলে বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন। ঐ অঞ্চলের প্রায় সবাইকে রুশ পাসপোর্ট ইস্যু করার মাধ্যমে অলিখিত দখল নেয় দক্ষিণ ওসেটিয়ার।
সাত দিন স্থায়ী রুশ অভিযানে প্রাণ হারায় প্রায় সাড়ে সাতশ জর্জিয়ান। রাজধানী তিবিলিসিকে আনা হয় রুশ স্ট্রাইকিং রেঞ্জের আওতায়। প্রতিবেশী দেশগুলোকে নিজেদের সামরিক শক্তি প্রদর্শনীর মাধ্যমে পশ্চিমা বলয় হতে দূরে রাখা মূল উদ্দেশ্য হলেও পুতিনের চোখ স্থানীয় দালালদের সহযোগিতায় দেশগুলোর দেখল নেয়া।
বলশেভিকিদের মত প্রতিবেশীদের রুশদের আওতায় নেয়া বর্তমান বিশ্ব-ব্যবস্থায় সম্ভব না হলেও বেলারুশ ও সেন্ট্রাল এশিয়ার দেশগুলোর মত দালাল শাসক বসিয়ে পুতিন তার গ্রীপ শক্ত করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
স্বভাবতই রুশ স্বৈরশাসকের এই স্বেচ্ছাচারিতা প্রতিবেশী দেশগুলোকে তাদের অস্বিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্যে ঠেলে দিচ্ছে পশ্চিমাদের দিকে। পারমানবিক শক্তিধর রুশদের জন্যে এহেন বাস্তবতা অনেকটাই গালে চড় মারার শামিল। নিজের আমৃত্যু ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা ছাড়া পুতিনের কোন বিকল্প নেই। আজকের ইউক্রেইন ক্রাইসিস সে খেলারই নতুন চ্যাপ্টার।