আপনি যদি ২৮শে অক্টোবর শেখ হাসিনা চক্রের পতনের জন্যে অপেক্ষা করে থাকেন নিশ্চয় হতাশ হয়েছেন। সব হিসাবে এমনটা হওয়ারই কথা। তবে আপনি হলেও আমি কিন্তু হইনি। পৃথিবীর দেশে দেশে ফ্যাসিবাদী স্বৈরশাসকরা যে পথে নিজেদের অপশাসন দীর্ঘায়িত করার কৌশল অবলম্বন করে থাকে, শেখ হাসিনা এখন তাই করছেন। স্বৈরশাসনের পরিভাষায় একে বলে মরণ কামড়।
তথ্যগুলো যদি সত্য হয় তা হলে আমাদের ধরে নিতে হবে; এ মুহূর্তে এই মহিলার পুত্র সন্তান আমেরিকায় একজন persona non grata...অর্থাৎ অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যক্তি। এতিদন ধরে জমানো অবৈধ সম্পদের ভাণ্ডারে নাকি হাত দিয়েছে দেশটার ইন্টারনাল রেভিনিউ সার্ভিস (IRS)। এই সার্ভিস অনেকটা তেনার মায়ের মত; বাঘে ধরে বাঘে ছাড়ে কিন্তু IRS ধরলে ছাড়েনা। চাকরি-বাকরি, দৃশ্যমান কোন ব্যবসা ছাড়া বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের মালিক হওয়া আমেরিকায় কোন অপরাধ না যতক্ষণ না আপনি আয়-রোজগারের উৎস নিয়ে প্রশ্নের জন্ম না দেন। জন্ম দিলেই হাত বাড়াবে IRS। বলাই বাহুল্য এদের হাত ইখতিয়ার উদ্দিন বিন মোহম্মদ বখতিয়ার খিলিজির মতই লম্বা। বেশ কিছুটা সময় ধরেই পুত্র সন্তান নামের এই বাচাল আমেরিকার বিরুদ্ধে চটান চটান কথা বলে আসছিলেন। হুমকি ধমকিও দিয়ে আসছিলেন।
ধৈর্যের বাধ কেবল বাংলাদেশেরই না, আমেরিকারও ভেঙ্গে যায় মাঝে মধ্যে। বিশেষকরে পিটার হাশের মত যদি সোর্স থাকে।
তেনার কন্যা সন্তানের স্বামী নাকি লুটপাটের বাক্স-পেটোরা নিয়ে নিয়ে ধরা খেয়েছেন মধ্যপ্রাচ্যের দুবাই'এ। এবং সসন্মানে জেলও খাটছেন ওখানে। কন্যা সন্তানকে হাজতবাসী স্বামীর ভাত না খাওয়ানোর বিকল্প হিসাবে ভাত খাওয়ানোর ব্যবস্থা করতে চাইছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার ব্যুরো চীফ বানানোর মধ্য দিয়ে। কিন্তু সেখানেও বাধা দিচ্ছে অনেকে।
দুইয়ে দুইয়ে চার মেলালে আমাদের বুঝতে কষ্ট হয়না বাংলাদেশী এই স্বৈরশাসকের বর্তমান মানসিক অবস্থা। ছেলের পেছনে লেগেছে মার্কিন ফেউ, মেয়ে এখন আওয়ারা। পাশাপাশি পিটার হাসের নেতৃত্বে একদল সাদা বিচ্ছু অহরহ চোখ রাঙ্গাচ্ছে। এই অবস্থায় প্রতিপক্ষের সাথে রাজনৈতিক সংলাপ এক কথায় তেনার জন্যে দিনে-দুপরে আত্মহত্যার শামিল। তাই তিনি মরণ কামড় হিসাবে বেছে নিয়েছেন দমন নিপীড়ন।
একদলীয় স্বৈরশাসনের অতীত ও বর্তমান ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে এ ধরনের নির্মমতা নতুন কোণ সংযোজন না। এ পথেই স্বৈরশাসকের দল নিজের অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করে থাকেন। এবং এখানে সফলতার হারও মন্দ না। কিন্তু দিন শেষে সব শক্তির সমীকরণ মিলিয়ে এসব ফ্যাসিষ্ট শাসকদের পিছু হটতে হয়।
শেখ হাসিনা হয়ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আমেরিকা-ইউরোপকে বিএনপি-জামাত ঠেঙ্গানোর মতই ঠেঙ্গাবেন। এবং সবাইকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নির্বাচনের আয়োজন করে বীরের মত নিজকে বিজয়ী ঘোষণা করবেন।
এ মিশনে হয়ত সাময়িক সফলতা আসবে, কিন্তু লং-টার্মে পিটার হাসদেরই জয় হবে। তাই হয়ে আসছে পৃথিবীর দেশে দেশে। তাই শেখ হাসিনার নতুন নতুন তাফালিং শুনে পাঠকদের বিভ্রান্ত ও হতাশ না হওয়ার জন্যে অনুরোধ করবো।