গোপনেই ভারতকে দিয়ে দেয়া হবে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা
ড. রেজোয়ান সিদ্দিকীঃ
ভারতীয় লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে আকহ্মিকভাবে জরুরি বার্তা নিয়ে বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন শিবশঙ্কর মেনন। ভারতের জন্য ব্যাপারটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল বলেই মেননের এই ঝটিকা সফর। প্রাথমিকভাবে ভারতীয় পত্রপত্রিকার খবর বেরিয়েছিল যে, শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত নিরাপত্তার গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা তথ্য নিয়ে এসেছিলেন শিবশঙ্কর মেনন।তাতে বলা হয়েছিল, বাংলাদেশের জঙ্গিরা শেখ হাসিনাকে প্রাণনাশের ষড়যমকরছে।তারা নানাভাবে সংগঠিত হচ্ছে।আর শুধু প্রধানমমী শেখ হাসিনাই নন, জঙ্গিদের টার্গেটে আছে শেখ হাসিনা মমিসভার আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি।
শিবশঙ্কর মেনন ঢাকায় এসে প্রথমেই শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং প্রায় দু'ঘণ্টার একাশ্চ আলোচনা করেন। তারপর তিনি আলোচনা করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমমী ডা. দীপুমনির সঙ্গে এবং সর্বশেষ আলোচনা করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল মঈন উ আহমেদের সঙ্গে। প্রধানমমী ও পররাষ্ট্রমমীর সঙ্গে তার আলোচনার একটা মাজেজা না হয় বোঝা গেল, কিশ্চু বোঝা গেল ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিবের কী কথা ছিল বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধানের সঙ্গে। বিষয়টি দু'ভাবে ব্যাখ্যাও হয়েছে। প্রথমত বাংলাদেশের প্রধানমমীর নিরাপত্তা এতটাই বিপন্ন যে সেনাবাহিনীকে তার জন্য সার্বক্ষণিক সতর্ক নজর রাখতে হবে। খোদ সেনাবাহিনী প্রধানকেও সে বিষয়ে জানানো ভারত কর্তব্য বলে বিবেচনা করেছে। যদিও ভারতের সাম্প্রতিক মুম্বাই হামলার ব্যাপারে ভারতীয় গোয়েন্দারা কোনো খবরই রাখেনি। বরং তারা এমন সব কথা বলেছে, যা সকল মহলে হাস্যকর বলে বিবেচিত হয়েছে।এছাড়া ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্যে হ্নাধীনতা আন্দোলনের পাশাপাশি আরো ১৩ রাজ্যে মাওবাদীদের যে ব্যাপক উত্থান ঘটেছে, সে বিষয়েও ভারতীয় গোয়েন্দা সংন্সা অতি সামান্যই সাফল্য অর্জন করতে পেরেছে।মাওবাদীরা ওসব রাজ্যে ব্যাপক গণসমর্থন অর্জন করেছে এবং তাদের গেরিলা হামলায় প্রায় প্রতিদিন ভারতীয় আইন-শৃঙ্কলা রক্ষাকারী ৫/১০ জন সদস্য প্রাণ দিচ্ছে।
যাই হোক, বাংলাদেশের সরকারের নিরাপত্তা জোরদার করার ব্যাপারে ভারতের এত উদ্বেগ অতিভক্তির উদাহরণ হয়েও থাকতে পারে।তবে ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব শিবশঙ্কর মেননের ঢাকা সফরের পর বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমমী ও প্রতিমমী অবশ্য বলেছিলেন যে, শিবশঙ্করের সঙ্গে প্রধানমমীর নিরাপত্তা বিষয়ে কোনো আলোচনাই হয়নি। তাহলে তাদের মধ্যে কী আলোচনা হয়েছে, সেটাও কোনো পক্ষই খোলাসা করে বলেননি। তবে ভারতীয় হাই কমিশনার বলেছেন দুই বন্ধু দেশের মধ্যে একটি ধারাবাহিক আলোচনারই অংশ। এর বাইরে কিছুই নয়।
কিশ্চু এর বাইরেও যে কিছু আছে, সেটা ক্রমেই স্পষ্ট হয়ে উঠছে। কারণ ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের এই সফরের কোনো পূর্বঘোষণা ছিল না।এ ধরনের পূর্ব ঘোষণা ছাড়া ন্যাটো দেশগুলোকে সফরে যায় মার্কিন কর্মকর্তারা।আর ভুটান ছাড়া অন্য কোনো দেশে ভারতীয় কর্মকর্তাদের এ ধরনের সফর কল্পনাও করা যায় না।এক সময় হয়ত নেপালে এ ধরনের ঝটিকা সফর সম্ভব ছিল ধারণা করি, এখন সেটাও সম্ভব হবে না। যেভাবেই হোক, দৃশ্যত এক বিপুল জনসমর্থন নিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান মহাজোটের সরকার ক্ষমতাসীন হয়েছে। জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে ২৬৩টিতেই আওয়ামী লীগ বিজয়ী হয়েছে। এই বিপুল সমর্থন দিয়েছে যে জনগণ, সেই জনগণকেই এখন সরকার ভয় পেতে শুরু করেছে এবং জনগণের কাছ থেকে সব কিছু আড়াল করার চেষ্টা করছে।
আওয়ামী লীগ তাদের দিন বদলের সনদের নামে জনগণকে এমন সব অবাস্তব ও আজগুবি প্রতিশ্রক্ততি দিয়েছে, যার বাস্তবায়ন প্রায় অসম্ভব। নির্বাচনী ঘোষণায় তারা বলেছিল, তারা নির্বাচিত হলে ১০ টাকা কেজি দরে চাল খাওয়াবে। প্রত্যেক পরিবারের একজন সদস্যকে চাকরি দেবে, বিদ্যুৎ সমস্যা দূর করে ফেলবে, পানির সমস্যা থাকবে না, দলীয় করণ রদ করা হবে, মেধার ভিত্তিতে চলবে আমলাতম, শিক্ষাঙ্গন সমাসমুক্ত করা হবে। আইন-শৃঙ্কলা পরিন্সিতির উন্নতি ঘটানো হবে। এসব প্রতিশ্রক্ততিতে জনগণ এক সোনালি ভবিষ্যতের হ্নপ্নে বিভোর হয়ে উঠেছিল। তখন আওয়ামী লীগের কণ্ঠহ্নর নরম ছিল, মুখে আল্লাহ-রসুলের নাম ছিল। কথাবার্তা মার্জিত ছিল। সাধারণ মানুষের ধারণা হয়েছিল যে, আওয়ামী লীগ বোধ করি ভাল হয়ে গেছে।
কিশ্চু ক্ষমতায় বসেই আসল চোহারায় আত্মপ্রকাশ করল আওয়ামী লীগ। প্রথমেই তারা বলে বসলেন যে, দশ টাকা কেজি দরে চাল খাওয়ানোর প্রতিশ্রক্ততি আওয়ামী লীগ কখনও দেয়নি। যারা আওয়ামী লীগ সম্পর্কে এমন কথা বলছে, তারা তার প্রসঙ্গ তুলে ধরুক। পত্রপত্রিকাগুলো ন্সান-কাল উল্লেখ করে দেখিয়ে দিল যে, আওয়ামী লীগের প্রধান নেতা বর্তমানে প্রেসিডে? জিল্লুর রহমান তার নির্বাচনী প্রতিশ্রক্ততিতে এসব কথা বলেছেন। পরে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাও একই প্রতিশ্রক্ততি দেন। তখন ঢোক গিলে চুপ করে গেল আওয়ামী লীগ নেতারা। এরপর এল প্রতি পরিবারের একজনকে চাকরি দেয়ার প্রতিশ্রক্ততির কথা। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয়লাভের পর শহরে-বন্দরে-গ্রামে-গঞ্জে সার্টিফিকেট, ক্যারেক্টার সার্টিফিকেট, নাগরিকত্বের সনদপত্র, মার্কসীট এসব তোলার ধূম পড়ে গেল। সবাই তৈরি। কখন চাকরির ডাক আসবে। কিশ্চু দিন যায়, সপ্তাহ যায়, মাস যায়, চাকরির ডাকতো আর আসে না। আর শেষ পর্যশ্চ সরকারের তরফ থেকে ঘোষণা করা হলো, আপাতত প্রতি পরিবার থেকে একজনকে চাকরি দেয়ার যে ঘোষণা দেয়া হয়েছিল, তা ন্সগিত করা হলো। পরবর্তীতে এ বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।
আওয়ামী লীগের 'আন্দোলনের ফসল' তত্ত্বাবধায়ক সরকার এমনিতেই চাকরির বাজারের বারোটা বাজিয়ে দিয়ে গিয়েছে। তারা হকার উচ্ছেদ, হাটবাজার উচ্ছেদ, দোকানপাট উচ্ছেদ করে কোটি মানুষকে বেকার করেছে। তার ওপর প্রতি বছর শ্রমবাজারে চাকরির আশায় ঢুকেছে ২০ লাখ করে শ্রমিক, যারাও বেকার। বিদেশ থেকে কর্মচ্যুত হয়ে ইতোমধ্যেই ফেরত এসেছে লক্ষাধিক শ্রমিক। ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের তাড়া করায় নতুন কর্মসংন্সান সৃষ্টি হয়নি। ফলে দেশের ভেতরে এক ত্রাহি মধুসূদন অবন্সা তখন প্রতি পরিবারের একজনকে চাকরি দেয়ার প্রতিশ্রক্ততি বিশাল আশার আলো জাগিয়ে তুলেছিল। সে বেলুন ফুটো হয়ে গেছে।
বলা হয়েছিল, প্রশাসন দলীয়করণ করা হবে না। মেধা যোগ্যতার ভিত্তিতে পদোন্নতি, পদায়ন হবে। কিশ্চু প্রশাসন দলীয়করণের যে নির্লজ্জ নিকৃষ্ট উদাহরণ আওয়ামী লীগ ন্সাপন করেছে, তা একেবারেই নজিরবিহীন। এই দলীয়করণের ধাক্কায় গত চার মাসে কোনো কোনো কর্মকর্তা আবারও বদলী হয়েছেন। ওএসডি (অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি) হয়েছেন প্রায় তিনশ কর্মকর্তা। চাকরির মেয়াদ শেষ হবার আর চার-পাঁচ মাস বাকি থাকতে প্রায় ডজন খানেক সিনিয়র সচিবকেও ওএসডি করা হয়েছে। এই দলীয়করণের ধাক্কা গিয়ে লেগেছে পাবলিক সার্ভিস কমিশনেও (পিএসসি)। সেখানে নিয়োগ দেয়া হয়েছে আওয়ামী যুবলীগের আশ্চর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদককে।
এরপর আসে বিদ্যুতের সমস্যার কথা। বিদ্যুতের সমস্যা তাৎক্ষণিক ও দৈনন্দিন। বিদ্যুৎ না থাকলে জনজীবন অচল। কলকারখানা বন্ধ। গৃহন্সালির কাজ বন্ধ। পরীক্ষার্থীদের লেখাপড়া বন্ধের উপক্রম। কারখানা বন্ধ হওয়ায় বেকারত্ব বাড়ছে। বিদ্যুৎ নেই বলে পানিও নেই। পানির জন্য চতুর্দিকে হাহাকার। বিদ্যুতের দাবিতে মানুষ মানববন্ধন করছে, শূন্য হাঁড়ি নিয়ে মিছিল করছে, কোথাও কোথাও বিদ্যুতের সাবস্টেশন ঘেরাও করছে। এখন সরকারের মমিরা একেবারে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। তারা বলছেন যে, আলাদীনের চেরাগ হাতে নিয়ে ক্ষমতায় আসেননি যে, রাতারাতি সকল সমস্যার সমধান করে দেবেন। প্রধানমমী থেকে শুরু করে আওয়ামী নেতারা এক রা-ই করছেন।
আর বিদ্যুতের সঙ্কট নিয়ে সবাই সাবেক জোট সরকারকে দায়ী করছেন। প্রধানমমী ও তার মমীরা বলছেন জোট সরকারের আমলে সে সরকারের লোকেরা শুধু বিদ্যুৎ খাত থেকেই চুরি করে নিয়ে গেছেন ২০ হাজার কোটি টাকা। কিশ্চু শুমার করে দেখা গেল, ঐ খাতে জোট সরকারের পাঁচ বছরে বরাদ্দই ছিল ১৩ হাজার কোটি টাকারও কম। প্রধানমমী বলেছেন, জোট সরকারের আমলে জাতি কতকগুলো খাম্বা পেয়েছে মাত্র। তারা এক মেগাওয়াটও বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারেনি। প্রধানমমীর এ বক্তব্যও নির্জলা অসত্য। প্রকৃত সত্য হলো, জোট সরকারের পাঁচ বছরে তাদের আমলে শুরু করে তাদের আমলেই সম্পন্ন করা বিদ্যুৎ প্ল্যা?গুলো থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছিল নতুন করে ৬৫৫ মেগাওয়াট। তাছাড়া আওয়ামী লীগ আমলে শুরু হয়েছিল, জোটের আমলে শেষ হয়েছে, এমন প্ল্যা??ও বিদ্যুৎ উৎপন্ন হয়েছে প্রায় ৬০০ মেগাওয়াট। তাহলে অবিরাম এসব অসত্য ভাষণ চালিয়ে যাওয়ার হেতু কী? হেতু কিছু না, নিজেদের সব ব্যর্থতা নন্দ ঘোষের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়ার এটা একটি অপকৌশল মাত্র।
কিশ্চু বিদ্যুৎ চাই। তার জন্য সাধারণ মানুষ আন্দোলন শুরু করেছে। জবাবে হ্নরাষ্ট্র প্রতিমমী একেবারে হুঙ্কার ছেড়ে বলেছেন, পানি-বিদ্যুৎ-গ্যাস নিয়ে কেউ কোনো আন্দোলন করতে চাইলে সরকার কঠোর হাতে তা দমন করবে। সাবাস, হ্নরাষ্ট্র প্রতিমমী। জনগণের ন্যায্য আন্দোলন শক্তি দিয়ে দমন করবেন। জোট সরকারের আমলে রাজশাহীর কানসাটে বিদ্যুতের আন্দোলন দমাতে এমনি শক্তি প্রয়োগের ঘটনা ঘটানো হয়েছিল। তখন আন্দোলনকারীদের পক্ষ নিয়ে সে আন্দোলন আরও বেগবান করে তোলার মদত দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। আজ আবার কঠোর হস্তে দমন করতে চাইছেন কেন? অর্থাৎ সরকার ইতোমধ্যেই জনগণের প্রতিপক্ষে তার অবন্সান স্পষ্ট করে তুলেছে। কিশ্চু জনগণের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড়াবার সরকারের এই শক্তির উৎস কোথায়? সেটা কি ভারত? নিশ্চয়ই ভারত। পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহ একযোগে অর্ধ শতাধিক সেনাকর্মকর্তা হত্যাযজ্ঞের পর শেখ হাসিনা সরকারের নিরাপত্তার জন্য, ভারত তার বিমান ও পদাতিক বাহিনী মোতায়েন রেখেছিল। আবার ঐ সময় ভারতের পররাষ্ট্রমমী প্রণব মুখার্জী বলেছিলেন যে, শেখ হাসিনা সরকারকে কেউ বিপদে ফেলার চেষ্টা করলে ভারত চুপ করে বসে থাকবে না, প্রয়োজনে সরাসরি হস্তক্ষেপ করবে। এ থেকে সরকার নিশ্চিত হয়েছে যে, বাংলাদেশের ১৫ কোটি মানুষও যদি তার সরকারের বিরুহ্নে যায় তাহলেও ভারত তাদের তখতে তাউস টিকিয়ে রাখবে। তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে রাখবে।
এই প্রেক্ষাপটেই ভারতের পররাষ্ট্র সচিব শিবশঙ্করের আকহ্মিক বাংলাদেশ সফর বিবেচনা করতে হবে। পত্রিকাশ্চরে প্রকাশিত রিপোর্টে দেখা যায়, বাংলাদেশ সরকারকে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে অবহিত করতে এসেছিলেন শিবশঙ্কর সেন। বিষয়গুলি হচ্ছে, তালপট্টি ভারতের দখলে রাখার ব্যাপারে বাংলাদেশ যেন কোনো আপত্তি না তোলে। বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমাকে ভারত নিজের বলে দাবি করে সেখানে সে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান চালাচ্ছে, বাংলাদেশ যেন তাতে সহযোগিতা করে। তাছাড়া পিলখানা ঘটনার তদশ্চের ব্যাপারে করণীয় সম্পর্কেও দিক নির্দেশনা দিয়ে গেছেন শিবশঙ্কর মেনন। কিশ্চু শেখ হাসিনার সরকার এর কোনো কিছুই জনসমক্ষে প্রকাশ করেননি।
যেকোনো বিবেচনায় দক্ষিণ তালপট্টি দ্বীপটি বাংলাদেশের সমুদ্রসীমার ভেতরে। ১৯৮০ সাল থেকে বাংলাদেশ এই দাবি উত্থাপন করে আসছে কিশ্চু সরকার যদি এখন ?ভারত তাদের ত্রাতা' এটা বিবেচনায় নিয়ে ঐ দাবি ছেড়ে দেয়, তাহলে মিয়ানমারও একই যুক্তিতে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় তাদের মত করে ঢুকে যাবে। ফলে বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের যাতায়াত পথই রুহ্ন হয়ে পড়বে।
এদিকে ভারত ও মিয়ানমার প্রায় একই সময়ে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় তেল-গ্যাস অনুসন্ধান শুরু করে। বাংলাদেশের আপত্তির প্রেক্ষাপটে মিয়ানমার সরে গেলেও ভারত এখনও সে কাজ অব্যাহত রেখেছে। সঙ্গে এ দেশের শেখ হাসিনা সরকার এর কোনো প্রতিবাদ পর্যশ্চ করেনি। আশ্চর্জাতিক সমুদ্র আইন অনুযায়ী চলতি বছরের ২৯ জুনের মধ্যে তালপট্টিসহ অন্যান্য ব্যাপারে জাতিসংঘের কাছে ভারতের দাবি তুলে ধরতে হবে। মিয়ানমারের এ দাবি উত্থাপন করতে হবে ২১ মের মধ্যে। আর বাংলাদেশকে এ দাবি তুলে ধরতে হবে ২০১১ সালের ২৭ জুলাইয়ের মধ্যে।
ভারত বা মিয়ানমার যে দাবিই তুলুক না কেন, বাংলাদেশকে এখন থেকেই জাতিসংঘে এই দাবি নিয়ে লবি করতে হবে যে, দক্ষিণ তালপট্টি বাংলাদেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ। একইভাবে সমুদ্রসীমা নির্ধারণের আশ্চর্জাতিক রীতিনীতি যাতে কিছুতেই লঙ্ঘিত না হয়, সেটাই নিশ্চিত করতে হবে। গোপনে বাংলাদেশের ভূখন্ড ভারতকে দিয়ে দেয়ার কোনো ষড়যমই এদেশের মানুষ মেনে নেবে না।